ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক সপ্তাহে দাম পড়েছে ৯ হাজার ডলার

বিটকয়েনের বড় দরপতন

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

বিটকয়েনের বড় দরপতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অস্তিত্ব টের পাওয়া না গেলেও ধীরে ধীরে পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠা ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনের মূল্যে বড় দরপতন ঘটেছে। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এই মুদ্রার দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত সপ্তাহের শুরুতে এ মুদ্রাটির দাম ২০ হাজার ডলারের কাছাকাছি থাকলেও শুক্রবার তা কমে ১১ হাজার ডলারেরও নিচে নেমে যায়। এ বছরের শুরুর দিকে এই বিট কয়েনের দাম ছিল ১ হাজার ডলারের মতো। তারপর এর দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। বিশেষ করে গত নবেম্বর থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত এর দাম বাড়ে অস্বাভাবিক গতিতে। যদিও মুদ্রাটির উৎস সম্পর্কে খুব কমই বোঝা যায় এবং ব্যবহারও খুবই সীমিত। বিশ্লেষকরা সম্প্রতি এ মুদ্রায় বিনিয়োগের ব্যাপারে লোকজনকে সতর্ক করে দিচ্ছিলেন। এর মধ্যেই গত কয়েক দিন ধরে এর দাম পড়তে শুরু করেছে এবং এখনও সে ধারা অব্যাহত রয়েছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ক্রিপ্টোকমপেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা চার্লস হাটার বলেছেন, ‘এরকম নজিরবিহীন উত্থানের পর এখন দাম কিছুটা কমবে; কারণ আবেগের পরিবর্তন ঘটেছে।’ তিনি বলেন, চড়া দামের কারণে অনেকেই বিটকয়েন বিক্রি করে অর্থ তুলে নিচ্ছেন। ফলে এখন তার দাম পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলো বিটকয়েনে বিনিয়োগের ব্যাপারে সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। ডেনমার্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিটকয়েনকে এক ভয়াবহ জুয়া বলে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছে। গত সপ্তাহে ব্রিটেনের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের প্রধান এন্ডরু বেইলিও বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন ‘সব অর্থ হারানোর জন্যে প্রস্তুত থাকতে’। তিনি বলেন, কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিংবা সরকার এ মুদ্রাকে অনুমোদন দেয়নি। তাই এর পেছনে বিনিয়োগ মোটেই নিরাপদ নয়। নাম পরিচয় গোপন রেখে সরাসরি গ্রাহক থেকে গ্রাহকের কাছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভার্চুয়াল এ মুদ্রার লেনদেন হয় বলে একে বিনিয়োগের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। বিটকয়েন নামের এ ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ভবিষ্যত প্রজন্মের মুদ্রা হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন প্রযুক্তিবিদরা। তবে মুদ্রা ব্যবস্থায় লেনদেনের এ গোপনীয়তা সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন, সাইবার ক্রাইমে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। চোখে দেখা যায় না, হাতে ধরাও যায় না। তৃতীয় পক্ষ ছাড়াই লেনদেন হয় সরাসরি গ্রাহক থেকে গ্রাহকের কাছে, শুধু ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এমনই ডিজিটাল ভার্চুয়াল মুদ্রার নাম বিটকয়েন। নতুন ইলেকট্র্রনিক ক্যাশ ব্যবস্থায় এ মুদ্রার লেনদেন হয় কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সালে সাতোশি নাকামোতো নামের এক জাপানি নাগরিক এ মুদ্রাব্যবস্থা চালু করেন। যুক্তরাষ্ট্রে এবং ইউরোপের কিছু দেশে এ মুদ্রা জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও এশিয়ায় এখনো অবৈধ এ মুদ্রার লেনদেন। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা আর্থিক সংস্থার কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এবং গ্রাহকের পরিচয় গোপন রাখার সুযোগ থাকায় রয়েছে দরপতন এবং হ্যাকিংয়ের আশঙ্কা। তাই পশ্চিমা বিশ্বে বিটকয়েন কেনা সহজ হলেও এশিয়ায় এ ভার্চুয়াল মুদ্রা কিনতে হয় গোপনে।
×