ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চিকুনগুনিয়ায় ব্যথা-বেদনা

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৫ জুলাই ২০১৭

চিকুনগুনিয়ায় ব্যথা-বেদনা

চিকুনগুনিয়া একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা এডিস মশার (এডিস এজিপ্টি ও এডিস এ্যালব্টিকাস) কামড়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। সম্প্রতি এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ঢাকাসহ ঢাকার আশপাশের এলাকায় এর প্রার্দুভাব বেশি। এই রোগের প্রধান উপসর্গ হলো প্রচ- জ্বর যা ১০৪-১০৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে পাশাপাশি প্রচ- ব্যথা যা ব্যক্তিবিশেষে ভিন্ন ভিন্ন কারও কারও ক্ষেত্রে সারা শরীর ব্যথা এবং কারও বা হাত ও পায়ের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা। এই জ্বরের তীব্রতা তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে কমে গেলেও ব্যথা বেদনায় কষ্ট পাচ্ছেন আক্রান্ত ব্যক্তিরা। এই ব্যথা-বেদনা দেড় থেকে দুই মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিরা জ্বর পরবর্তী আথ্রাইটিস বা জয়েন্টের প্রদাহজনিত ব্যথায় ভুগছেন। একই সঙ্গে হাত ও পায়ের অনেক জয়েন্টে ব্যথা হওয়ায় এই কন্ডিশনকে মেডিকেল পরিভাষায় পলিআথ্রাইটিস বলা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীর হাত ও পায়ের আক্রান্ত জয়েন্টগুলো ফুলে যায়, নাড়াতে কষ্ট হয়, সকালে ঘুম থেকে উঠতে অনেক কষ্ট হয়, এই ধরনের উপসর্গ আরও কয়েক ধরনের আথ্রাইটিসে দেখা যায় যেমন- রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস, জুভেনাইল আথ্রাইটিস, অস্টিওআথ্রাইটিস ইত্যাদি তবে এক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগের ইতিহাস, ক্লিনিক্যাল এক্সামিনেশন, প্রয়োজনীয় প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে থাকে। করণীয় আক্রান্ত জয়েন্টে বরফ দিয়ে সেক দিতে পারেন, তাওয়েল বা সুতি কাপড়ের মধ্যে বরফ নিয়ে আক্রান্ত স্থানে ৫-১০ মিনিট দিনে ২-৩ বার ঠা-া সেক দিতে পারেন, কারণ এতে প্রদাহ কমে ব্যথা কমে যাবে তবে খেয়াল রাখতে হবে সরাসরি বরফ যেন চামড়ায় লাগানো না হয় সেক্ষেত্রে ফ্রস্ট বাইট বা আইস বার্ণ হতে পারে। যেহেতু জ্বরের কারণে শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দেখা দেয় তাই প্রচুর পরিমাণে ওরস্যালাইন, ডাবের পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। এই ধরনের জ্বরে যেহেতু এসপিরিন বা ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়, তাই ব্যথা কমানোর জন্য ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা একটি নিরাপদ ও কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি। এক্ষেত্রে একজন বিশেষঙ্গ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক রোগীর বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন রকম চিকিৎসা নির্ধারণ করে থাকেন যেমন-ইলেকট্রোথেরাপি, ওয়াক্স বাথ থেরাপি ইত্যাদি। আপনার বাসার আশপাশ পরিষ্কার রাখুন মশা যেন বংশবিস্তার করতে না পারে। রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টানিয়ে ঘুমান চিকুনগুনিয়াবাহী মশার কামড় থেকে মুক্ত থাকুন। ডাঃ এম ইয়াছিন আলী চেয়ারম্যান ও চীফ কনসালটেন্ট ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানম-ি, ঢাকা। মোবা : ০১৭৮৭-১০৬৭০২
×