ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টেকনাফে মাদ্রাসায় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি না টাঙ্গানোর ফতোয়া!

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ১৫ আগস্ট ২০১৭

টেকনাফে মাদ্রাসায় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি না টাঙ্গানোর ফতোয়া!

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ আশ্চর্যজনক হলেও সত্য। সরকারীভাবে দেয়া সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও টেকনাফের বাহারছড়ার জাহাজপুরা মাঠপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টাঙ্গানো হয়নি এ পর্যন্ত। এমনকি শোকের মাসেও ছবি টাঙ্গানো থেকে বিরত রয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। অথচ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ পাঁচজন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতা ওই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য। জানা যায়, সরকারী বিধি-বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাদ্রাসা সুপার মৌলবী ছৈয়দ আহমদ শরিয়তের দোহাই দিয়ে অফিসকক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টাঙ্গাতে নিষেধ করেছেন। এমনকি শোকের মাসেও তিনি অফিসকক্ষে ছবি টাঙ্গাতে দেননি। সোমবার সকালে ওই মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মৌলবী আজিজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এক সভা অফিসকক্ষে অনুষ্ঠিত হলেও সরকারী বিধি লঙ্ঘনের দায়ে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়নি। সভায় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি দেলোয়ার হোছাইন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, ২০১৫ সালের মার্চে ওই মাদ্রাসাসংলগ্ন মসজিদে জুমার খুতবায় তৎকালীন ইমাম মৌলবী ওসমান ফারুক জাতির জনকের ছবি টাঙ্গানোকে মূর্তিপূজার সঙ্গে তুলনা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাজী আশরাফ মিয়ার নাতি উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা দারুস সালাম নিশান কক্সবাজার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (সিআর-২৪৩/১৫-টেকনাফ) দায়ের করলে ওই খতিবকে অপসারণ করে মৌলবী ছৈয়দ আহমদকে খতিব নিয়োগ এবং মাদ্রাসা সুপারের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। পরবর্তীতে তিনিও একই পথ অনুসরণ করে চলছেন। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক কানাঘুষা চলছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেন অনেকে। রহস্যজনকভাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মৌলবী আজিজ উদ্দিন নীরব ভূমিকা পালন করছেন। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুরে মৌলবী ছৈয়দ করিমের বাড়িতে গোপন বৈঠক চলাকালে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে বিজিবি-পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিদেশী নাগরিকসহ চার জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছিল। এ ঘটনায় টেকনাফ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের হাবিলদার মোঃ বাবুল মিয়া বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জঙ্গীবাদে সম্পৃক্ত ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় মৌলবী আজিজ উদ্দিন ও তার সহোদর মৌলবী রফিক উদ্দিনকেও আসামি করা হয়। পরে তারা দলীয় পরিচয়ে এবং টেকনাফ থানার অসৎ পুলিশকে অঢেল টাকায় বশে এনে মামলার চার্জশীট থেকে বাদ পড়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, দেশের অখ-তা, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন, জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে হত্যা, রাষ্ট্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনে ষড়যন্ত্রমূলক গোপন পরিকল্পনা ও আশ্রয়দানে জঙ্গী সংগঠন আরএসও’র সঙ্গে গোপন বৈঠক থেকে আটক ও পলাতক ব্যক্তিরা নিজেদের সরকারদলীয় লোক দাবি করে এখনও গোপনে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
×