ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টস জিতে বাজে ফিল্ডিংয়ের মহড়ায় মুশফিকরা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

টস জিতে বাজে ফিল্ডিংয়ের মহড়ায় মুশফিকরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিষ্প্রাণ উইকেট। মন্থর উইকেট। শুরুতে উইকেটে বোলারদের জন্য কিছু নেই। এরপরও টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। শুরুতেই ভুল করলেন। আবার ফিল্ডিং নিয়েছেন, শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলতে। কিন্তু ফিল্ডাররাতো ফিল্ডিং মিসের মহড়ায় মাতলেন। পোচেফস্ট্রুমের সেনওয়াস পার্কে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্টের প্রথমদিনে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং দেখে মনেই হলো, শুরুটা হলো ভুল সিদ্ধান্তে এবং ক্যাচ মিসের মহড়ায়। মুশফিকের সিদ্ধান্ত যে ভুল হয়েছে তা টস জেতার পর ফিল্ডিং নিতেই বোঝা গেছে। মুশফিকের সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। মুশফিক টস জিতে হাসি দিলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত যখন জানালেন, তখন প্লেসিসের মুখে মৃদু হাসি দেখা গেল। দক্ষিণ আফ্রিকা যে চেয়েছিলই আগে ব্যাটিং করতে। টস জিতলে তারা ব্যাটিংই নিত। টস জেতার পর মুশফিক জানিয়েছেন, উইকেট ব্যাটিং সহায়কই। তবে পেসারদের জন্য কিছু থাকলে সেটা শুরুতেই থাকবে। সেই ভাবনা থেকেই বোলিং নেয়া। মুশফিকের সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছেন প্লেসিস। তিনি জানিয়েছেন, এই ব্যাটিং উইকেটে আগে ব্যাট করার সুযোগ তারা লুফে নিতে চান। উইকেট শুষ্ক। উইকেটের উপরিভাগ শক্ত। তবে নিচে একটু নরম উইকেট। তার মানে বল ব্যাটে অনায়াসেই আসবে। ব্যাটসম্যান বুঝে খেললেই রান করতে পারবে। তাই হয়েছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বোঝা গেছে, উইকেটে ব্যাটসম্যানরাই শুরুতেই বাজিমাত করতে পারছেন। ম্যাচের পরের দিকে, মানে তৃতীয়দিন স্পিনাররা উইকেট থেকে টার্ন পেতে পারেন। কিন্তু স্পিনাররা টার্ন পেলে কি হবে, দুই দলেই যে স্পেশালিস্ট স্পিনার সংখ্যা মাত্র একজন করে। বাংলাদেশের মেহেদী হাসান মিরাজ, দক্ষিণ আফ্রিকার কেশব মহারাজ। দুইদলই পেস আর ব্যাটিংনির্ভর একাদশ করেছে। বাংলাদেশ মূলত ৮ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলছে। দক্ষিণ আফ্রিকাও ৮ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলছে। বাংলাদেশ সঙ্গে এক স্পিন অলরাউন্ডার রেখেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা এক সিম বোলিং অলরাউন্ডার রেখেছে। দুই দলই তিন পেসার রেখেছে একাদশে। স্পিন ধরবে তৃতীয়দিনে। স্পিন ধরেই কী লাভ? এক স্পিনার নিয়ে কি দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিপাকে ফেলা যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট যতই শুরুতে নিষ্প্রাণ থাকুক, পেসাররাই শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ম্যাচে ফল নিজেদের পক্ষে নেয়ায় আসল ভূমিকা রেখেছে। মুশফিক তাই শুরুতে ফিল্ডিং নিয়ে ভুলই করেছেন। সেই ভুলটি অবশ্য শুরুতে ফিল্ডাররা ক্যাচ মিস আর রান আউট মিস না করলে হয়তো এতটা ধরা পড়তো না। শুরুতে দুইবার উইকেট নেয়ার সুযোগ এসেছিল। ওপেনার এইডেন মারক্রাম দুইবার বেঁচেছেন। ২৮ রানে তাসকিনের বলে মুস্তাফিজ ক্যাচ মিস করেন। ৩৬ রানে রান আউট থেকে বাঁচেন মারক্রাম। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে খেলা খুবই কঠিন। তা প্রথমদিনেই বোঝা গেল। দুই ওপেনার মারক্রাম ও এলগার মিলে তা বুঝিয়ে দিলেন। বাংলাদেশ দল টেস্ট সিরিজে যে দুর্বল তা আগেই বোঝা গেছে। দলে নেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আবার কাঁধের ব্যথায় শেষ পর্যন্ত প্রথম টেস্টের একাদশে থাকতে পারেননি সৌম্য সরকার। তাই কম্বিনেশন সেট করতেই বিপাকে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। তবে মুশফিকুর রহীমকে বাদ দিয়ে যে লিটন কুমার দাশকে উইকেটকিপারের দায়িত্ব দেয়া হবে তা আগেই বোঝা গেছে। তা হয়েছেও। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দলে থাকায় যে একাদশে থাকবেন, তাও ছিল অনুমিতই। তবে সৌম্য না থাকায় তামিমের সঙ্গে ওপেনিং করার সুযোগ আবারও ইমরুল কায়েসের হাতে ধরা দিয়েছে। ব্যাটিংটা ভাল করা গেছে এখন রক্ষা মিলবে। কিন্তু শুরুতেই যে টস জিতে ফিল্ডিং নেয়ার ভুলের সঙ্গে ফিল্ডিং মিসের মহড়া দেখা গেছে, তাতে না আবার খেসারত দিতে হয়।
×