ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গুজব ছড়িয়ে চালের দাম বাড়ানোর চেষ্টা চলছে ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

গুজব ছড়িয়ে চালের দাম বাড়ানোর চেষ্টা চলছে ॥ তোফায়েল

সংসদ রিপোর্টার ॥ কারসাজি করে ও মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে বাজারে গুজব ছড়িয়ে চালের দাম বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে কোন ধরনের খাদ্য সঙ্কট নেই। ভারত চাল রফতানি বন্ধ করেছে বলে যে তথ্য পত্রিকায় ছাপানো হয়েছে সেটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়া। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। একই তথ্য জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, তিন বছর ধরে আমরা আউশ ধানের উৎপাদন বাড়াতে প্রণোদনা দিয়ে আসছি। এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত বছরের তুলনায় এবার আউশের উৎপাদন বেড়েছে। ওই দুই মন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সভাপতির আসনে থাকা ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়াও বলেন, দেশে খাদ্যের কোন সঙ্কট নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে মাগরিবের নামাজের পর পয়েন্ট অব অর্ডারে জাতীয় পার্টি দলীয় এমপি নুরুল ইসলাম মিলনের এ সংক্রান্ত কিছু অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে সরকারের প্রভাবশালী এই দুই মন্ত্রী এসব কথা বলেন। নুরুল ইসলাম মিলন ফ্লোর নিয়ে বলেন, ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ বলে পত্রিকায় জেনেছি। আসলে ভারত কি এ ব্যপারে কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছে? এটা বিস্তারিত জানতে চাই। জবাব দিতে উঠে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, নুরুল ইসলাম মিলন আমার অফিসে গিয়েছিলেন। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটা তিনি জানতে চাইতেই পারেন। তাকে নিশ্চিত করতে চাই, আমাদের খাদ্যের কোন অভাব নেই। প্রশ্নটা হলো- আমাদের দুর্ভাগ্য। যে দেশ রক্ত দিয়ে স্বাধীন করেছে, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন সেখানে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। এ সংক্রান্ত পত্রিকায় ছাপানো একটি রিপোর্টের সমালোচনা করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, খবরটি পড়ার পর পরই আমি ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আজ মানবজমিন পত্রিকায় এ নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। আমি ওই পত্রিকার সম্পাদককে ফোন করেছিলাম। ভারত চাল রফতানি বন্ধ করেছে বলে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। তিনি বলেন, কেউ কেউ মুনাফা লাভের কারণে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছে। দিনাজপুরের এমপি আমাকে বলেছেন সেখানে কোন চালের সঙ্কট নেই। প্রত্যেকের ঘরে চাল আছে। মিলের মালিক বা কলের মালিকদের কাছেও চাল আছে। একটি আর্টিফিশিয়ালি (কৃত্রিম) সঙ্কট তৈরির চেষ্টা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছি। শ্রীলঙ্কায় চাল রফতানি করেছি। নেপালে দুর্যোগের সময় চাল পাঠিয়েছি। আকস্মিকভাবে হাওড়সহ কয়েকটি জেলায় বন্যা হওয়ায় এবার উৎপাদন সামান্য কমেছে। যেটুকু উৎপাদন কমেছে সেটুকু আমরা আমদানি করছি। এখানে চালের অভাব কোথায়? তিনি বলেন, কোথাও কোন সাপ্লাই চেন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। আজ বাংলাদেশের গ্রাম শহরে পরিণত হয়েছে। বন্যা হলেও খাদ্যের কোন অভাব নেই। জোরজবরদস্তি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। দেশবাসীকে জানাতে চাই, কমপক্ষে এক কোটি টন চাল আমাদের ঘরে ঘরে আছে। তাই খাদ্যের ঘাটতি হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের মহাপরিচালক আলোক চতুর্বেদির একটা কাগজ দেখিয়ে বলা হয়েছে রফতানি বন্ধ। ওই চিঠি মোবাইল ফোনে ছবি তুলে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে। কারসাজি করে চালের দাম বাড়াতেই এটা করা হয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বেনাপোলে খোঁজ নিয়েছি সেখানে অনেক ট্রাকে চাল আছে। দেশবাসীসহ চালের মিল মালিকদের জানাতে চাই, সকলে যেন দেশপ্রেমিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কয়েক পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনিও এতে হতবাক হয়েছেন। মন্ত্রী জানান, মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে বাজারে সঙ্কট তৈরির চেষ্টা চলছে। রবিবার থেকে ওএমএস-এর মাধ্যমে চাল বিতরণ শুরু করা হবে। তবে খাদ্যের অভাব কোথায়?
×