ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের সমাবেশ ঘিরে দুপক্ষে সংঘর্ষ, আজিমপুর রণক্ষেত্র

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

আওয়ামী লীগের সমাবেশ ঘিরে দুপক্ষে সংঘর্ষ, আজিমপুর রণক্ষেত্র

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাজধানীর আজিমপুর পার্ল হারবার কমিউিনিটি সেন্টারের সামনে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের মধ্যে বেশকিছু যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ধাওয়া পাল্টাধাওয়া এবং ঢিল ছোড়াছুড়ির মধ্যে বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে দুপুর পৌনে একটা পর্যন্ত আজিমপুর এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১৮ নবেম্বর আওয়ামী লীগের নাগরিক সমাবেশ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা এবং সদস্যপদ নবায়ন, প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ উপলক্ষে বর্ধিত সভাস্থলে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় আজিমপুরে পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারে বর্ধিত সভা আয়োজন করা হয়। ১৮ নবেম্বর আওয়ামী লীগের নাগরিক সমাবেশ সফল করা এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্যই এ সভা ডাকা হয়। কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ ও কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচী ছিল। কিন্তু কে বা কারা সভাস্থল কমিউনিটি সেন্টারের গেটের সামনে ময়লার স্তূপ ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফিকে ‘লাঞ্ছিত’ করার প্রতিবাদে তার অনুসারীরা একই সময়ে আজিমপুর রোডে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করছিলেন। তারা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের বহিষ্কারের দাবিতে মিছিল করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসী ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জমে আছে ময়লার পাহাড়। মুরাদের সমর্থকরা সকালে সেখানে এসে ময়লার স্তূপ দেখে দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের পদত্যাগের দাবিতে সেøাগান দিতে শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়, পুরো এলাকায় নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কিন্তু বেলা এগারোটার দিকে মেয়রপন্থী আওয়ামী লীগকর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আজিমপুর রোডে ঢুকতে চাইলে শুরু হয় গ-গোল। দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার সময় পলাশীর মোড়ে দু’পক্ষের কয়েকটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়া হয়। একপর্যায়ে ইডেন কলেজের সামনেও মোটরসাইকেল ভাংচুর করে উভয়পক্ষ। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে দুপুর একটার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ঘটনাস্থলে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি ছিল থমথমে। এর মধ্যে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে আওয়ামী লীগের দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। পুলিশ বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে শুরু হয় ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ। এ সময় আজিমপুর এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আজিমপুর চৌরাস্তা, পলাশী, ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ এতিমখানা রোডের পুরো এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আজিমপুর চৌরাস্তায় পুলিশ অবস্থান করলেও ভেতরের রাস্তাগুলো দিয়ে যাতায়াতকারী ও পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে বেশকিছু গাড়ি ভাংচুর করা হয় বলে জানান একাধিক প্রত্যক্ষ্যদর্শী।
×