ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২১ অক্টোবর পুরস্কার তুলে দেবেন সজীবওয়াজেদ জয়

জয় বাংলা ইয়ুথ এওয়ার্ড সমাজে তরুণদের অবদানের স্বীকৃতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

জয় বাংলা ইয়ুথ এওয়ার্ড সমাজে তরুণদের অবদানের স্বীকৃতি

বিভাষ বাড়ৈ ॥ অপেক্ষার পর অবশেষে তরুণদের জন্য সুখবর এলো। আবারও ফিরে এসেছে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ এওয়াড’। তারুণ্যের আলোচিত প্লাটফর্ম ‘ইয়ং বাংলা’ দেশ ও সমাজে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ এবার এওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করেছেন ৫০ জন তরুণকে। সামাজিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন, ক্রীড়া উন্নয়নে অবদানের জন্য মনোনীত এ তরুণদের হাতে এওয়ার্ড তুলে দিতে আগামী ২০ ও ২১ অক্টোবর ব্যতিক্রমী এক আয়োজন নিয়ে হাজির হচ্ছে ইয়ং বাংলা। জানা গেছে, দেশ ও সমাজের প্রতি অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন ১০০ জন তরুণ। তাদের নিজের প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে অনুষ্ঠানে কথা বলারও সুযোগ পাবেন তারা। এরপর ২১ অক্টোবর বাছাইকৃত ৫০ জন তরুণ ও তাদের প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হবে জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড। সেখানে উপস্থিত থাকবেন দেশের স্বনামধন্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। নিজ হাতে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এই অয়োজনকে ইয়ং বাংলার কোন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হিসেবে দেখছেন না সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) কার্যনির্বাহী পরিচালক সাব্বির বিন শামস। তিনি বলেন, এটি শুধু পুরস্কার বিতরণী বা ভাল কাজের স্বীকৃতি দেয়ার একটি আয়োজন নয়। বরং এর মাধ্যমে দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা অনুপ্রেরণা লাভ করে। দেশ গঠনের কাজে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সামনে এগিয়ে আসার প্রেরণা পান। ইয়ং বাংলার পরিচালনায় থাকা প্রতিষ্ঠান সিআরআইর কার্যনির্বাহী পরিচালক বলেন, এবার সামাজিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, ক্রীড়া উন্নয়নসহ আরও বেশকিছু বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এবার পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, সমাজ থেকে যে কোন ধরনের নিষ্ঠুরতা এবং সহিংসতা দূরীকরণ এবং মাদক থেকে তরুণদের দূরে রাখার কার্যক্রমে সহায়তা করেছে। এগুলোর পাশাপাশি শিশুদের সামাজিক সহায়তা প্রদান, স্কুলে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা প্রদান, পথ শিশু, শিশু বা প্রতিবন্ধীদের সহায়ক কার্যক্রম, অসহায় নারী, বৃদ্ধ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, শরণার্থী, হত-দরিদ্র ও সমাজের অসহায়দের সহায়ক কার্যক্রমের জন্যও পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া বেকারত্ব দূরীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ, দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম, টেকসই আবহাওয়া ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমসহ তরুণদের ক্রীড়া ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়কে পুরস্কারের জন্য বিবেচনায় রাখা হয়েছে। জানা গেছে, এবারের জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ডের আবেদনপত্র আহ্বানের পর দেশের ৪৪টি শহরে এবং ৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলে ক্যাম্পেন। আয়োজনের শুরু থেকেই আশাতীত সারা পায় ইয়ং বাংলা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এক হাজার ৩০০ প্রতিষ্ঠানের আবেদন আসে। ১৯ আগস্ট আবেদনের সময়সীমা শেষ হলে শুরু হয় বাছাই কার্যক্রম। প্রাথমিক পর্যায়ে পাওয়া এক হাজার ৩০০ আবেদনপত্র থেকে বাছাই করা হয় ১০০টি। এরপর শুরু হয় তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাওয়া। সমাজে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভাব এবং কার্যকারিতা বিবেচনায় এনে ৫০টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। এর আগে ২০১৫ সালে প্রথমবার জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ডের আয়োজনে এক হাজার ৫০০ আবেদন থেকে ৩০ জন তরুণ ও তাদের প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। তরুণদের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, বয়স্ক শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের জন্য এই পুরস্কার পান তারা। বিগত দুই বছরে এই ৩০ জন পুরস্কার বিজয়ীদের নিয়ে নানা আয়োজনও করে ইয়ং বাংলা। ইয়ং বাংলা ও মাইক্রোসফট বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড জয়ীদের ১০ জন পান কম্পিউটার ল্যাব। এর ফলে স্থানীয় পর্যায়ে তারা আইসিটি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তরুণদের কর্মক্ষম করে তুলতে পারছেন। এ্যাওয়ার্ড জয়ী কয়েকজনের পাশাপাশি ৯ সদস্যের তরুণ কর্মীদের একটি দল চীন সফরের সুযোগ পান। দুই দেশের তরুণদের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি ছিল এই সফরের উদ্দেশ্য। এছাড়া জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড বিজয়ী তিনজনসহ ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভারত সফর করে। ১০০ তরুণ কর্মীর ভারত সফর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তারা ভারতে যাওয়ার সুযোগ পান। দুই দেশের তরুণদের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি এই সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। জয় বাংলা এ্যাওয়ার্ডের জন্য আবেদন করা বিভিন্ন প্লাটফর্মের উদ্যোক্তারা সন্তোষ প্রকাশ করে বলছেন, দেশে এমন আর কোন তারুণ্যের প্লাটফর্মের নেই যা তরুণদের সম্ভাবনাময় সব উদ্যোগকে সমন্বিতভাবে উন্নয়নের জন্য এভাবে সহায়তা করছে। ২০১৪ সালে তারুণ্যের প্লাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ইয়ং বাংলা। নীতি-নির্ধারকদের কাছ পর্যন্ত তরুণদের চাওয়া-পাওয়া পৌঁছে দেয়ার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে দেশের তরুণ উদ্যোক্তা ও সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা তরুণদের সবার কাছে পরিচিত করে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে ইয়ং বাংলা।
×