ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনায় কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৫ অক্টোবর ২০১৭

খুলনায় কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট খুলনার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মঈনুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীর ওপর নির্যাতন ও স্থায়ী ঠিকানার তথ্য গোপন করে চাকরিতে যোগদানের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ওই কর্মকর্তার স্ত্রী সাউদিয়া আক্তার দোলন। সংবাদ সম্মেলনে দোলন অভিযোগ করেন, ২০০৬ সালের ১৮ আগস্ট মঈনুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে তার স্বামী নগদ ৫ লাখ টাকা যৌতুক গ্রহণ করেন। পরে বাড়ি করার কথা বলে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক না পেলে সে তাকে তালাক দিয়ে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৪ ডিসেম্বর নির্যাতন করে তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এর আগে ওষুধ সেবন করিয়ে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করা হয়। সর্বশেষ গত ১০ মার্চ সন্ত্রাসীদের এনে আবারও যৌতুকের টাকা দাবি করে ও হুমকি দেয়। তারপর থেকে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় মঈনুল। সংবাদ সম্মেলনে দোলন জানান, মঈনুল ইসলামের এ ধরনের আচরণে নিরুপায় হয়ে তিনি তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, যৌতুক ও প্রতারণার তিনটি মামলা করেছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উপরন্তু অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদ থেকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে প্রমোশন দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে দোলন তার স্বামীর চাকরিতে যোগদান সম্পর্কিত তথ্য যাচাই-বাছাই এবং অবৈধ উপায়ে অর্জিত অঢেল অর্থ-বিত্তের উৎস খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে নগরীর শিরোমনি এলাকার বাসিন্দা সাউদিয়া আক্তার দোলন অভিযোগ করেন, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী শেখ মঈনুল ইসলাম যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাসান শেখের ছেলে। কিন্তু সে তার স্থায়ী ঠিকানা গোপন করে নগরীর খানজাহান আলী থানা এলাকায় স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়ে ‘খুলনা জেলা কোটায়’ ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট খালিশপুর খুলনায় অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে যোগদান করেন। অথচ কাস্টমসের ২০০৯ সালের ১৩ জুন পত্রিকায় প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যশোর জেলার কোন কোটা ছিল না। তিনি বলেন, ঠিকানা গোপনের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য প্রতারক মঈনুল চাকরিতে যোগদানের মাত্র তিন মাসের মাথায় ২০১০ সালের ৪ এপ্রিল তার পিতা আবুল হাসান শেখের নামে খুলনার ফুলতলা উপজেলার আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের শিরোমনি মৌজায় মোটা অংকের অর্থে জমি ক্রয় করেন। ওই জমিকেই সে খুলনায় তার স্থায়ী ঠিকানা বলে প্রচার করছেন।
×