ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ফিরে দেখা

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ফিরে দেখা

এসডিজি অর্জন বাধাগ্রস্ত করতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রচার তপন বিশ্বাস ॥ ৫ ফেব্রুয়ারি, সোমবার। মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ভাইয়ের রুমে যাই। উদ্দেশ্য, বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানা। আমার সঙ্গে আরও তিন বন্ধুও যান। গিয়ে দেখি গভীর মনোযোগের সঙ্গে পত্রিকায় একটি খবর পড়ছেন তিনি। সেটি হলো প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর। পত্রিকার পাতা থেকে মুখ তুলে সে প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু করলেন আমাদের সঙ্গে। এক পর্যায়ে তিনি বললেন, আমাদের এসডিজি অর্জন বাঁধাগ্রস্ত করতেই কি প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে এত ঢাক পেটানো হচ্ছে? এটি কোন পর্যায়ে চলে গেছে? কোন কোন বিশেষ ব্যক্তিরা বলছেন ক্লাস ‘ওয়ান’, ‘টু’র প্রশ্নপত্রও নাকি ফাঁস হচ্ছে। কিভাবে তা সম্ভব। ওয়ানের বাচ্চারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের কি বোঝে? তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি ওয়ান-টু’র প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা সঠিক নয়। এটি আমাদের এসডিজি অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করতে জোরেশোরে প্রচার হচ্ছে। যাতে বহির্বিশ্বে আমার শিক্ষা-ব্যবস্থার কোন মূল্যায়ন না হয়। সাংবাদিক বলে বাসভাড়া মাফ! রুমেল খান ॥ যারা মিডওয়ে অথবা বাহন পরিবহনে মালিবাগ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নিয়মিত যাতায়াত করেন, একমাত্র তারাই জানেন আমার এই লেখাটির সত্যতা কতটুকু। না, লেখার বিষয়বস্তু বাস নয়, বাসের এক স্পেশাল প্যাসেঞ্জারের। এক প্রবল প্রতাপশালী-ডাকসাইটে-জাঁদরেল-রাশভারী ভিআইপি মহিলা যাত্রী তিনি। মধ্যবয়সী। চেহারায় বয়সের ছাপ পড়লেও সেটা ঢাকতে বেশ সাজুগুজু করেন। সঙ্গে থাকে ভ্যানিটি ব্যাগ, চোখে সানগ্লাস, ঠোঁটে কড়া লিপস্টিক, হাতে এ্যানরয়েড ফোন। স্বভাবে বেশ বাকপটু। মজার ব্যাপারÑ তিনি কখনই লেডিস সিটে বসেন না। বসেন একেবারে পেছনের সিটে এবং গেটের সঙ্গের সিটে। জলদি নামতে যে সুবিধা! যদি ওই সিটে আগেই কেউ বসে থাকেন, তাহলে তাকে এমনভাবে রিকোয়েস্ট করেন যে, ওই যাত্রী বেচারার সিট না বদল করে আর কোন উপায় থাকে না। এখানেই শেষ নয়, বাস চলতে শুরু করলেই আশপাশের যাত্রীদের খাজুরে আলাপের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেন তিনি কত ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তার সঙ্গে খাতির বিভিন্ন এলাকার ওয়ার্ড কমিশনার, নেতা, এমপি, মন্ত্রী, থানার ওসির...! ঠিক ওই মুহূর্তেই বাসের কনডাক্টর এসে যখন বেরসিকের মতো এসে বলে, ‘আফা, ভাড়াডা দেন’Ñ তখনই চরম ভুলটা করে বসে বেচারা। গর্জে ওঠেন ‘আফা’, ‘ওই ব্যাটা চিনস আমি কে? আমি সাংবাদিক। সাংবাদিকের আবার ভাড়া কিসের? তোদের পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আমার পরিচিত। তোর বিরুদ্ধে মালিক সমিতিতে কমপ্লেইন করব। পত্রিকায় নিউজ করে দেব।’ অবস্থা বেগতিক দেখে কনডাক্টর ফিরে যায়। একদিন সাহস করে বললাম, ‘আপনি কোন পত্রিকার সাংবাদিক?’ বিস্ময়ে হতভম্ব মহিলা। বিশ্বাসই করতে পারছেন না আমি এমন প্রশ্ন করার স্পর্ধা পেলাম কোথায়। ‘আপনার অফিসের কার্ডটা দেখান। মনে হচ্ছে আপনি ভুয়া সাংবাদিক। কোন আইনে আছে সাংবাদিক হলে বাসভাড়া মাফ?’ মহিলা ক্ষেপে গিয়ে হুংকার ছাড়লেন, ‘হু আর ইউ? কেন আপনাকে কার্ড দেখাবো?’ চেঁচামেচির এই পর্যায়ে বাসের ড্রাইভার চেঁচিয়ে যা বললেন, তাতে আমার আক্কেলগুড়ুম, ‘এই ভাই, আপনে ক্যান খামোখা মহিলাডারে ডিস্টার্ব করতাছেন? আমি তো ওনার ভাড়া নেব না। আপনার কোন সমস্যা আছে? বেহুদা ঝামেলা কইরেন না তো!’
×