স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকৃতির রূপে বিমোহিত এক চিত্রকর জাহাঙ্গীর আলম। সেই সুবাদে নিসর্গের নান্দনিকতায় সজীব হয়ে ওঠে তরুণ এই চিত্রশিল্পীর ক্যানভাস। শিল্পীর রং-তুলির আঁচড়ে প্রকৃতির বহুমুখী প্রকাশে সজীব হয়েছে চিত্রপট। প্রাণসঞ্চারী নিসর্গ যেন তার নিজস্ব কথাগুলো প্রকাশ এই শিল্পীর শিল্পকর্মের আশ্রয়ে। সেই সব চিত্রকর্ম নিয়ে ধানম-ির আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দো ঢাকার লা গ্যালারিতে চলছে প্রদর্শনী। শিরোনাম পিঞ্জরমুক্ত। জাহাঙ্গীর আলমের চিত্রকর্মে প্রকৃতির প্রফুল্ল সৌন্দর্যের সঙ্গে উদ্ভাসিত হয়েছে বৈচিত্র্যময় সত্তা। সেখানে যেন ফুটন্ত কলিতে মাখামাখি করে জেগে ওঠে সূর্যকিরণ। নিগূঢ় প্রতীকময় অন্তরঙ্গতার বার্তা বহন করে সেই ছবি। একজন নিবেদিত শিষ্যের মতো জাহাঙ্গীর প্রকৃতিকে নিরীক্ষণ করেন দৃষ্টি ও অন্তদৃষ্টি দিয়ে।
নিসর্গের বহুমুখী প্রকাশভঙ্গি, বিচিত্র অভিব্যক্তি ও প্রাণস্ফূর্তিকে ধারণ করার চেষ্টা করেছেন আপন শিল্পকর্মে। যেমন করেছেন ’বনের রহস্যময় রোমান্স’ নামক চিত্রকর্ম-সিরিজে। এই নিরীক্ষণে নিজেকে এক পরমাশ্চর্য রহস্যময়তার মাঝে আবিষ্কার করেন শিল্পী; যা তাকে উদ্বেলিত করে তোলে সৃষ্টিকর্মের সৃজনে। জাহাঙ্গীরের ক্যানভাস যেন বলে যায় বাংলার অনায়াস লাবণ্যের প্রতি বিমোহিত হওয়া এক শিল্পীসত্তার কথা।
বাউল আর বৈষ্ণববাদের ভক্ত জাহাঙ্গীর আলম আত্মার সম্মিলনকে তুলে ধরেছেন চিত্রপটে। জলরং ব্যবহারে রয়েছে শিল্পীর স্বকীয় ভাষা। তার প্রতিটি চিত্রকর্ম একতার সাক্ষ্য রহন করে।
জাহাঙ্গীরের তেলরং ও এ্যাক্রিলিকের কাজগুলো মিলিয়ে দেখলে মনে হয় তার চিত্রকর্ম যেন সমকালীন দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগে ফুটিয়ে তুলেছে ওরিয়েন্টাল আর্টের পরিপূর্ণ রূপটি।
৫০টি চিত্রকর্মে সাজানো এ প্রদর্শনীর সূচনা হয় পয়লা ডিসেম্বর। পক্ষকালব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রদর্শনীর সমাপনী দিনের সন্ধ্যায় থাকবে নৃত্য পরিবেশনা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। সোম থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা এবং বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের প্রদর্শনী খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ।