ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেহাল দশা

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেহাল দশা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের হলটা কী? বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) পঞ্চম আসরে বেহাল দশা দেখা যাচ্ছে। যেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ব্যর্থতার ভূত কোনভাবেই দূর করতে পারছে না। মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েস, তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক, তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শফিউল ইসলাম ছাড়া অন্যদের ব্যর্থতা চোখে পড়ার মতোই। মাশরাফি তো এবার লীগে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন। ব্যাট-বল হাতে সমান তালে নৈপুণ্য দেখিয়ে চলেছেন। ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মতো ব্যাটসম্যানরা থাকতেও মাশরাফি ঝলক দেখাচ্ছেন। দুর্দান্ত ব্যাটিং তো আছেই। সঙ্গে বোলিংটাও চলছে অসাধারণ। রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক যেন সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চট্টগ্রামে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে যে ম্যাচটি জিতল রংপুর সেটি ‘ওয়ান ডাউনে’ নেমে মাশরাফির করা ১৭ বলে ৪২ রানের সুবাদেই মিলেছে। লীগজুড়ে ৯ ম্যাচ খেলে ব্যাট হাতে ২১.৪০ গড়ে ১০৭ রান করার সঙ্গে বল হাতে ১০ উইকেট নিয়েছেন। অসাধারণ নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন। সাকিবও শুরুতে বিশেষ নৈপুণ্য দেখাতে না পারলেও বল হাতে ভীষণ উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছেন। ব্যাট হাতে ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক ৯ ম্যাচ খেলে ১৬.৫৭ গড়ে ১১৬ রান করার সঙ্গে বল হাতে ১৩ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সেরা অবস্থানে আছেন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তো ব্যাট হাতে ঝলকানি দেখিয়েই চলেছেন। ব্যাটিংয়ে সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে দেশী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু রিয়াদই আছেন। তিনি ৯ ম্যাচে ৩২.৮৭ গড়ে ২৬৩ রান করে ব্যাটসম্যান তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন। বল হাতেও ৫ উইকেট শিকার করেছেন খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক। ইমরুল কায়েস একজন ব্যাটসম্যান। তিনি ব্যাট হাতে ঠিকই ঝলক দেখিয়ে চলেছেন। ৯ ম্যাচে ৪১.৫০ গড়ে ২৪৯ রান করেছেন। দুর্দান্ত নৈপুণ্য করে যাচ্ছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের এ ব্যাটসম্যান। কুমিল্লার আরেক ব্যাটসম্যান ওপেনার ও অধিনায়ক তামিম ইকবালও খেলতে নামা থেকেই আলো ছড়াচ্ছেন। ইনজুরির জন্য শুরুতেই খেলতে পারেননি। কুমিল্লার ৩ ম্যাচ শেষ হওয়ার পর নেমেছেন। চতুর্থ ম্যাচ থেকে খেলতে নেমে ৬ ম্যাচে ৪১.৪০ গড়ে ২০৭ রান করেছেন। ইনজুরি থেকে ফিরেই অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন। রাজশাহী কিংসের মুমিনুল হকও ঝলক দেখিয়েছেন। তবে শুরুতে যেভাবে ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখাতে থাকেন, সময় যত গড়ায় ততই সেই নৈপুণ্যে যেন ভাটা পড়তে থাকে। ১০ ম্যাচে ২২.৪৪ গড়ে ২০২ রান করেছেন মুমিনুল। অন্যদের ব্যর্থতার মাঝে মুমিনুলের নৈপুণ্য খারাপ নয়। বোলিংয়ে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে মাশরাফি, সাকিবের পর তাসকিন ও শফিউলই আলো ছড়িয়ে চলেছেন। চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে খেলা তাসকিন ৯ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৯ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছেন। আর খুলনা টাইটান্সের শফিউল ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১১ উইকেট। জাতীয় দলের এ ক্রিকেটাররা নৈপুণ্য দেখালেও বাকিরা ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে গেছে যেন। যারা ব্যর্থ হচ্ছেন তাদের মধ্যে মুশফিকুর রহীমের নামটিই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি যে দলের সেরা ব্যাটসম্যান। রাজশাহী কিংসের হয়ে ১০ ম্যাচ খেলে ২১.২৫ গড়ে ১৭০ রান করতে পেরেছেন মুশফিক। বড় কোন ইনিংসও এখন পর্যন্ত খেলতে পারেননি মুশফিক। তার ব্যর্থতাই বেশি চোখে পড়েছে। চট্টগ্রামে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ম্যাচে আবার ফিল্ডিং করার সময় আঙ্গুলে ব্যথাও পেয়েছেন মুশফিক। আজকেই রাজশাহীর ম্যাচ রয়েছে। ম্যাচটিতে খেলতে পারবেন কিনা, খেললেও ব্যথা নিয়ে নৈপুণ্য দেখাতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। চিটাগংয়ের সৌম্য সরকার (৯ ম্যাচে ১৫২ রান), সিলেট সিক্সার্সের সাব্বির রহমান রুম্মন (৯ ম্যাচে ১৮০ রান), রাজশাহীর মেহেদী হাসান মিরাজ (১০ ম্যাচে ৭ উইকেট), কুমিল্লার লিটন কুমার দাস (৮ ম্যাচে ১৫৪ রান), রাজশাহীর মুস্তাফিজুর রহমান (৪ উইকেট), সিলেটের নাসির হোসেন (৯ ম্যাচে ১৪৬ রান), রংপুর রাইডার্সের রুবেল হোসেন (৭ ম্যাচে ৮ উইকেট) ও চিটাগংয়ের শুভাশীষ রায় (৫ ম্যাচে ৪ উইকেট) বেহাল দশায় আছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ব্যর্থতা যেন বিপিএলেও ঘিরে ধরেছে তাদের। এই দশা থেকে এখন বের হতে পারলেই হয়।
×