ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জবাব ভালই দিচ্ছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১ অক্টোবর ২০১৭

জবাব ভালই দিচ্ছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে ভুল করেছেন। দ্বিতীয়দিনে দ্বিতীয় সেশন শেষ হতেই ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসও কী ভুল করলেন না! সেই ভুলে বাংলাদেশেরই যেন উপকার হলো। দক্ষিণ আফ্রিকা যেভাবে ব্যাটিং করছিল, তাতে মনে হয়েছিল ৬০০-৭০০ রান করেই ছাড়বে। এরপর বাংলাদেশকে দুই ইনিংস খেলতে হবে। ইনিংস ব্যবধানে হারও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু মুমিনুল হক (৭৭) ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের (৬৬) ব্যাটিং দৃঢ়তায় বাংলাদেশ ফলোঅন এড়িয়ে ফেলল। ভালই জবাব দিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় এরআগে কখনই দক্ষিণ আফ্রিকাকে টেস্টে দ্বিতীয়বার ব্যাটিং করাতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংস ব্যবধানে হারও এড়াতে পারেনি। এবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে বাধ্য করলো মুশফিকবাহিনী। ফলোঅন এড়ানোয় এবার ইনিংস হার এড়িয়ে ফেলল বাংলাদেশ। এখন ম্যাচের মোড় তো ড্র’র দিকেও ঘুরে যেতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে, কিভাবে? দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে ৪৯৬ রান করেছে। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৩২০ রান করেছে। বাংলাদেশ ১৭৬ রানে পিছিয়ে থাকে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয়দিন শেষ হওয়ার আগে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৫০ রান করে। বাংলাদেশের সামনে এখনই জিততে ২২৭ রানের টার্গেট দাঁড় হয়ে গেছে। এখন দক্ষিণ আফ্রিকা আর কত রান করে ইনিংস ঘোষণা দেবে। হয়তো ৩৫০ থেকে ৪০০ রান। দক্ষিণ আফ্রিকা আজ চতুর্থদিনেই যে ইনিংস ঘোষণা দেবে তা নিশ্চিত। জেতার লক্ষ্য থাকলে যে এর বিকল্প পথ প্রোটিয়াদের হাতে খোলা নেই। যত বেশি রান চা বিরতির আগে করতে পারে, করবে। এরপর ইনিংস ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশের কয়েকটি উইকেট তুলে নেয়ার চেষ্টা করবে। কিংবা চা বিরতির পরও কিছুক্ষণ ব্যাটিং করে ইনিংস ঘোষণা করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর এখানেই ম্যাচ ড্র’র সম্ভাবনা থাকছে। তৃতীয়দিন শেষ। আজ চতুর্থদিন। হাতে থাকে আরেকটি দিন। যেভাবে খেলা এগিয়ে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা যদি দ্বিতীয় সেশন শেষ হতেই ইনিংস ঘোষণা করে তাহলে বাংলাদেশ চার সেশন ব্যাট করার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের তখন কাজটা কী হবে? শুধুই উইকেট আঁকড়ে থেকে চারটি সেশন অতিক্রম করে দেয়া। জেতার জন্য খেলতে গেলে বিপদ আসতে পারে। তাই ড্র’র জন্যই খেলতে হবে। উইকেট বাঁচিয়ে খেলতে হবে। তা করতে পারলেই তো ম্যাচ ড্র হয়ে যাবে। উইকেট পুরোপুরি ব্যাটসম্যানদের পক্ষে। তিনদিন পর্যন্ত তাই ছিল। চতুর্থ ও পঞ্চমদিনে উইকেট ব্যাটসম্যান না বোলারদের পক্ষে যায় তা আজই বোঝা যাবে। স্বাভাবিকভাবে বোলারদের পক্ষেই যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনদিনে যে অবস্থা হয়েছে তা যদি বজায় থাকে; তাহলে ড্র ফল বের করা খুবই সম্ভব। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং পজিশনগুলো এলোমেলো হওয়ার সুযোগ নেই। তাই ব্যাট হাতে যারা জ্বলে ওঠেননি, তাদের জ্বলে ওঠারও সম্ভাবনা থাকছে। সাব্বির রহমান রুম্মন বলেছিলেন, তিনদিন দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং করলে ১০০০ রান হতে পারে। আবার ৭০০ রানও হতে পারে। সাব্বির ঠিকই বলেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস মিলিয়েই তো ৮১৬ রান হয়ে গেছে। আবার তাসকিন আহমেদ যে বলেছেন, হারার চিন্তা কোনভাবে করছেন না। তা করাও যায় না। যদি জেতা সম্ভব না হয় তাহলে ড্রয়ের চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। এখন সেই চেষ্টা করা ছাড়া কোন বিকল্পও নেই। মুমিনুল-মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং দৃঢ়তায় ফলোঅন এড়িয়ে ৩২০ রানও করেছে বাংলাদেশ। এখন দ্বিতীয় ইনিংসে ভাল করতে পারলেই হয়। তাহলে ম্যাচ ড্র’র আশাও থাকছে।
×