ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পরের এশিয়া কাপের মূলপর্বে সরাসরি খেলবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ চীনকে হারিয়ে

প্রকাশিত: ০৭:৪৫, ২০ অক্টোবর ২০১৭

বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ চীনকে হারিয়ে

রুমেল খান ॥ বাংলাদেশ দলের সেরা খেলোয়াড় তিনি। অধিনায়কও বটে। অথচ আগের তিন ম্যাচে গোল পাননি। চতুর্থ ম্যাচেও পাননি। তবে পেনাল্টি শূটআউটে গোল করেছেন। এই গোল অবশ্য তার নামের সঙ্গে যোগ হবে না। না হলেও ক্ষতি নেই। কারণ তার গোলেই যে অবিস্মরণীয় জয় কুড়িয়ে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ, এশিয়া কাপ হকির দশম আসরে। গোল করে দলের জয় নিশ্চিত হতেই হাতের স্টিকটা ছুড়ে দিলেন আকাশে। এরপর দিলেন খিচে দৌড়। ওই অবস্থাতেই পরনের জার্সিটা খুলে সেটাকেও ভাসিয়ে দিলেন হাওয়ায়। এরপর বৃষ্টিভেজা টার্ফে স্লাইডিং করে লুটিয়ে পড়লেন। সঙ্গে সঙ্গেই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন সতীর্থরা। সেই সঙ্গে মওলানা ভাসানীতে হাজির হাজার পাঁচেক দর্শকদের গগণবিদারী স্লোগান, ‘বাংলাদেশ জিতেছে।’ হ্যাঁ, বৃহস্পতিবার প্রাক স্থান নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ পেয়েছে এক হৃদয় কাঁপানো জয়। চীনের প্রাচীর টপকে তারা। চীনকে পেনাল্টি শূটআউটে হারিয়েছে ৪-৩ গোলে। এর আগে নির্ধারিত ৬০ মিনিটে উভয় দল ৩-৩ গোলে ড্র করে। চীনকে হারিয়ে দারুণ এক সুখবরও পেয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ের ফলে তারা পরবর্তী এশিয়া কাপের একাদশ আসরে বাছাইপর্বে না খেলে সরাসরি মূলপর্বেই খেলবে। চলতি আসরে এখন তারা খেলবে পঞ্চম স্থান অধিকারের জন্য। সেজন্য আজ তারা বিকেল সাড়ে ৫টায় মোকাবেলা করবে জাপানের। বাংলাদেশ দল জিতলেও এদিন সার্বিকভাবে তারা ভাল খেলেনি। সেক্ষেত্রে চীনের হার ছিল হতাশার। কেননা তারা ম্যাচে ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল। ম্যাচের ১৭ মিনিটেই পর পর দুটি পিসি থেকে জোড়া গোল করে এগিয়ে যায় চীন। দুটি গোলই করেন ডু তালাকে। ২৪ মিনিটে বাংলাদেশের রোমানকে ফাউল করলে আম্পায়ার পেনাল্টির নির্দেশ দেন। তা থেকে গোল করেন আশরাফুল ইসলাম (১-২)। ২৮ মিনিটে অষ্টম পিসি থেকে আবারও গোল করে চীন হতাশায় ডুবায় বাংলাদেশকে। গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ডু তালাকে (৩-১)। যখনই মনে হচ্ছিল আরেকটি হারের মুখোমুখি বাংলাদেশ, তখনই ভেল্কি দেখায় তারা। ৫৩ মিনিটে আরশাদের পাস থেকে কানেক্ট করে মিলন হোসেন (২-৩)। আশায় বুক বাঁধে বাংলাদেশ। পরের মিনিটেই আশা পূরণ। ৫৪ মিনিটে চতুর্থ পিসি থেকে খোরশেদুর রহমান গোল করে পুরো দেশকেই কাঁপিয়ে দেন (৩-৩)। এরপর খেলা শেষ হলে শুরু হয় শূটআউট নামের ভাগ্যপরীক্ষা। নতুন নিয়মানুযায়ী সেন্টার থেকে বল নিয়ে স্ট্রাইকারকে পোস্টে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে আট সেকেন্ডের মধ্যে গোল করতে হবে। এ নিয়মে জাপানের হয়ে গোল করেন মেং দিহাও, জোও জিঝিয়াং এবং জাও জিয়াওপিং। মিস করেন অও সাওঝু এবং অও ইয়াং। বাংলাদেশের হয়ে গোল করেন ফরহাদ শিটুল, নাঈম উদ্দিন, পুস্কর খিসা মিমো এবং রাসেল মাহমুদ জিমি। মিস করে সোহানুর সবুজ। খেলা শেষে বাংলাদেশের কোচ মাহবুব হারুন বলেন, ‘ছেলেরা শেষ পর্যন্ত ফাইট করে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে, এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। বিশেষ করে চতুর্থ কোয়ার্টারে ছেলেরা যে খেলাটা খেলেছে, অবিশ্বাস্য। পুরো টুর্নামেন্টে এই সময়টুক আমাদের সেরা কেটেছে। আগের ম্যাচগুলোয় আমরা অসংখ্য ভুল করায় প্রত্যাশা মতো খেলতে পারিনি।’ জয়ের নায়ক জিমি বলেন, ‘আমি চাপ নিতে পছন্দ করি। চাপের মধ্যে দলকে জেতাতে পারার আনন্দই অন্য রকম। আমরা শেষ পর্যন্ত খেলাটা ছাড়িনি। আশা ছিল আমরাই জিতব।’ চীন বধ শেষ। আজ কি জাপানকেও হারের স্বাদ উপহার দিয়ে পঞ্চম হতে পারবেন জিমিরা?
×