ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ কফের সঙ্গে রক্ত, শঙ্কামুক্ত মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৬ আগস্ট ২০১৭

হঠাৎ কফের সঙ্গে রক্ত, শঙ্কামুক্ত মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দল চট্টগ্রামে অনুশীলন করতে গেছে। আর ঢাকায় একাই অনুশীলন করার কথা বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার। কিন্তু তা আর করতে পারলেন কোথায়। সকালে হঠাৎ করেই হাসপাতালে যেতে হলো তাকে। কফের সঙ্গে রক্ত বের হতেই হাসপাতালে ছুটতে হলো। এ নিয়ে অবশ্য বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এটি মাশরাফির প্রায়ই হয়। এলার্জির সমস্যা। যেটি আগে থেকেই আছে। এ নিয়ে ওষুধও খান ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। তাকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়নি। শনিবার সকালে হয়েছে এমন ঘটনা। দুপুরেই হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে গেছেন। ফুসফুসের পরীক্ষা করা হয়। তাতে গুরুতর কোন সমস্যাই ধরা পড়েনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসক ডাক্তার দেবাশীষ চৌধুরীই এমনটি জানালেন। বললেন, ‘এটা এমন কোন বিষয় নয়। এটি তার অনেকদিন থেকেই। গুরুতর কিছুই না। সকালে কফের সঙ্গে একটু রক্ত বের হয়। সতর্কতা থেকেই হাসপাতালমুখী আসেন। এরপর ফুসফুসের একটি পরীক্ষাও করা হয়। তাতে খারাপ কিছু ধরা পড়েনি। আগে থেকেই মাশরাফির এমনটি হয়। এমনটি হলে পরীক্ষা করালেই বোঝা যায় কিছু হয়েছে কিনা। মাশরাফিকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়নি। এটি এলার্জি জাতীয় সমস্যা। ওষুধের মাধ্যমেই ঠিক থাকতে হয়।’ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা চট্টগ্রামে এক সপ্তাহ অনুশীলন করবেন। ১২ আগস্ট ঢাকায় ফিরবেন ক্রিকেটাররা। এরমধ্যে একটি তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবেন। কিন্তু মাশরাফি চট্টগ্রাম পর্বের অনুশীলনে নেই। কারণ চট্টগ্রামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে লাল বলে অনুশীলন করানো হবে। মাশরাফি তো আর দীর্ঘপরিসরের ম্যাচ এ মুহূর্তে খেলতে পারবেন না। তাই লাল বলে অনুশীলন করেও লাভ নেই। আবার তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচও খেলা হবে না। তাই মাশরাফি চট্টগ্রামে যাননি। মাশরাফির মিরপুরেই সাদা বলে অনুশীলন করার কথা ছিল। সেটি একাই। কিন্তু সেই অনুশীলন শুরু করতেই পারলেন না। সকালেই ঘটে গেল এমন ঘটনা। তবে এটি বিশেষ কোন সমস্যা নয়। আজ থেকেই আবার চাইলে মাশরাফি অনুশীলন করতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে অবশ্য মাশরাফি থাকবেন না। খেলা হবে টেস্ট। কোন ওয়ানডে খেলা নেই। মাশরাফি এ মুহূর্তে ফিটনেস ঠিক রাখতে আর বলের গতিবিধি ঠিক রাখতে অনুশীলন করে যাবেন। তাও একাই করতে হবে। কারণ এখন থেকে টেস্টকে সামনে রেখে লাল বলেই অনুশীলন হবে। লাল বলে তো আর মাশরাফির অনুশীলন করে লাভ নেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শেষ হলে দক্ষিণ আফ্রিকায় উড়াল দেবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টটি ২৭ আগস্ট শুরু হবে। এরপর ৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে। এ টেস্ট সিরিজ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকবে বাংলাদেশ দল। শুরুতে টেস্ট সিরিজ হবে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। এরপর ৬ অক্টোবর দ্বিতীয় টেস্টটি শুরু হবে। টেস্ট সিরিজে মাশরাফি থাকবেন না। এরপর যে ১৫, ১৮ ও ২২ অক্টোবর যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে হবে, এ নির্ধারিত ওভারের সিরিজে থাকবেন মাশরাফি। এ সিরিজ শুরুর আগে ১২ অক্টোবর একটি একদিনের প্রস্তুতি ম্যাচও রয়েছে। তার মানে, ১২ অক্টোবরের আগে খেলায় নামছেন না মাশরাফি। তাই অনুশীলনে এত তাড়াহুড়োও নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৬ ও ২৯ অক্টোবর যে যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচ রয়েছে, সেটি শুরুর আগেই আবার মাশরাফি দেশে চলে আসবেন। কারণ টি২০ থেকে তো অবসরই নিয়ে ফেলেছেন মাশরাফি। এ মুহূর্তে তাই মাশরাফির অনুশীলন নিয়ে এত ভাবনা নেই। তাই কফ থেকে রক্ত বের হওয়ার পর সামান্য অসুস্থ বোধ করলেও বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ রয়েছে মাশরাফির। তাছাড়া ফিটনেস ধরে রাখার জন্য তো সেই ১০ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত টানা ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছেই। এখন তো ফিটনেস ধরে রাখার চেয়ে স্কিল নিয়েই বেশি কাজ করতে হবে। প্রধান কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে ক্রিকেটারদের এখন স্কিল নিয়েই কাজ করছেন। মাশরাফি যদি এখন মনে করেন অনুশীলন না করে একটু বিশ্রাম নেবেন, তাও পারবেন। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরার পর অনুশীলন করতে শুরু করবেন, তাও পারবেন। মাশরাফিকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিনি কী করবেন।
×