ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

অপকৌশল

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮

অপকৌশল

দাবি আদায়ের উত্তম পথ হলো যথাযথভাবে দাবি উপস্থাপন করা। কর্তৃপক্ষকে দাবির যথাযথতা বোঝাতে হয়। ইদানীং আর সেটা হচ্ছে না। কথায় কথায় অনশন। অমরণ অনশন। সমাজে দায়িত্বশীল যারা তারা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করে। যা আগে তেমন দেখা যায়নি। কেউ তাদের কাছে এমনটা আশা করে না। সামর্থ্য আছে কি নেই। দাবি আদৌ যোক্তিক কিনা। মোটেই ভাবা হয় না। চাদর বিছিয়ে প্রেসক্লবের সামনে বসে পড়া হচ্ছে। প্রথমে অনশন, পরে আমরণ অনশন। রীতিমতো বাধ্য করা দাবি মানতে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বাস দিতে হয়। অন্য কারও আশ্বাসে তারা অনশন ভাঙেন না। কেউ বোঝাতে গেলে তাকে অপমানিত হতে হয়। এমন দুঃখজনক অবস্থা আগে হতো না। বছরের শেষ দিকে সরকারকে হিমশিম খেতে হয়েছে। একের পর এক দল অনশনে বসে পড়েছে। ৯ হাজার টাকার বেতন স্কেল সাড়ে ১২০০০ করতে হবে। অনশনে বসেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এরপরে এমপিও ভুক্তির দাবি নিয়ে বসে স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা। এখন বেতন-ভাতার বৈষম্যে দূর করার দাবিতে অনশনে আছেন এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা শিক্ষকরা। শিক্ষামন্ত্রী অনশনকারীদের আশ্বাস দেন। বোঝাতে চেষ্টা করেন। তারা শিক্ষামন্ত্রীর কথায় কর্ণপাত করেন না মোটেও। পরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে অনশন ভাঙেন। প্রশ্ন হলো, বললেই কি দাবি পূরণ করা সম্ভব? অর্থ আসবে কোথা থেকে? একের পর এক অনশন। দাবি আদায় না যড়যন্ত্র সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এতে পরিস্থিতি অস্তিতিশীল করার যড়যন্ত্র নেই তা কেউ জোর দিয়ে বলতে পারে না। ন্যায্য দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা আদায়ের অন্য মাধ্যম ব্যবহার করা যায়। ব্যক্তি স্বার্থে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দৃষ্টিকটু আচরণ শোভা পায় না। মানসম্মত শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ম্যানেজিং কমিটি, এমপিদের স্কুল-কলেজ কমিটিতে যে রাজত্ব চলছে তার অবসান হওয়া দরকার। সড়কের মধ্যে শিক্ষকরা শুয়ে- বসে থাকেন। তাদের দাবি মানতেই হবে। দাবি আদায়ের জন্য প্রাণ দিতেও তারা রাজি। এটা আর যাই হোক দেশের ইমেজের জন্য ভাল নয়। কোথাও এমন দেখা যায় না। আমরণ অনশন কখনও কখনও দাবি আদায়ের অপকৌশল। এটা অস্বীকার করা উপায় নেই। কোথাও যদি বৈষষ্য থেকে থাকে। তবে তার অবসান করা সরকারেরই দায়িত্ব। আমরণ অনশনের মতো অপকৗশল কারও প্রয়োগ করা উচিত নয়। এটা স্রেফ অশোভনীয়। বানারীপাড়া, বরিশাল থেকে
×