ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পটিয়ায় গ্রামীণ সড়ক বেহাল

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

পটিয়ায় গ্রামীণ সড়ক বেহাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া, ২৫ অক্টোবর ॥ উন্নয়ন ও সংস্কারের অভাবে পটিয়া উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নে গ্রামীণ তিনটি সড়কের বেহাল অবস্থা হয়েছে। ধলঘাটে বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেন সড়ক, তেকোটা বৌদ্ধ বিহার সড়ক ও তেকোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কের পরিস্থিতি বর্তমানে ভয়াবহ। সেখানে গাড়ি চলাচলতো দূরের কথা, হেঁটে পর্যন্ত চলাচল করা যাচ্ছে না। যার কারণে এলাকার অসংখ্য শিক্ষার্থী ও লোকজনকে নানাভাবে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের পুরোধা মাস্টারদা সূর্য সেন সড়ক হাঁটু পরিমাণ কাদামাটি। এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। তেকোটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কে ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। স্কুলের শিক্ষার্থী ও এলাকার লোকজন পারাপারের জন্য বাঁশের তৈরি একটি সাঁকো বানিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ওই সাঁকো দিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চলাচল করছে। মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি গ্রামবাসী একাধিকবার পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেও কোন লাভ হয়নি। ধলঘাট ছালেহ আহমদ চৌধুরী সড়কের চন্দ্রকলা ব্রিজের দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে যাওয়া তেকোটা বৌদ্ধবিহার সড়ক। সড়কটি দীর্ঘদিন কোন সংস্কার হয়নি। মাঝেমধ্যে গ্রামবাসীর অর্থে ভাঙাচোরা ইট ও বালি দিয়ে কোনভাবে চলাচলের জন্য উপযোগী করেন। পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী টিপু বলেন, তেকোটা গ্রামের তিনটি রাস্তার বেহাল অবস্থা হওয়ার বিষয়ে এলাকার লোকজন তাকে জানিয়েছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। রাস্তা ৩টি কিভাবে সংস্কার করা যায় তিনি উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন। ফেনী নিজস্ব সংবাদদাতা ফেনী থেকে জানান, জেলা শহরের সঙ্গে উপজেলা সদরগুলোর যোগাযোগের সড়কগুলো ভেঙ্গে খানাখন্দে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এ সড়কের খানা-খন্দের ওপর দিয়ে প্রতি মুহূর্তে চলছে ১২ থেকে ১৬ চাকার ভারি ট্রাক। ফলে দুর্ঘটনা লেগেই আছে প্রতিনিয়ত। ফেনী-সোনাগাজী সড়কের যাত্রীদের ভোগান্তি এমন পর্যায়ে গেছে যে গত কয়েকদিন আগে সিএনজি অটো টেম্পুতে এক প্রসূতি সন্তান জন্ম দিয়েছে। মহাসড়কের যানবাহন শহরের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় দুপুর বেলা ট্রাংক রোডের মোড়ে একজন ও মুক্তবাজারের সামনে একজন ট্রাক চাপায় মারা গেছে। গত আড়াই মাসে মৃত্যুর এ দুটি ঘটনা ছাড়াও প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। শহরের ছোট যানবাহনসহ জনগণের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়েছে যানজট। জেলা শহরের ট্রাংক রোড, কুমিল্লা রোড, কলেজ রোড, হাসপাতাল রোড, একাডেমি রোড এমন পর্যায়ে গেছে যে, অনেকে একবার এসব রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করলে আবার আসতে ভয়ে থাকেন, কখন দুর্ঘটনায় পড়েন। সড়ক বিভাগ থেকে মাঝে সাজে গর্ত ভর্তি করে ইট ভাঙ্গা দেয়া হয়। তা আবার ১/২ দিন না যেতেই ভাঙ্গা ইট সরে গিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে যায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে নির্মাণ কাজ চলছে দেশের প্রথম সিক্স লেন ফ্লাইওভারের কাজ। তাই ঢাকা-চট্টগ্রামের বাস, কাভার্ডভ্যান, ট্রাক মহিপাল বাইপাস করে শহরের ওপর দিয়ে চলাচল করছে সব সময়। ভারি ১২/১৬ চাকার কাভার্ডভ্যান চলার সময় রাস্তার পাশের ঘরবাড়িগুলো ভূমিকম্প সাদৃশ্য কাঁপতে থাকে। বিশেষ করে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনগুলোর পিলার এমনভাবে কাঁপে যা ভবিষ্যতে ভবনগুলো নির্মাণত্রুটির কারণে হুমকির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। ফেনী-সোনাগাজী, ফেনী-পরশুরাম, ফেনী-ছাগলনাইয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বে রয়েছে। জেলা শহরের পাড়া মহল্লার রোডগুলোর দায়িত্ব ফেনী পৌরসভার। পৌরসভার রোডগুলো কদিন পর পর মেরামত করতে দেখা যায়। দায়সারা মেরামত ও নিম্নমানের কাজের কারণে কয়েকদিনের মধ্যেই রোডগুলো আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়। ভোগান্তি বেড়ে যায় জনগণের। গঙ্গামতি সৈকত সংযোগ সড়ক নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া থেকে জানান, পর্যটন পল্লী গঙ্গামতি সৈকতে যাওয়ার একমাত্র সংযোগ সড়কটির বেহাল দশা। সড়কটি কোথাও কোথাও আবাদি জমির সঙ্গে মিশে গেছে। বর্ষা মৌসুমে পর্যটক-দর্শনার্থীদের হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি পেরিয়ে যেতে হয় দর্শনীয় এ সৈকতে। সড়কটি মেরামতসহ পাকাকরণের দীর্ঘদিনের দাবি আজও পূরণ হয়নি। ফলে প্রকৃতিপ্রেমীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। লাল কাঁকড়ার চর খ্যাত পর্যটন পল্লী গঙ্গামতি সৈকতের আলাদা সুনাম রয়েছে। সাগর মোহনা ঘিরে আঁকাবাঁকাভাবে জেগে ওঠায় চর সৈকতটি আরও দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সৈকত ঘেঁষা ঝাউবাগানসহ বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল মানুষকে মুগ্ধ করে। প্রতিদিন এ সৈকতটি ভ্রমণে আসছে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। কিন্তু সব পথ পেরিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার সংযোগ সড়কের সমস্যার কারণে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। বালিমাটি দিয়ে নির্মিত সংযোগ সড়কটি এখন সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। অর্ধেকটা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। শুকনো মৌসুমে এ পথ সহজে পেরিয়ে যায় আগতরা। কিন্তু ভোগান্তি হয় বর্ষা মৌসুমে। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গঙ্গামতিকে পর্যটন পল্লী গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেন। তখন থেকে গঙ্গামতির প্রায় দেড় হাজার একর এরিয়া জুড়ে খাস জমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়। ফলে ভূমিদস্যুদের থাবা থেকে রক্ষা পায় এই পর্যটন পল্লী।
×