ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

Taslima Afroz;###;Arambagh High School & College, ;###;Arambagh, Motijheel, Dhaka -1000.;###;[email protected]

বিষয় ॥ জীববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

বিষয় ॥ জীববিজ্ঞান

পঞ্চম অধ্যায়: খাদ্য, পুষ্টি এবং পরিপাক সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। ইতোপূর্বে তোমরা উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টি, উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টির প্রকারভেদ, পুষ্টি উপাদানের উৎস ও উদ্ভিদের পুষ্টিতে বিভিন্ন খনিজ উপাদানের ভূমিকা, উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদানের গুরুত্ব ও পুষ্টি উপাদানের অভাবজনিত লক্ষণ, প্রাণির খাদ্য ও পুষ্টি ও খাদ্যের প্রধান উপাদান ও উৎস (আমিষ, শর্করা, স্নেহজাতীয় খাদ্য, ভিটামিন, খনিজ লবণ, পানি ও খাদ্য আঁশ) সম্পর্কে জেনেছো। আজকের আলোচনা: আদর্শ খাদ্য পিরামিড ও খাদ্য গ্রহণের নীতিমালা আদর্শ খাদ্য পিরামিড: যেকোনো একটি সুষম খাদ্য তলিকায় শর্করা, শাকসবজি, ফলমূল আমিষ ও স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাদ্য অন্তর্ভূক্ত থাকে। একজন কিশোর বা কিশোরী প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরূষ বা মহিলার সুষম খাদ্য তালিকা লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে তালিকায় শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, শর্করাকে নিচু স্তরে রেখে পর্যায়ক্রমে পরিমাণগত দিক বিবেচনা করে শাকসবজি, ফলমূল, আমিষ, স্নেহ ও চর্বিজাতীয় খাদ্যকে সাজালে যে কাল্পনিক পিরামিড তৈরি হয় তাকে আাদর্শ খাদ্য পিরামিড বলে। আমাদের দৈনিন্দিন প্রয়োজনীয় খাবার তালিকায় যেসব খাবার থাকে তা চিত্র ৫.৪ এ পিরামিডের আকারে দেখানো হলো। চিত্রে এই পিরামিডের শীর্ষে রয়েছে স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাদ্য আর সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে শর্করা। খেয়াল করে দেখ: * পিরামিডের অংশগুলো তার আকার অনুযায়ী নিচের দিকে বড় উপরের দিকে ছোট। সবচেয়ে চওড়া অংশে ভাত, আলু, রুটি এসব। এগুলো বেশি করে খেতে হবে। * তার পরের অংশে আছে শাকসবজি ও ফলমূল। এসব ভাত, রুটির চেয়ে কম খেতে হবে। * শাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, পনির ছানা, দই আরও কম পরিমাণে খেতে হবে। * তেল, চর্বি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার সবচেয়ে কম খাওয়া উচিত। আমাদের প্রতিদিনের খাবার খাদ্য পিরামিড অনুযায়ী বেছে নিতে হবে, তবেই আমরা সহজে সুষম খাদ্য নির্বাচন করতে পারব। খেতে ভালো লাগলে অনেক সময় আমরা অনেক বেশি খাদ্য খেয়ে নেই। সুস্বাস্থ্যের জন্য এ অভ্যাস কল্যাণকর নয়। তাই আমাদের পরিমিত পরিমাণ আহার করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সেসঙ্গে খাদ্য গ্রহণের নিয়মনীতি ও সময় মেনে চলতে হবে। খাদ্য গ্রহণের নীতিমালা (Healthy Eating): খাদ্য উপাদান বাছাইকরণ, সুষম খাদ্য নির্বাচন ও সুষম আহার করা উন্নত জীবনযাপনের একটি পূর্বশর্ত। খাদ্যগ্রহণ নীতিমালা বা নিয়মনীতি প্রত্যেকের জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ নীতিমালা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকলে খাদ্য নির্বাচন, খাদ্যের পুষ্টিমান ক্যালরি, পারিবারিক আয় ইত্যাদি সম্পর্কে নজর রেখে পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যের খাদ্য চাহিদা মেটানো সহজতর হয়। এসব কার্যক্রম খাদ্যগ্রহণ নীতিমালার অন্তর্গত। সুষম খাদ্যের বৈশিষ্ট্য- ১. একজন মানুষের বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদনের সামর্থ্য থাকতে হবে। ২. শর্করা, আমিষ ও চর্বি নিদিষ্ট অনুপাতে পরিমাণমতো গ্রহণ করতে হবে। ৩. খাদ্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও রাফেজ বা সেলুলোজ সরবরাহের জন্য সুষম খাদ্য তলিকায় ফল ও টাটকা শাকসবজি থাকতে হবে। ৪. খাদ্যে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি ও খনিজ লবণ থাকতে হবে। ৫. সুষম খাদ্য অবশ্যই সহজপাচ্য হতে হবে। সুস্থ সবল ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য সুষম খাদ্যের কোনো বিকল্প নেই। দেহের পরিপুষ্টির জন্য ছয় উপাদানবিশিষ্ট খাদ্য অন্তর্র্ভূক্ত করে সুষম খাদ্যের তলিকা বা মেনু পরিকল্পনা করা একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয়। দেহের চাহিদা, খাদ্যের সহজলভ্যতা ও পারিবারিক আয় এ তিনটি বিষয় বিবেচনা করে খাদ্য উপাদান বাছাই বা মেনু পরিকল্পনা করলে তা বাস্তবমুখী হয় সমান পুষ্টিমানের কম দামি খাবার দিয়েও মেনু পরিকল্পনা করা যায়। তবে সমমানের উপাদান সম্বলিত বেশি দামের খাদ্যের পরিবর্তে কম দামি খাদ্য নির্বাচন করে সুষম খাদ্য গ্রহণের মানসিকতা থাকা ভালো। (পরবর্তীতে সুষম খাদ্যের তালিকা তৈরি সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হবে।)
×