ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা ॥ পুলিশের টর্চারে প্রধান আসামির মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

ছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা ॥ পুলিশের টর্চারে প্রধান আসামির মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডস্থ ইনস্টিটিউট অব হেলথ এ্যান্ড টেকনোলজির ছাত্রী সাদিয়া আক্তারকে (২১) গণধর্ষণের পর হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিরাজুল ইসলাম (২২) পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। হাসপাতালের চিকিৎসাপত্র ও চিকিৎসকের তথ্য মতে, তার শরীরে টর্চারের আঘাতের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে ৮ ডিসেম্বর সিরাজ বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত আটটার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত সিরাজ পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার পুত্র। সূত্রমতে, গত ৪ ডিসেম্বর সিরাজ ও তার সহযোগী হাফিজ আকনকে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ আব্দুল ওহাব। আটকের পর ৫ ডিসেম্বর সিরাজকে আদালতে সোপর্দ করার পর সে সাদিয়াকে গণধর্ষণের পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এসময় আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। ৮ ডিসেম্বর সিরাজ বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত আটটার দিকে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করার পর শনিবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে। সিরাজের মৃত্যু সম্পর্কে হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শারীরিক আঘাতের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল অমিন রবিবার বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, আসামি সিরাজুল ইসলাম অত্যন্ত গুরুতপূর্ণ একটি মামলার আসামি। সে আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে সাদিয়া আক্তার নামের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীর পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে আমাদের অফিসাররা তাকে এবং তার এক সহযোগীকে পিরোজপুর মঠবাড়িয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ায় অন্য কোন বিষয়ের মধ্যে আসার প্রশ্ন আসে না। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে। অপরদিকে কারাগার হাসপাতালের সহকারী সার্জন কর্তৃক শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণের পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে জেলের বাহির থেকে সিরাজ আহত হয়েছে। হাসপাতালের মৃত্যুর প্রমাণপত্রেও শারীরিক আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, নগরীর ডেফুলিয়া এলাকার বাসিন্দা আলমগীর খানের কন্যা সাদিয়া আক্তার ১৯ নবেম্বর বাসা থেকে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এখনও সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
×