ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নায়করাজ স্মরণে শিল্পী ঐক্যজোটের আয়োজন

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৪ আগস্ট ২০১৭

নায়করাজ স্মরণে শিল্পী ঐক্যজোটের আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ না ফেরার দেশে চলে গেছেন কিংবদন্তী চলচ্চিত্র অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে। তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন সর্বশ্রেণী পেশার মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় শিল্পী ঐক্যজোটের উদ্যোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নায়করাজ রাজ্জাক স্মরণে এক আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। মগবাজারের শিল্পী ঐক্যজোটের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত ওই স্মরণ সভায় বাংলা চলচ্চিত্রে নায়করাজ রাজ্জাকের অবদান স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন অতিথি ও শিল্পী ঐক্যজোটের নেতারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজল। শিল্পী ঐক্যজোটের সভাপতি অভিনেতা ডিএ তায়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টাম-লীর সদস্য নজরুল কোরাইশী, তহুরুজ্জামান বাবু, সিনিয়র সহসভাপতি মকফুবার রহমান সুইট, আলাউদ্দীন মাজিদ, সহ-সভাপতি সাজু আহমেদ, রেজাউর রহমান রিজভী, সাধারণ সম্পাদক জিএম সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক অপ্সরা সুহি, ক্রীড়া সম্পাদক আসিফ মোঃ নজরুল, দফতর সম্পাদক সুজন রাজা, বিশিষ্ট নৃত্য পরিচালক ইউসুফ খানসহ শিল্পী ঐক্যজোটের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও নেতারা। বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণালি অধ্যায় বিনির্মাণে নায়করাজ রাজ্জাকের বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবন নিয়ে আলোচনা সভা শেষে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। সভাটি সঞ্চালনা করেন শিল্পী ঐক্যজোটের তথ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহজাদ শাদ মান্না। উদীচীর শোক : বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা, প্রবাদ পুরুষ, কোটি মানুষের ভালবাসা অর্জন করা অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক শোক বার্তায় উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন এ শোক জানান। শোকবার্তায় তারা বলেন, কিংবদন্তি এ শিল্পীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক বিশাল শুন্যতার সৃষ্টি হলো। সমাপ্ত হলো এক গৌরবোজ্জ্বল, বৈচিত্র্যপূর্ণ অধ্যায়ের। দীর্ঘ অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রসার ও সমৃদ্ধিতে ধারাবাহিকভাবে অবদান রাখার মাধ্যমে রাজ্জাক নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। পাকিস্তানী আমলে ঊর্দু চলচ্চিত্রের একাধিপত্য কাটিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রকে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে যে ক’জন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের মধ্যে রাজ্জাক অন্যতম ছিলেন বলে মন্তব্য করেন তারা। ১৯৪২ সালে কলকাতার টালিগঞ্জে জন্ম নেয়া আব্দুর রাজ্জাক ’৬০ র দশকের শুরুতে ভাগ্যান্বেষণে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে মঞ্চ নাটকে কাজ করার পর ১৯৬৬ সালে ‘তেরো নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে হাতেখড়ি হয় তাঁর। তবে, ১৯৬৭ সালে কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান নির্মিত ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই নায়ক হিসেবে দর্শকদের হৃদয়ে আসন করে নেন রাজ্জাক। এরপর তিনি একে একে উপহার দেন নীল আকাশের নীচে, জীবন থেকে নেয়া, ওরা এগারো জনসহ সাতশ’রও বেশি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়েও তিনি তাঁর অসামান্য অভিনয় প্রতিভা দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেছেন। জীবনের শেষ পর্যন্তও তিনি চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। প্রসঙ্গত, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার সন্ধ্যা ৬-১৩ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন নায়করাজ রাজ্জাক। মঙ্গলবার সকালে বিএফডিসিতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ওইদিন দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বসাধারণ মানুষ নায়করাজকে শ্রদ্ধা জানায়। বুধবার বনানীর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী নায়করাজের মৃত্যুতে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য নেতারা।
×