ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সম্মেলনের ভেতর দিয়ে চাঙ্গা ডিসিরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৩০ জুলাই ২০১৭

সম্মেলনের ভেতর দিয়ে চাঙ্গা ডিসিরা

তপন বিশ্বাস ॥ জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন করে অনুপ্রাণিত হয়েছেন ডিসিরা। এবারের সম্মেলনে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) ৩২১টি প্রস্তাব দিয়েছেন সরকারকে। পাশাপাশি মাঠ প্রশাসনে কাজের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাও তুলে ধরেছেন তারা। তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে রাখার দাবি উঠে এসেছে জোরেশোরে। প্রতিদিনই কোন না কোন অধিবেশনে এই দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে রাষ্ট্রপতি অতি উৎসাহী হয়ে বিব্রতকর কিছু না করার নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারের পক্ষে মাঠ প্রশাসনকে দুর্নীতি মুক্ত রাখার পাশাপাশি ২৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে দেয়ার লক্ষ্যে আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকরা বলছেন, সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা নতুন করে অনুপ্রাণিত হলাম। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ৫২টি মন্ত্রণালয় আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি বাস্তবায়ন করা হলে মাঠ প্রশাসন আরও গতিশীল হবে। মাঠ পর্যায়ে মানুষের কাছে সরকারের অর্জনের সুফল পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। জেলা প্রশাসকরা বলছেন এবার সম্মেলনে অর্জন অনেক। সরকারের দিকনির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করলে দেশের সমৃদ্ধি অনেক বাড়বে। প্রশাসন সেবামুখী হবে। সরকারের ভাল কাজের সুফল দেশবাসী পাবে। এ প্রসঙ্গে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস জনকণ্ঠকে বলেন, সম্মলনে নানা দিকনির্দেশনা পেয়েছি। এতে আমাদের কাজের গতি আরও বাড়বে। জনসেবামূলক কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করব। সরকারের গণমুখী নীতিমালাগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, সরকারের এই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা হলে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। এসডিজি অর্জন অনেকটা সহজ হবে। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সামলা তানজিয়া জনকণ্ঠকে বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা নতুন করে ‘বুস্ট আপ’ হলাম। এতে আমাদের কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ২৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। ৫২টি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাও পেয়েছি। এগুলো এসডিজি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সামাজিক নিরাপত্তা আরও বাড়বে। ডিসি সম্মেলন সম্পর্কে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোখলেসুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন করে আমরা অনুপ্রাণিত হলাম। এতে আমাদের কাজের সাহস যোগাবে এবং গতিও বাড়বে। তিনি বলেন, বর্তমানে ডিসি অফিসের চেহারা বদলে গেছে। ডিজিটালাইজড হওয়ায় মানুষ সহজে সেবা পাচ্ছে। দুর্নীতি বন্ধে আমরা বদ্ধপরিকর। অনেকটা কমিয়ে এনেছি। আশাকরি আরও কমে যাবে। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ড. মাসুমুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, সম্মেলনের অর্জন অনেক। তিনি মনে করেন প্রেশাসকগণ সরকারের দেয়া নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করলে তা ভিশন-২১ বাস্তবায়নে অনেকটা সহায়ক হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে অন্যান্য জেলা প্রশাসকের মতো তিনিও বদ্ধপরিকর। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ২৩ দফা নির্দেশনা মধ্যে রয়েছে- সরকারী সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ যাতে কোনভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। মানুষ যেন শহরমুখী না হয়; শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে ব্রতী হতে হবে। ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্য কমাতে উন্নয়ন কর্মসূচী এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ উপকৃত হয়। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। নির্দেশনায় আরও রয়েছে- জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্পদায়িকতা দূর করে সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতার সঙ্গে এবং কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, গ্রামের মুরুব্বি, নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী, নারী সংগঠক, আনসার-ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ, এনজিও কর্মীসহ সমাজের সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সহজে সুবিচার প্রদান ও আদালতে মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালতগুলোকে কার্যকর করতে হবে। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিকাশে নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে। শিক্ষার সর্বস্তরে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি এবং ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারী ভূমি রক্ষায় আরও সচেষ্ট হতে হবে। ২৩ দফা নির্দেশনা আরও রয়েছে- কৃষি-উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার, বীজ, বিদ্যুত, জ্বালানি ইত্যাদির সরবরাহ নির্বিঘœ করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থাপনাকে জনপ্রিয় করতে উদ্যোগী হতে হবে। ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করে এসব অনৈতিক কর্মকা- কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজির সফল বাস্তবায়নে মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় প্রশমনে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ রক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই সংক্রান্ত আইন ও বিধি বিধানের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা, পণ্য পরিবহন ও আমদানি-রফতানি নির্বিঘœ করা এবং পেশীশক্তি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি সন্ত্রাস নির্মূল করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোক্তা অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির যে কোন অপচেষ্টা কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। নারী উন্নয়ন নীতি সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ এবং নারী ও শিশু পাচার রোধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিনোদন ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে ইতিহাস চেতনা, জ্ঞানস্পৃহা ও বিজ্ঞানমনস্কতা জাগিয়ে তুলতে হবে। কঠোরভাবে মাদক ব্যবসা, মাদক চোরাচালান এবং এর অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে সরকারী ভূমি রক্ষায় সজাগ থাকবে হবে। পার্বত্য জেলাসমূহের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করতে হবে। পর্যটন শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ও ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্পের বিকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। এছাড়াও নিজ নিজ জেলার সমস্যা ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসকদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে উদ্ভাবনী কর্মসূচী প্রণয়ন করতেও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি। ডিসিদের জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কমিটি প্রধানের দায়িত্ব পালন করার কথা উল্লেখ করে মানুষের সেবা সহজ করতে এসব কমিটি যাতে আরও ‘সক্রিয়, গতিশীল ও ফলপ্রসূভাবে’ করে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়ারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। শুধু প্রধানমন্ত্রী নয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে বলেছেন সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রীসহ অনেকেই। দুর্নীতির মধ্যে বিশেষ করে মাঠ প্রশাসনের ভূমি অফিসগুলোতে বেশি দুর্নীতি হয়ে থাকে। এসব দুর্নীতি কমিয়ে এনে মানুষকে সেবা দেয়ার জন্য কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা যদি ভূমি অফিসের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তা হলে দেশের মানুষ হাফ ছেড়ে বাঁচতে পারবে। এ প্রসঙ্গে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোখলেছুর রহমান বলেন, ভূমি অফিসে একটা বড় দুর্নীতি হলো, অধিগ্রহণ করা জমির টাকা কোন কোন ক্ষেত্রে অন্যরা মালিক সেজে টাকা উঠিয়ে নিয়ে আসত। সে ক্ষেত্রে অফিসের কোন কোন স্টাফও জড়িত থাকার অভিযোগ ইতোপূর্বে পাওয়া গিয়েছে। যে কারণে এখন এই টাকা প্রদান করতে এখন স্পটে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে প্রকৃত মালিকের হাতে টাকা তুলে দেয়া হয়। ভূমি অফিসগুলো নামজারি বা ভূমি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দুর্নীতির প্রতিরোধে তিনি বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে সব কিছু ডিজিটালাইজড করছি। পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করতে পারলে দুর্নীতি অনেকটা কমে আসবে। তিনি আরও বলেন, রাতারাতি সব কিছু ঠিক হয় না। পর্যায়ক্রমে সব ঠিক হয়ে যাবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে রাখার দাবি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। সম্মেলনের তিনদিনই কোন না কোন অধিবেশনে তারা এই দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রীকে তারা বলেন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা তাদের হাতে না থাকলে দেশে ভেজাল খাদ্যের পরিমাণ বেড়ে যাবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় রোকন-উদ-দৌলার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে তারা বলেন, একটা সময় দেশে ইলিশ মাছের সংকট দেখা দেয়। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোকন-উদ-দৌলাসহ কয়েক নির্বাহী কর্মকর্তা জাটকা নিধন বন্ধ মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করেছিলেন। এরপর ভেজাল খাদ্যবিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। বিগত দুই বছরের কার্যক্রম সামনে এনে তারা বলেন, আগে মানুষ ফরমালিনের ভয়ে বাজার থেকে আম কিনে খেত না। এখন মানুষ ফরমালিন মুক্ত আমসহ বিভিন্ন ফল বাজার থেকে কিনে খাচ্ছে। এছাড়া নির্বাহী কর্মকর্তাদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা না থাকলে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ সাধারণ মানুষও মানবেন না। এতে তাদের কিছু করারও থাকবে না। ব্যাপক বৃষ্টিপাতের জন্য আবার বন্যা আসতে পারে। সে লক্ষ্যে বন্যা মোকাবেলায় সকল জেলা প্রশাসকদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ পেয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। যে কোন উপায়ে ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে সরকার বদ্ধপরিকর। এ বার্তাও পৌঁছে দেয়া হয়েছে জেলা কর্তাদের। সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব আদায়ে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, দেশ পরিচালনায় বড় শক্তি হলো রাজস্ব। সকল উন্নয়নের মূল হলো এই রাজস্ব। এটি উন্নয়নের ছাবিকাঠি। জেলা বাজেট নির্মাণে ডিসিদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, উন্নয়নে কথা মাথায় রেখে জেলা বাজেট নির্মাণ করবেন এবং তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবেন। সরকার ও প্রশাসনের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তোলা, নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক ও সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়াসহ ডিসিদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রীরা। এছাড়া মন্ত্রীরা বলেন, সপ্তম পঞ্চম-বার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি ২০২১ সালে রফতানি হবে ৬০ বিলিয়ন ডলার। এই লক্ষ্যে পৌঁছতে আমাদের পণ্যের বহুমুখী করার সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করেছি। একটা ঘোষণা আছে এক জেলা এক পণ্য। ১৪টি পণ্য নির্ধারিত হয়েছে, সেই পণ্যগুলো যেন রফতানি করতে পারি সে ব্যাপারে ডিসিরা বাস্তব পদক্ষেপ নেবেন। ওইসব পণ্যকে আমরা ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়া হবে বলে মন্ত্রীরা জানান। আগামী দিনগুলোতে যাতে দেশের আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে সব কিছুই স্বাভাবিক থাকে সেজন্য জেলার প্রধান হিসেবে জেলা প্রশাসকরা সকলের সঙ্গে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন এমন প্রত্যাশা রেখে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ডিসিরা নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। তারা যেসব প্রস্তাব করেছেন সেগুলো আমরা সমাধান করার চেষ্টা করব। দেশের অগ্রগতি ধরে রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
×