ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তুরস্কের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যে আগ্রহী বাংলাদেশ ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৪ আগস্ট ২০১৭

তুরস্কের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যে আগ্রহী বাংলাদেশ ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, তুরস্কের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য এফটিএ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। এ বিষয়ে তুরস্কের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলাপ আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা কিছুদিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বুধবার ঢাকায় হোটেল লে-মেরিডিয়ানে তার্কিস এক্সপোর্টার্স এ্যাসেম্বলি (টিআইএম) এবং এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘তার্কি-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম এ্যান্ড বি-টু-বি মিটিং প্রোগ্রামে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, তুরস্ক ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সদস্য নয়, সে কারণে সেখানে বাংলাদেশ ডিউটি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা পায় না বাংলাদেশ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ তুরস্কে রফতানি করেছে ৬৩ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ২১ কোটি ২৩ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে ৪১ কোটি ৯৩ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, হিমায়িত মাছ, শুকনা খাবার, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া, প্লাস্টিক পণ্য, সিরামিক পণ্য, তৈরি জাহাজ, হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে তুরস্কে। উচ্চ শুল্কহারের কারণে বাংলাদেশ আশানুরূপ পণ্য তুরস্কে রফতানি করতে পারছে না। তুরস্কের সঙ্গে এফটিএ হলে বাংলাদেশ তুরস্কের কাছে এ বাণিজ্য সুবিধা পাবে। তখন তুরস্কে বাংলাদেশের রফতানি অনেক বৃদ্ধি পাবে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সুসম্পর্ক ঐতিহাসিক। সেখানে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। বাংলাদেশে তুরস্ক বিনিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা ও সম্ভাবনা তুলে ধরতে হবে। এতে করে তুরস্কের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। বাংলাদেশে তুরস্ক ডাইরেক্ট ইনভেষ্ট করলে উভয়দেশ লাভবান হবে। এজন্য এফবিসিসিআইকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শূন্য হাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু দুটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সংগ্রাম করেছিলেন। একটি বাঙালী জাতির মুক্তি তথা দেশের স্বাধীনতা, অপরটি হলো দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্থাৎ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বাঙালীদের জন্য স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন, আজ তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি তথা সোনার বাংলা গড়ে তোলার কাজ সফলতার সঙ্গে করে যাচ্ছেন। দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশ। বাংলাদেশ সফলভাবে এমডিজি অর্জন করেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে সফলভাবে কাজ করছে। ২০৪১ সালে হবে উন্নত বাংলাদেশ। এ সময় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে তার্কিস এক্সপোর্টার্স এ্যাসেম্বলি (টিআইএম) এবং এফবিসিসিআইর মধ্যে একটি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। বাণিজ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশের পক্ষে এফবিসিসিআইর প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম এবং টিআইএমের পক্ষে তার্কিস এক্সপোর্টার্স এ্যাসেম্বলির মেম্বার অফ সেক্টর কাউন্সিল বাসরা বাইরাক এমওইউতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা করেন ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ডেভরিম অজতুর্ক। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে সফররত তার্কিস এক্সপোর্টার্স এ্যাসেম্বলির মেম্বার অব সেক্টর কাউন্সিল বাসরা বাইরাক, এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং এফবিসিসিআইর প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম।
×