স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আধুনিক যুগে ইংলিশ ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকার নাম ওয়েন রুনি। তারকা এই ফরোয়ার্ড চলতি বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন শৈশবের ক্লাব এভারটনে। পুরনো ক্লাবে ফিরে এসে নিজের হারানো ফর্মও ফিরে পেয়েছেন মেজাজি এই তারকা। সোমবার রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচে এভারটনের হয়ে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে একটি গোল করেন ৩১ বছর বয়সী এই তারকা।
তাতেই অসাধারণ এক মাইলফলকের মালিক হয়েছেন রুনি। মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ইংল্যান্ডের শীর্ষ লীগে ‘২০০’ গোল করার কীর্তি গড়েছেন। রুনির আগে এ্যালান শিয়েরার এই অভিজাত ক্লাবে প্রবেশ করেন। এই কীর্তির পর শিয়েরার রুনিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। রুনির ২০০ গোলের ১৮৩টিই এসেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে। এভারটনের হয়ে দুই দফায় করেছেন বাকি ১৭ গোল। প্রিমিয়ার লীগে ২৬০ গোল নিয়ে তালিকার শীর্ষে শিয়েরার। শীর্ষ দশে এখনও খেলে যাচ্ছেন এমন খেলোয়াড় রুনি ছাড়া আছেন শুধু জার্মেইন ডিফো (১৫৮ গোল)। ২০০ গোলের ক্লাবে নিকট ভবিষ্যতে কেউ ঢুকতে পারছেন না এটা বলাই যায়। তবে শিয়েরারকে টপকাতে হলে পারফর্মেন্সের ধারটা আরও বাড়াতে হবে রুনির। সেটা তিনি করতে পারবেন কিনা সেটা বোঝা যাবে চলতি মৌসুম শেষেই।
২০০২ সালে এভারটনের হয়েই পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন রুনি। তখন বয়স ছিল মাত্র ১৬। প্রিমিয়ার লীগে এভারটনের হয়ে প্রথম গোলটি করার দিন রুনির বয়স ছিল ১৬ বছর ৩৬০ দিন। গুডিসন পার্কের ক্লাবটির হয়ে ৩১ বছর বয়সে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেলেন ইউনাইটেডের সাবেক তারকা। এমন কীর্তির পরও রুনি নিজেকে মাটিতেই রাখছেন। ম্যাচ শেষে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক বলেন, চমৎকার একটা ব্যাপার। ভাল লাগছে এমন কীর্তি গড়ে। সামনের ম্যাচগুলো বেশ কঠিন। মাটিতে পা রাখলেও এমন কীর্তির পর সাবেক শহর ম্যানচেস্টারের সমর্থকদের খোঁচা দিতে ভোলেননি তিনি। রুনি বলেন, আমার এই কীর্তি শহরের (ম্যানচেস্টার শহর) লাল অংশটা দারুণ উপভোগই করছে মনে হয়। গত মৌসুমে মাঠে নামতেই পারেননি ইউনাইটেডের হয়ে, তাতে জাতীয় দলে জায়গা হারিয়েছিলেন। কিন্তু এই মৌসুমের প্রথম দুই ম্যাচেই গোল করেছেন, রোমেলু লুকাকুর শূন্যতা এখনও বুঝতে পারেনি এভারটন। ফর্ম ধরে রাখতে পারলে আবারও ইংল্যান্ড জাতীয় জার্সি গায়ে তুলতে পারেন রুনি। তার মনের কোণে ঠিকই ঘুরপাক খাচ্ছে জাতীয় দলে ফেরার আকুতি। এই ফর্ম মাল্টা ও সেøাভাকিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের আসন্ন বিশ^কাপ বাছাইপর্বে কাজে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে রুনি বলেন, দেখা যাক কি হয়, এই মুহূর্তে আমি এভারটনের দিকেই মনোযোগী হতে চাই। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আমি সাউথগেটের (ইংল্যান্ড কোচ) সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব। চলমান ইপিএলে প্রথম দুই ম্যাচে দুই গোল ইতোমধ্যেই রুনির সম্ভাবনাকে বেশ উজ্জ্বল করেছে। প্রাক-মৌসুমেও তিনি বেশ ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। প্রতিটি ম্যাচেই তিনি কোচ রোনাল্ড কোম্যানের মূল একাদশে ছিলেন। এ প্রসঙ্গে রুনি বলেন, কোচ একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যে কোন এ্যাটাকিং পজিশনে তিনি আমাকে খেলাতে চান। পুরো ক্যারিয়ারেই আমি এটা করেছি। আমার লক্ষ্য হচ্ছে ম্যাচ খেলা। গত মৌসুমে আমি যথেষ্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পাইনি। আর ম্যাচ না খেললে ফিটনেস ফিরে পাওয়া কষ্টকর। আমার ক্ষতিটা সেখানেই হয়ে গেছে। প্রাক-মৌসুমে আমি বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলেছি। এখন আমি অনেক ভাল অনুভব করছি।
রোন্যাল্ড কোম্যান রুনির এই পারফর্মেন্সে মোটেও অবাক হননি। ঘরের ছেলে ফিরে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন তিনি। এভারটন বস বলেন, রুনির এই পারফর্মেন্স মোটেও অবাক করার কিছু হয়নি। সে এর চেয়েও ভাল করতে পারে। মনে রাখতে হবে সে ইংলিশ ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: