ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘ব্ল্যাক আমার প্রিয় রং’

প্রকাশিত: ০৪:০১, ২৮ জুলাই ২০১৭

‘ব্ল্যাক আমার প্রিয় রং’

মাবরুর রশীদ বান্না। স্বপ্ন দেখেন স্বপ্ন দেখান আরও অনেক তরুণকে। ভাবেন নিজের চারপাশ নিয়ে, বন্দী করেন ক্যামেরার রোলে। ঘুরতে ভালবাসেন, ভালবাসেন নিজের ভাবনাকে সাধারণের সামনে তুলে ধরতে। তারুণ্য নিয়ে ভাবনা উঠে এসেছে কাজের মধ্যে। ‘নাইন এ্যান্ড হাফ’, ‘হাউস ফোরটি ফোর’, ‘লাল রঙ্গা স্বপ্ন’, ‘ব্রেকআপ’, ‘একটি তিন মাসের গল্প’, ‘শত ডানার প্রজাপতি’– এ রকম অসংখ্য নাটকের সৃষ্টি তারই হাতে। নাট্য নির্মাতা পরিচয়ের পাশাপাশি যিনি একজন স্ক্রিপ্টরাইটার এবং অভিনেতা। ফ্যাশন নিয়ে রয়েছে তার নিজস্ব ভাবনা। এই মানুষটির ফ্যাশন নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন। সঙ্গে ছিলেন– মাহির দীপন প্রতিটি মানুষই ভিন্ন সত্তার অধিকারী, কোন কিছু নিয়ে প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু ভাবনা থাকে। ফ্যাশন নিয়ে আপনারও তেমন কিছু একান্ত ভাবনা থাকাটা স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে ফ্যাশনকে আপনি কিভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন? নিজের জায়গা থেকে আমি মনে করি ফ্যাশন ইজ স্ট্রেন্থ। আমার মনে হয় ফ্যাশন হলো ব্যক্তি হিসেবে আমাকে যেটা কমফোর্ট দেয়। সেটা পোশাকের ক্ষেত্রে হতে পারে যেহেতু ফ্যাশন বলতে সবার আগে পোশাকটাই আসে। তাছাড়া আমি যে চশমা বা ঘড়িটা পরছি, সেটাও আমার ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটায়। ফ্যাশন আমার কাছে সেটাই যা আমি প্রকাশ করি এবং যা আমার সঙ্গে কম্ফোরটেবলি হোল্ড করবে। একজন নাট্যনির্মাতা এবং অভিনেতা আপনি- অসম্ভব কর্মব্যস্ত মানুষ। তবে কর্মব্যস্ততার মাঝেও ফ্যাশনকে নিশ্চয়ই গুরুত্ব দেয়া হয়। কর্মক্ষেত্রে আপনার পছন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্যের পোশাক কি? এক কথায় বলতে গেলে সবসময় যেটা পরি, টি-শার্ট। সাধারণত একরঙা টি-শার্টগুলো পরা হয়, এর মধ্যে পছন্দের রং ব্ল্যাক। তবে অবশ্যই ঋতুর উপর নির্ভর করে আমার পোশাক হয়, যেমন শীতকালে একরকম ড্রেস পরি, বর্ষাকালে একরকম পরি, গরমকালে একরকম পরি। মোটকথা যখন যে পোশাকটা আমার কমফোর্ট জোনে থাকে সেটা পরি, এমনকি গরমকালে থ্রি কোয়ার্টার পরেও আমি শূটিং করি। অর্থাৎ এটা নির্ভর করে, কখন কোন পোশাকে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব। প্রিয় পোশাক? এক্ষেত্রে অবশ্যই ব্ল্যাক টি-শার্ট। প্রিয় রং? রঙের কথা আসলে প্রথমেই আসবে ব্ল্যাক। এছাড়া হোয়াইট কালারও পছন্দের তালিকায় থাকবে। প্রিয় ব্র্যান্ড? স্পেসিফিকালি বলতে গেলে এডিডাস। আর দেশীয়-এর মধ্যে এক্সট্যাসি ভাল লাগে। পছন্দের ফ্যাশন অনুষঙ্গ? প্রিয় ফ্যাশন অনুষঙ্গের তালিকার প্রথমে থাকবে আমার ব্যাকপ্যাক। এছাড়া আমার চশমা, ঘড়ি আর গ্রিন, ইয়োলো আর ব্লু কালারের প্রিয় রিস্ট ব্র্যান্ড। তবে সত্যি বলতে চশমা ছাড়া আমি অচল তাই এটাকে আমার ফ্যাশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই ব্যবহার করছি। এই ফ্যাশন অনুষঙ্গগুলো আপনার ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে কতটা সফল? সত্যি বলতে এত গভীরভাবে তো কখনও ভেবে দেখা হয়নি। তবে আমি যেটা চেষ্টা করি সবসময় আমার পোশাক বা অনুষঙ্গে ডিসেন্সি বজায় রাখতে, আমার ফ্যাশন অনুষঙ্গে এমন কিছু রাখতে চাই না যাতে মনে হয় আমি উগ্র। হয়ত আমি রক ব্যান্ড পছন্দ করি, তাই বলে আমার বেশভূষা নিশ্চয়ই রকস্টারদের মতো হবে না। আবার আমি ঘড়ি ডান হাতে পরি, ছোটবেলা থেকে খুব সচেতনভাবে যেটা হয়েছে যেখানে মানুষ সাধারণত বাম হাতে ঘড়ি পরে। তাছাড়া বয়সও একটা ফ্যাক্টর, বয়সের সঙ্গে মানুষের রুচিবোধ চেঞ্জ হয় বলে আমি মনে করি। আপনি তো একজন অভিনেতাও। ব্যক্তি বান্নাহ যখন নাটকের চরিত্রে প্রবেশ করে, তখন নিজের ফ্যাশনকে প্রাধান্য দেয়ার সুযোগ কতটুকু? সাধারণত অভিনেতার তকমাটা আমি নিতে চাই না। তবে যে কয়টা চরিত্রতেই কাজ করেছি, আমি চেষ্টা করেছি চরিত্রের সঙ্গে যথাসম্ভব মিল রেখেই আমার কস্টিউম রাখতে, যেমন আমি গ্রাম্য কোন চরিত্রে অভিনয় করলে নিশ্চয়ই টি-শার্ট আর থ্রি কোয়ার্টারে তা করব না। অর্থাৎ এই জায়গাটায় আমার পোশাক সম্পূর্ণ নির্ভর করে যে নাটকে আমি কোন ক্যারেক্টার প্লে করছি। যদি কখনও কস্টিউম আমার কমফোর্ট জোনে নাও থাকে, আমি চেষ্টা করি চরিত্রের প্রয়োজনে সেটা মানিয়ে নেয়ার। একজন নাট্যনির্মাতা এবং প্রাণবন্ত তরুণ হিসেবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই আপনাকে অনুসরণ করে থাকে। তাদের জন্য, যে তাদের ফ্যাশন ভাবনাটা কেমন হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন? আমি আসলে সিম্পল মানুষ তো, সিম্পল থাকতেই পছন্দ করি। আমার মনে হয় সিমপ্লিসিটি ইজ দ্যা বেস্ট স্টাইল। সবাই যদি শো অফ টাকে প্রায়োরিটি না দিয়ে, সিমপ্লিসিটি মেইন্টেইন করে সেটা ভাল হয়, মানুষের সঙ্গে মেশা যায় সহজে। আমি লক্ষ্য করেছি যে, একজন মানুষ হয়ত শো অফ করছে, তার সঙ্গে অন্যরা ঠিকমতো মিশতে পারছে না, পেছনে হয়ত কথা বলছে। দরকার কি? একটু সিম্পল থাকি। নিজের কাছে যেটা ভাল লাগে সেটাই করুন, সেটাই পরুন।
×