নড়াইলের আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলায় ৯ জনের ফাঁসির আদেশ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ নড়াইল জেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রভাষ রায় ওরফে হানু হত্যা মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৯ আসামিকে ফাঁতে ঝুঁয়ে মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আদালত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে। রবিবার দুপুরে খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ রব হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে মৃত্যু দ-াদেশপ্রাপ্ত ৯ আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নড়াইল জেলা সদরের মীরাপাড়া এলাকার মৃত মজিদ মিনার ছেলে মোঃ সাহিদুর রহমান মিনা ওরফে শহিদ ও মোঃ ইলিয়াছ মিনা, সাহিদুর রহমান মিনার ছেলে মোঃ আশিকুর মিনা ওরফে আশিক, মোশারফ মিনার ছেলে মোঃ রাসেল মিনা, মৃত হাতেম মোল্লার ছেলে বাশার মোল্লা, মোশারফ মোল্লার ছেলে রবিউল মোল্লা, আটেরহাট এলাকার মৃত হারান মোল্লার ছেলে এনায়েত মোল্লা , পলইডাঙ্গা এলাকার মতিয়ার মোল্লার ছেলে ইয়াসিন মোল্লা ও মুসা মিনার ছেলে মামুন মিনা। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের পিপি এনামুল হক নথীর বরাত দিয়ে জানান, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রভাষ রায় নৌকার পক্ষে কাজ করেন। অপরদিকে আসামি মোঃ সাহিদুর রহমান মিনা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভদ্রবিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর চেয়ারম্যানের সমর্থকরা প্রভাষ রায়ের বাড়ি ভাংচুর করে। এ ঘটনায় প্রভাষ রায় চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনার জেরে ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আসামিরা মীরাপাড়া বাজারে ফারুকের চায়ের দোকানের সামনে প্রভাষ রায়ের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা একটি বড় ছোরা প্রভাষ রায়ের পেটে ঢুকিয়ে দেয় এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে বাজারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নড়াইল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রভাষ রায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী টুটুল রানী রায় বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ৫-৭ জনকে আসামি করে ৩ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ভবতোষ রায় ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। এদিকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্র পক্ষের কৌঁসলি এ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, বাদী ন্যায় বিচার পেয়েছে। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বাদী টুটুল রানী আদালতের দেয়া রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান। আসামি পক্ষের আইনজীবী মোঃ মামুন জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।