ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাজমুল হাসান

রাস্তায় নয় আলোচনার টেবিলে

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮

রাস্তায় নয় আলোচনার টেবিলে

আজকাল প্রায় শোনা যাচ্ছে অনশনের কথা। আজকে নন-এমপিও শিক্ষকদের দাবি প্রতিষ্ঠানের এমপিও চাই, কিছুদিন আগে ছিলো ইবতেদায়ি শিক্ষকদের অনশন। তাদের দাবি জাতীয়করণ। এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের দাবি জাতীয়করণ চাই, প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি তাদের গ্রেড উন্নীত কর। তাছাড়া বেসরকারী থেকে সরকারী হওয়া কলেজ শিক্ষকদের বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির দাবী নিয়েও হচ্ছে প্রতিবাদ। অবস্থা এমন যেন অনশন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। হয় দাবি আদায় করবো, না হয় তিলেতিলে মৃত্যুবরণ করবো! সরকারের মেয়াদের শেষের দিকে স্বাভাবিক ভাবেই ভোটের রাজনীতির কথা ভেবে সরকার যতটুকু সহনশীল, নমনীয় হওয়া যায় তার চেষ্টাই করে থাকে। কিন্তু তাই বলে যৌক্তিক বা অযৌক্তিক যাই হোক না কেন, কথায় কথায় আন্দোলনে নেমে যেতে হবে? তাও অমরণ অনশন? ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৬ সালে নির্বাচনের আগে শিক্ষকদের আন্দোলন করে দাবি আদায়ের নজির আছে। এইবারও নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে কোনো আলোচনা না করে, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করে একদম সরকারের গলার টুটি চেপে ধরা নিশ্চয়ই সভ্য আচরণ নয়? তবে এসব অনশনের দায়ভার কিছুটা কর্তৃপক্ষেরও বটে। নামসর্বস্ব অযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পাওয়ার কারণে আজ যেখানে সেখানে গজিয়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা। বাড়ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। পরবর্তীকালে সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে দাবি উঠছে সরকারী বেতন দেয়ার, এমপিও চাইছে তারা। যথাযথ তদারকি থাকলে শিক্ষাঙ্গনে এমন আজব দাবী উঠতো না। একথা সত্য যে শিক্ষকরা সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখেন। গ্রামের ছেলে-মেয়েদেরকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করছেন তারা। তাদের দ্বারাই এদেশ থেকে নিরক্ষর শব্দটি মুছে যাচ্ছে। অথচ সেই শিক্ষকদেরই আর্থিক অভাব লেগে আছে। তবে রাস্তায় না নেমেও সমস্যার সমাধান করা যায়। সরকারের সাথে শান্তিপূর্ণ আলোচনা করে নিজেদের দাবি তুলে ধরা যায়। তা না করে সরকারের গলা চেপে ধরে, দাবি পূরণ কর না হয় মরে যাবো হুমকি দেয়া নিশ্চয় সমাধান নয়। সমস্যা থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। তাই রাস্তায় না বসে আলোচনায় বসুন। একসাথে বসে কর্তৃপক্ষকে সমস্যাগুলোর গুরুত্ব ও যৌক্তিকতা বোঝান। সমাধান করার তাগিদ দিন। তবেই দেশ এগিয়ে যাবে, জাতি এগিয়ে যাবে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×