ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডাকাতিয়ার পাড় দখল করে ইট বালুর ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ডাকাতিয়ার পাড় দখল করে ইট বালুর ব্যবসা

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর, ২৭ সেপ্টেম্বর ॥ শহরের বিআইডব্লিউটিএর মোড় থেকে শুরু করে ট্রাকঘাট হয়ে লন্ডনঘাট পর্যন্ত বিশাল এলাকায় অবৈধভাবে দখল করে ইট, বালু, কংক্রিট ও সিমেন্টের ব্যবসা করে যাচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাদের এ ব্যবসার কারণে ডাকাতিয়া নদী দখলসহ এলাকায় পরিবেশের ভারসাম্য হারাচ্ছে। ধুলাবালির কারণে পথচারী, স্কুল ও কলেজগামী শিশু ও বিভিন্ন বয়সী শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। উড়ন্ত বালুর কারণে ক্ষতি হচ্ছে পাশের ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র। এলাকায় এ ধরনের ব্যবসা করবেন না মর্মে ব্যবসায়ীরা ৩ বছর আগে প্রশাসনের কাছে অঙ্গীকার করে ব্যবসা সরিয়ে নিলেও এখন আবার আগের অবস্থা বিরাজ করছে। সোমবার দুপুরে ওই এলাকা ঘুরে ডাকাতিয়া নদীর পাড় দখল আর ব্যবসায়ীদের স্তূপ করে রাখা ইট, বালু ও কংক্রিটের চিত্র দেখা গেছে। জানা গেছে, ২০১৪ সালে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে এ এলাকাটি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়। এরপর বিআইডব্লিউটিএর প্রকৌশল বিভাগ কাঁটাতারের প্রাচীর করে। সাধারণ মানুষ নদীর পাড়ে বসার জন্য মাচাও তৈরি করা হয়। কিন্তু ১ বছর না যেতেই আবার এলাকাটি বেদখল হয়ে পড়ে। সে থেকে এখন পর্যন্ত চলছে তাদের ব্যবসা। ট্রাকঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম মিয়াজী জানান, এ এলাকায় দুই শ্রেণীর ইট বালুর ব্যবসায়ী রয়েছেন। এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী শুধু সড়কপথে মালামাল বিক্রির ব্যবসা করেন। আবার আরেক শ্রেণী হচ্ছে নদীপথে এনে পাড়ে রেখে চলে যান। যারা নৌপথে মালামাল আনেন তারা বিআইডব্লিউটিএর লোকদের মালামাল উঠানোর জন্য টাকা দেন। কিন্তু নদীর পাড় দখল করে মালামাল মজুদ রাখার জন্য কোন টাকা দেয়া হয় না। চাঁদপুর নদীবন্দরের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী এ এলাকা থেকে পরিবেশ ভারসাম্য নষ্টকারী ব্যবসা স্থানান্তর করার জন্য দাবি তোলেন। এরপর এলাকাবাসী মানববন্ধন ও প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন। সে আলোকে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিআইডব্লিউটিএ ডাকাতিয়া নদীর পাড়সহ অবৈধ দখল উচ্ছেদ করেন। এর আনুমানিক ১ বছরের মধ্যেই পুনরায় আবারও ওই ব্যবসায়ীরা পুনরায় ব্যবসা চালু করেন। চাঁদপুর নদীবন্দরের উপপরিচালক এবং বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, আমি চাঁদপুরে আসার পূর্বে দখলমুক্ত হয়। কিন্তু এখন আবার দখল হলেও আমরা কি করব। যেসব ব্যবসায়ীরা মালামাল উঠাচ্ছেন তাদের কাছ থেকে আমরা একটা টাকা নেই। বন্দর এলাকায় মালামাল উঠাতে না পারলে ব্যবসায়ীরা কোথায় যাবে। অবৈধভাবে ডাকাতিয়া নদীর পাড় কাঁটাতারের প্রাচীর ভেঙ্গে দখল সম্পর্কে কোন কিছু বলতে রাজি নন এ কর্মকর্তা। সিলেটে ঘরবাড়ি হুমকির মুখে স্টাফ রিপোর্টার সিলেট থেকে জানান, ড্রেজারে সুরমা নদীর তীর থেকে বালু উত্তোলনের ফলে কানাইঘাটে নদীতীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির সম্মুখীন। উপজেলাবাসী হাইড্রলিক ডেজারসহ অবৈধভাবে বালু উত্তেলন বন্ধের দাবি জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। জানা যায়, একদল বালুখেকোচক্র দীর্ঘদিন ধরে সুরমা নদীর নিজদলইকান্দিসহ আশপাশ এলাকায় হাইড্রলিক ড্রেজার দিয়ে সুরমা নদীর তীর খনন করে চলেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করছে। এলাকাবাসী এর প্রতিবাদ করলে তারা তাদের নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকে। নিজেদের সরকারদলীয় লোক পরিচয় দিয়ে প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে বিস্তীর্ণ এলাকার হাটবাজার-দোকান সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা ও বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ।
×