ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার জন্মদিন পালন করলে কোন সংলাপ হবে না ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৬ আগস্ট ২০১৭

১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার জন্মদিন পালন করলে কোন সংলাপ হবে না ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যতদিন শোকাবহ ১৫ আগস্টে তার ভুয়া জন্মদিন পালন করবেন; ততদিন বিএনপির সঙ্গে কোন সংলাপ ও সম্পর্ক উন্নয়ন হবে না। এই ভুয়া জন্মদিবস পালন বন্ধ না করলে তাদের সঙ্গে আমাদের বসার কোন সুযোগই নেই। মঙ্গলবার সকালে ধানম-ির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন করে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের ধারাকে ব্যাহত করছেন। এই জন্মদিন পালন করে তিনি সংলাপের পরিবেশ নষ্ট করছেন। বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা ইচ্ছে করে প্রভোক করছে। তারা গণতন্ত্র চায় না, তারা সংলাপ চায় না। যদি চাইত, তাহলে ভুয়া জন্মদিবস পালন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যা দিবসে তারা কেক কাটার মতো উৎসবে মেতে উঠত না।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই যে বাংলাদেশে অনেকেই বলেন, আমাদের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবীরা, বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয় যে, দুই নেত্রী কেন সংলাপে বসেন না? কিন্তু দুই নেত্রীর সংলাপে বসার কী এখানে কোন কর্মপরিবেশ আছে? কোন ওয়ার্কিং আন্ডারস্টাডিং আছে? কোন এনভায়রমেন্ট, কোন এ্যাটমোসফেয়ার আছে?’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে, তারাও জানে; এই দিনটি বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন নয়। খালেদা জিয়া আগে ভিন্ন ভিন্ন দিবসে জন্মদিবস পালন করেছেন। তার সার্টিফিকেটে, স্কুলের পরীক্ষায়, তার বিয়ের রেজিস্ট্রেশনে, বিদেশ যাওয়ার যে পাসপোর্ট কোনটিতেই কিন্তু ১৫ আগস্ট জন্মদিবস নেই। তাই এখানে কর্মপরিবেশ কিভাবে সৃষ্টি হবে? গণতন্ত্রের যাত্রাপথে এটাও তো একটা বাধা। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাড়ি গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দেখা করেননি। এটা কি গণতন্ত্রের মানসিকতা? তাদের কী সংলাপ করার, গণতন্ত্রকে বিকশিত করার মনমানসিকতা আছে? তিনি বলেন, সেদিন খালেদা জিয়া দেখা করলে সংলাপের ক্ষেত্র তৈরি হতো। অতীতে বিএনপির কর্মকা- ও ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালনের কারণে সংলাপের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। এ সরকারের মেয়াদে তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এই তৎপরতা অত্যন্ত জোরদার। এতে ইতিবাচক অগ্রগতি আছে। তিনি বলেন, এবার আমরা কনফিডেন্সের সঙ্গে বলছি; সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে, আমেরিকা কানাডার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আমরা আশা করছি, তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমাদের উদ্যোগ সফল হবে। উন্নয়নের স্বার্থেই আওয়ামী লীগকে ভোট দিন ॥ মতিয়া চৌধুরী যাত্রাবাড়ী মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। বিশ্বে শেখ হাসিনা এখন উন্নয়নের রোল মডেল। দেশের স্বার্থে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আবারও শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে হবে। গিয়াস উদ্দিন গেসুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেনÑ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ হারুনর রশীদ মুন্না, ৪৮নং ওয়ার্ড কমিশনার আবুল কালাম অনু প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে কৃষিমন্ত্রী দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন। পলাতক খুনীদের অবস্থান শনাক্ত ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর খুনীরা কোন্ কোন্ দেশে আছে তা শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পলাতক খুনীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। শীঘ্রই অন্যতম খুনী নূর চৌধুরীসহ তাদের সবাইকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনা হবে। আশা করি, কূটনৈতিক চেষ্টায় আমরা সফল হব। মঙ্গলবার সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানম-ির ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং আদালতের রায় আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব। আমরা খুঁজে বেড়াচ্ছি খুনীদের কার কোথায় কোন সম্পত্তি আছে সেগুলোকে আমরা বাজেয়াপ্ত করব। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনের চক্রান্তকারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে ॥ হানিফ জাতীয় শোক দিবসে ধানম-িস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করে বলেন, জাতির পিতার হত্যার পেছনের মূল চক্রান্তকারীদের মুখোশ উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন, এটা আজকে জনগণের দাবি। আমরা আজকে শোক দিবসে এটা দাবি করছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে মূল চক্রান্তকারী খুনী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করছি, তার বিচারের মাধ্যমে জনগণের সামনে চক্রান্তকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হবে। এদিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২০নং ওয়ার্ড আয়োজিত দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের এজেন্ট হয়ে বিএনপি-জামায়াত দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই। এখনও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ববাসী যখন বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন করে আশা ব্যক্ত করেছে, ২০২১ সালের মধ্যে যখন বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে, ঠিক তখনি জাতির জনকের কন্যার ওপরে আঘাত আনার চেষ্টা ও চক্রান্ত করা হচ্ছে। তাই আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শপথ নেই, বিএনপি-জামায়াতের অশুভ ষড়যন্ত্রকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হই। প্রেসক্লাবে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জাতীয় প্রেসক্লাব। সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় জাতীয় প্রেসক্লাব সদস্যদের প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু সন্তান অংশ নেয়। এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন সাংবাদিকরা।
×