ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শান্ত-মারিয়াম ভার্সিটির প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

শান্ত-মারিয়াম ভার্সিটির প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর জনকণ্ঠ পত্রিকায় ‘জাল সনদ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে বেসরকারী শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি। প্রতিবেদন প্রকাশের ২৮ দিন পর প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রার স্থপতি হোসনে আরা রহমানের স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, প্রকাশিত সংবাদটি সর্বৈব্য অসত্য, ভিত্তিহীন। প্রকাশিত প্রতিবেদনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের দেয়া বিভিন্ন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, ‘সনদ খুঁজতে গেলেই দেখা যাচ্ছে, যখন এসব প্রতিষ্ঠানের কোন অনুমোদন ছিল না সেই তারিখের সনদ’ ‘কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটিসহ সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নামে ভূয়া সনদ দেখিয়ে মাউশির অসৎ কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে এমপিওভুক্ত হচ্ছেন শত শত শিক্ষক।’ বলে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তা অসত্য ও ভিত্তিহীন। এ ছাড়া প্রতিবেদনের আরেকটি অংশের প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে. ‘রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত একটি বেসরকারী ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএড সনদ নিয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছেন আবুল কালাম আজাদ ও আব্দুল হাই। তাদের সনদ একই দিনে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইস্যু হলেও দুজনের সনদে ভিসির স্বাক্ষর ভিন্ন’ এমন কথা বলে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তাও মিথ্যা। প্রতিবেদকের বক্তব্য: কিছু অসাধু শিক্ষকের জাল সনদ নিয়ে এমপিওসহ অন্যান্য সরকারী সুযোগ সুবিধা নেয়ার ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকেই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি), কারিগরি অধিদফতর, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের দেয়া লিখিত চিঠির ভিত্তিতে ডিআইএ’র দেয়া প্রবিবেদনই কেবল তুলে ধরা হয়েছে ১১ ডিসেম্বরের প্রতিবেদনে। যেখানে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বিএড ও এমএডের সরকারী অনুমোদনের তারিখ স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। সরকারী ও বেসরকারী এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে ডিআইএ তাদের সনদের বিষয়ে তথ্য চাইলে তারা লিখিতভাবেই জানিয়েছে এসব সনদে যে তারিখ ও কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর আছে তার কোনটিই তাদের নয়। এ অবস্থায় ডিআইএ’র প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে মূলত এসব প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে নিজেরা ভুয়া সনদ বানিয়ে শত শত শিক্ষক এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করছেন। এই ঘটনায় দায়ী ওই শিক্ষকরাই। সরকারী বা অন্য প্রতিষ্ঠা নয়। ইতোমধ্যেই এসব তথ্য তুলে ধরার জন্য ডিআইএ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকে অভিনন্দনও জানিয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে আসা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই। যারা জাল সনদের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও অডিট ও আইন শাখা এবং ডিআইএ’র কাছে আবেদনও জানিয়েছে। তবে কেবল শান্ত-মাররিয়াম কর্তৃপক্ষই প্রতিবেদনের বিষয়ে আপত্তি তুললো। এমনকী প্রতিবাদ লিপিতে যেসব তথ্য নিয়ে আপত্তি তুলে ধরা হয়েছে তারও প্রতিটি লাইন জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, ‘সনদ খুঁজতে গেলেই দেখা যাচ্ছে, যখন এসব প্রতিষ্ঠানের কোন অনুমোদন ছিল না সেই তারিখের সনদ’ ‘কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটিসহ সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া সনদ দেখিয়ে মাউশির অসৎ কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে এমপিওভুক্ত হচ্ছেন শত শত শিক্ষক।’ এসব তথ্যকে মিথ্যা বলে জাল সনদধারীর শিক্ষকদের দায় কেন উল্টো ওই প্রতিষ্ঠানটি নিজের ঘাড়ে নিচ্ছে তা প্রতিবেদকের বোধ্যগম্য নয়!
×