ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি

মিয়ানমারের জেনারেলদেও বিচার চায় যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারের জেনারেলদেও বিচার চায় যুক্তরাষ্ট্র

বিডিনিউজ ॥ রাখাইনে বেসামরিক রোহিঙ্গাদের হত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্বকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। রাখাইনের পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি না করারও আহ্বান এসেছে তার কাছ থেকে। মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে নিকি হ্যালির এ আহ্বান আসে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স। সেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথমবারের মতো রাখাইনে দমন-পীড়নের পেছনে জড়িত সেনা নেতৃত্বকে শাস্তির মুখোমুখি করার কথা বলেছে। কিন্তু বারাক ওবামা প্রশাসনের সময় মিয়ানমারের ওপর থেকে তুলে নেয়া বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা নতুন করে আরোপের যে হুমকি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন দিচ্ছিল, সে প্রসঙ্গ আর টানেননি হ্যালি। বৈঠকে তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ একটি নৃগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে যে নির্মম অভিযান চালাচ্ছে সে কথা বলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বিধা থাকা উচিত নয়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অবশ্যই মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান জানাতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদের অবশ্যই দায়িত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দিতে হবে এবং অপরাধের জন্য বিচারের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করছে এমন যে কোন দেশের উচিত, মিয়ানমার পর্যাপ্ত জবাবদিহিমূলক পদক্ষেপ নেয়ার আগ পর্যন্ত তা বন্ধ রাখা। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে গত ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নতুন করে দমন অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাদের সহিংসতার মুখে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া না মেলায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, মিশর, সেনেগাল ও কাজাখস্তানের অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদ এই বৈঠকে বসে। রোহিঙ্গাদের পোড়া গ্রাম জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস বৈঠকে বলেন, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান সহিংসতা মধ্যাঞ্চলেও বিস্তৃত হতে পারে। ফলে সেখানেও আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। রাখাইনে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে অবিলম্বে ত্রাণ সংস্থাগুলোকে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বর্তমান অবস্থান নিয়ে তিনি উদ্বেগ জানিয়েছেন। এই সঙ্কটের কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোসহ পুরো অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক অসন্তোষের ঝুঁকি দেখা দেয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
×