ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

বিএনপির বিক্ষোভ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বিএনপির বিক্ষোভ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এতিমদের টাকা আত্মসাতের মামলায় খালেদা জিয়ার জেল হওয়ার প্রতিবাদে ঢাকায় পল্টন দলীয় কার্যালয় ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভকালে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ মিছিলকারীদের ধাওয়া দিলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার পবিত্র জুমা’র নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল ও নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় হয়ে বিজয়নগর নাইটিঙ্গেল মোড়ে শেষ হয়। মিছিলকারীরা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন। রাজধানীর আরও কয়েকটি থানায় বিচ্ছিন্নভাবে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে বলে জানা গেছে। মিছিলের নেতৃত্ব দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বায়তুল মোকাররম মসজিদে নামাজ আদায় করে মিছিলে যোগ দেন। ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনকেও দেখা যায় মিছিলের নেতৃত্বে। পরে দৈনিক বাংলার কাছে গিয়ে মিছিল থেকে সরে একটি গাড়িতে ওঠেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। মিছিল চলাকালে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দলের সিনিয়র নেতারা। তারা মিছিলে যোগ দেননি। তবে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে মিছিল যাওয়ার সময় রুহুল কবির রিজভী দলীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকে হাত নেড়ে মিছিলকারীদের স্বাগত জানান। মিছিল থেকেও কেউ কেউ পাল্টা নেড়ে রিজভীকে স্বাগত জানান। বিএনপির পূর্বনির্ধারিত এমন কর্মসূচীকে ঘিরে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে মিছিলটি নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রাস্তা অবরোধ করে জমায়েত হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের কিছুটা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মিছিলকারীরা স্লোগান দিতে দিতে নাইটিঙ্গেল মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। আবার মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ মিছিলকারীদের ওপর মৃদু লাঠিচার্জ করে। এ সময় মিছিলকারীদের অনেকেই বিভিন্ন গলিতে ঢুকে সটকে পড়েন। যদিও কয়েক মিনিট পরেই আবার তারা জড়ো হয়ে খন্ড খন্ড মিছিল করে। এসব খ- খ- মিছিলে দেখা গেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল হাই, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, কাজী আবুল বাশার, আবদুস সালাম, আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, খান রবিউল ইসলাম রবি, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন মাহমুদ টুকু, সিনিয়র সহসভাপতি মোরতাজুল করীম বাদুরুজ্জামান, নুরু ইসলাম নয়ন, গোলাম মাওলা শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ও এসএম জিলানিসহ অনেকেই। মিছিলকারীরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই বলে স্লোগান দেন। কতজনকে আটক করা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার শিবলী নোমান। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় মিছিল বিক্ষোভ করার অধিকার মানুষের রয়েছে। মিছিলকারীরা যে মিছিল করেছে, তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য মিছিলে সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। মিছিলকারীরা গলিতে ঢুকে কোন নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালায় কিনা তা দেখতে পুলিশ গলিগুলোতে গেছে। বিএনপির দফতর থেকে জানানো হয়েছে, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী ও রামপুরাতেও মিছিল করেছেন নেতাকর্মীরা। রাজধানীর সব থানাতেই তাদের মিছিল করার পরিকল্পনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর ও তাঁর বড় ছেলে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে ১০ বছরের সাজা হয়। খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর প্রতিবাদে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সারাদেশে দুই দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। এ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শনিবারও সারাদেশে বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে বিএনপির। ঢাকাসহ সারাদেশেই নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে বলে জানিয়েছেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ও র‌্যাব মহাপরিচালক পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।
×