ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে নদীতে ॥ আহত তিন

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

ঠাকুরগাঁওয়ে বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে নদীতে ॥ আহত তিন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ৯ ডিসেম্বর ॥ দীর্ঘদিন আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত শহরের উত্তর পাশে ৩০ বছর বয়সী সেনুয়া বেইলি ব্রিজটি অবশেষে মালবাহী একটি ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে ট্রাকের চালক ও হেলপারসহ তিন জন আহত হয়েছে। ব্রিজটি হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ায় জেলা শহরের সঙ্গে ১০টি ইউনিয়নের পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন । জানা যায়, শুক্রবার রাতে শহরের বিশিষ্ট ব্যবসীয় রাম বাবুর ভাটার জন্য প্রায় ৪০ টন কয়লা নিয়ে ১০ চাকার একটি ট্রাক ঝুঁকিপূর্ণ ওই সেনুয়া বেইলি ব্রিজটি পার হতে গিয়ে ব্রিজের উত্তরের অংশটি ভেঙ্গে ট্রাকসহ নদীর চড়ে পড়ে যায়। এসময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয়রা আহত এক পথচারিকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে আহত অবস্থাতেই ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় শনিবার স্থানীয় প্রশাসন মানুষের চলাচলের জন্য বাঁশ-কাঠ দিয়ে ছোট একটি সেতু বানিয়ে দেয়। ্এতে শত শত লোকজন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। তবে এলাকার কিছু সুবিধাবাদী ব্রিজ পারাপারে পথচারীদের কাছে টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে সেনুয়া নদীর ওপর সড়ক ও জনপথ (সওজ) লোহার বেইলি ব্রিজটি নির্মাণ করে। ওই সময় বলা হয় শীঘ্রই ব্রিজটি বড় আকারে ঢালাই ব্রিজ করা হবে। কিন্তু এলাকাবাসীর অনেক আবেদন-নিবেদেনের পরেও ৩০ বছরের মধ্যে ব্রিজটি আর নির্মাণ করা হয়নি। ব্রিজ দিয়ে ইটভাঁটির ভারি যানবাহনসহ মালবোঝাই যান চলাচলের কারণে কিছুদিনের মধ্যে ব্রিজের পাটাতনের লোহার পাত বেঁকে ও খুঁটিগুলো নড়বড়ে হয়ে যায়। ২০১১ সালে ব্রিজটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে একই বছরের জুলাই মাসে এলজিইডি সেতুর ভাঙ্গা অংশে লোহার নতুন পাটাতন বসিয়ে দেয়। ব্রিজের দুই পাশে লিখে দেয়া হয় সাবধান বাণী। কিন্তু ওই সাবধান বাণী কোন কাজেই আসছিল না। প্রতিনিয়ত ওই ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচল করছিল মালবোঝাই ভারি যানবাহন। কিন্তু বিকল্প পথ না থাকায় ভারি যানবাহনও ব্রিজের ওপর দিয়েই চলতে থাকে। মেরামত করা পাটাতনগুলো আলগা হয়ে যায়। ব্রিজের অনেক জায়গায় তৈরি হয় গর্ত। ভারি যানবাহনই শুধু নয়, হালকা যানবাহন উঠলেই ব্রিজটি কেঁপে উঠত। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ জানার পরও চালকরা বাধ্য হয়েই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করত। ঠাকুরগাঁও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহানুর বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটির কথা কর্তৃপক্ষকে পূর্বেই অনেকবার জানানো হয়েছিল। এছাড়াও সেখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে অসংখ্যবার পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে। তবে ভেঙেঙ্গ যাওয়া ব্রিজটি কবে মেরামত করা হবে এ বিষয়ে তিনি কোন সম্ভাবনার কথা জানাতে পারেননি।
×