ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সৌরবাক্সের আলোয় নিরাপদ জীবন

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২ নভেম্বর ২০১৭

সৌরবাক্সের আলোয় নিরাপদ জীবন

নেপালে আজকাল সৌরবাক্সের ব্যবহার ক্রমশই বেড়ে চলছে। হলুদ রঙের এই বাক্সটি আসলে একটি সৌরশক্তি চালিত বাতি; যা বিদ্যুত নেই এমন জায়গায়ও আলোর উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যায় এবং বিশেষ করে তা কাজে লাগানো হয় নিরাপদে সন্তান জন্মদান নিশ্চিত করতে। নেপালে এখন ১১০ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই সৌরবাক্স দিচ্ছে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক শক্তি। এর আগে মায়েরা বাচ্চার জন্ম দিতেন হয় অন্ধকার ঘরে, নয়ত বহু মাইল পথ পেরিয়ে সবচেয়ে কাছের হাসপাতালে গিয়ে। নেপালে প্রতি চারজনে একজনের কাছে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুত পৌঁছয়নি। অনেক সময় সন্তানের জন্ম হয় মোমবাতির আলোয়য়। প্রায়ই দেখা যায়, আলো না থাকায় হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন বিলম্বিত বা বাতিল করতে হয়। কিন্তু নেপালের পা-বখনি গ্রামে ২০১৪ সালে যন্ত্রটি স্থাপিত হওয়ার পর, প্রসবকালীন কোন প্রসূতি বা বাচ্চার মৃত্যু ঘটেনি এখন পর্যন্ত, এই কেন্দ্রে। প্রসবের সময় অত্যধিক রক্তপাত, উচ্চ রক্তচাপ বা বাধাজনিত জন্ম, এসব পরীক্ষা করতে হলে দরকার প্রচুর আলো। বাচ্চা জন্ম দেয়ার সময় জীবন এবং মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে এই আলোর উপস্থিতি। সন্তান জন্মের জায়গাটিতে আলো না থাকলে সাধারণ সমস্যাও বিপজ্জনক, এমনকি মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে। আর সে রকম অবস্থায় একটি সৌরশক্তি চালিত বাতি বাঁচাতে পারে প্রসূতি এবং সদ্যোজাত বাচ্চার প্রাণ। সৌরবাক্সের উদ্ভাবক যুক্তরাষ্ট্রের ড. লরা স্ট্যাচেল। এই বাক্সে থাকে একটি সোলার প্যানেল, একটি ব্যাটারি, চার্জ কন্ট্রোলার এবং কিছু চিকিৎসা যন্ত্রপাতি। গর্ভস্থ শিশুর হৃৎস্পন্দন মাপার যন্ত্রও থাকে। গোটা বিশ্বে এখন আড়াই হাজারের কাছাকাছি সৌরবাক্স স্থাপিত রয়েছে। সৌরবাক্সের ব্যবহারের সুফল সম্পর্কে নেপালের হারি সুনার বলেন, তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয় খুব কম আলোতে। কিন্তু তার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হতে যাচ্ছে সৌরবাক্সের আলোতে। তিনি বলেন, আমি আনন্দিত যে এখন শুধু আমার জন্য নয়; আমার গ্রামের সব নারীর জন্য আছে এই সৌরবাক্স। -বিবিসি
×