ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

দেবশংকর হালদার অভিনীত নাটক বর্ণ পরিচয়ের মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ৯ অক্টোবর ২০১৭

দেবশংকর হালদার অভিনীত নাটক বর্ণ পরিচয়ের মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেবশংকার হালদার। বাংলা মঞ্চ নাটকের শক্তিশালী এক অভিনেতা। সাবলীল অভিনয়ে বিচরণ করেন নানা চরিত্রের মাঝে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত এই অভিনয়শিল্পীর অনবদ্য অভিনয় অবলোকনের সুযোগ পেল ঢাকার নাট্যপ্রেমীরা। রবিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো তার একক অভিনীত নাটক। গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিবেশিত হলো পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ রুচিবঙ্গ প্রযোজিত নাটক ‘বর্ণপরিচয়’। রচনার পাশাপাশি প্রযোজনাটির নির্দেশনায় ছিলেন রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। নাটক মঞ্চায়নের আগে কথা হয় দেবশংকর হালদারের সঙ্গে। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, এর আগেও বাংলাদেশের মঞ্চে অভিনয় করেছি। ঢাকায় আসলে সব সময়ই ভিন্নরকম আনন্দ উপলব্ধি করি। এদেশের দর্শকদের ভালবাসায় জুড়িয়ে যায় হৃদয়। নাটকের প্রতি তাদের আবেগ আমাকে দারুণভাবে তাড়িত করে। তাই নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে তাদের আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করি। তাছাড়া বাংলাদেশ ও ভারত এই দুই দেশের সংস্কৃতির সামঞ্জস্যপূর্ণ রূপটিও বার বার ঢাকায় আসতে অনুপ্রাণিত করে। দক্ষিণ কলকাতার এক বনেদি বাড়ির সদস্যদের যাপিত জীবনকে উপজীব্য করে এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী। সেই রায় চৌধুরী বাড়িতে বাস করে নানা সম্পর্কের মানুষ। সম্পর্কে তারা জেঠা-ভাইপো, দেওর-বৌদি কিংবা শ্বশুর-বউমা। দোল পূর্ণিমার নানা রঙের আবির যেন ছুঁয়ে যায় সেই আন্তঃসম্পর্কে। সেখানে দেখা মেলে ব্যক্তি থেকে সমষ্টির সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার নানা দৃশ্যকাব্য। চরিত্রগুলো হেঁটে যেতে থাকে একে অপরের গা ঘেঁষে ঘেঁষে। একজনের মনের ছায়া সহজাতভাবেই ডানা মেলে আরেকজনের মানসলোকে। তাই তো একজনের মন খারাপের মধ্যে আরেকজন ঢুকে পড়ে সঙ্গী হয়ে। সেই মন খারাপটাকেই রং মাখিয়ে ভূত বানিয়ে হাসিয়ে দিতে চায়। রঙে-রঙেই হয় বর্ণপরিচয়। কোথা থেকে যেন ভেসে আসেন রবীন্দ্রনাথ। সুকুমার তার গোল চশমাটির ভেতর থেকে যেন হাসিমুখে তাকিয়ে এ বাড়ির মানুষগুলোর দিকে। কেউ হয়তো দোলের দিনে সেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে অন্য কোথাও। কারও আবার রং খেলার ইচ্ছেটাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে কোন মেঘলা স্মৃতি। এভাবেই যাপিত জীবনের কান্নাহাসির স্মৃতি ও বাস্তবের আলোছায়া গিয়ে এগিয়ে যায় নাটকের গল্প। গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের তৃতীয় দিন ছিল রবিবার। এদিন সন্ধ্যায় শিল্পকলার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় আরেকটি একক অভিনয়ের নাটক ‘গহনযাত্রা’। পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) প্রযোজিত নাটকটিতে অভিনয় করেছেন শামছি আরা সায়েকা। রুবাইয়াত আহমেদ রচিত প্রযোজনাটির নির্দেশনায় ছিলেন সুদীপ চক্রবর্তী। এছাড়া তৃতীয় দিনের উৎসবে বিকেলবেলায় নাট্যশালার সিঁড়িসংলগ্ন মুক্তমঞ্চে ছিল বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে মূকাভিনয় পরিবেশন করে মুক্তমঞ্চ নির্বাক। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে বৈকুণ্ঠ আবৃত্তি একাডেমি ও আবৃত্তি একাডেমি। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র ও সমস্বরের কণ্ঠশিল্পীরা। মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির সম্মিলনে নাচ করে নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন মিজানুর রহমান সজল ও শৃকলা দাস গুপ্ত। একক কণ্ঠে গান শোনান মহাদেব ঘোষ ও শান্তা সরকার। দশ দিনব্যাপী এ উৎসবের চতুর্থ দিন আজ সোমবার। এদিন বিকেলে মুক্তমঞ্চের সাংস্কৃতিক আয়োজনে থাকছে নৃত্য-গীত, আবৃত্তি, পথনাটক, মূকাভিনয় ও শিশু-কিশোর পরিবেশনা। সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশলার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে কলকাতার নাট্যদল গণকৃষ্টির নাটক ‘তোমার আমি’। এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের নাটক ‘দি জুবলী হোটেল’। স্টুডিও থিয়েটার হলে নাট্যতীর্থ মঞ্চায়ন করবে ‘কমলা সুন্দরী’।
×