ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

আইডি দেখাতে না পারলে বাদ

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে কৌশলী ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৮ জুলাই ২০১৭

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে কৌশলী ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভোটার তালিকা হালনাগাদে রোহিঙ্গা অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে কৌশলী ব্যবস্থা নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় যারা বসবাস করছেন তাদের ভোটার হতে পিতা, মাতাসহ আত্মীয় স্বজনের আইডি কার্ড দেখাতে হবে। কোন আইডি কার্ড দেখাতে না পারলে তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না। বিদেশী অথবা রোহিঙ্গা হিসেবে বিবেচিত হবেন। সোমবার নির্বাচন কমিশনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ সংক্রান্ত কমিটির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট এলাকার ৩০ উপজেলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমে ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে বিশেষ এলাকার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের ওইসব এলাকায় ভোটার হতে নাগরিকদের অধিকতর তথ্য দাখিল করতে হবে বলে উল্লেখ করেন। ইসির রোডম্যাপ অনুসারে আগামী ২৫ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ। হালনাগাদের কাজ চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ হবে এবং যেসব নাগরিক ভোটার হওয়ার যোগ্য কেবল তাদেরই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ধাপে ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম এমন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের পর এসব নাগরিকের নিবন্ধনের কাজ চলবে ২০ আগস্ট থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। ভোটার তালিকায় হালনাগাদের সময় রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার হতে না পারে সে জন্য ইসির পক্ষ থেকে প্রতিবারই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়ে থাকে। তারপরও তথ্য গোপন করে অনেক রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় নাম তোলেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশী নাগারিক প্রমাণ করে বিদেশে গিয়ে নানা ধরনের অপরাধে জড়িত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে। এ কারণে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাকে বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবার বিশেষ এলাকার পরিধি আর বাড়ানো হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব। ইসি সচিব বলেন, রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়ার বিষয়ে বিশেষ এলাকা চিহ্নিত করা আছে। বিশেষ এলাকা এর আগে ২০ উপজেলা ছিল। এবার আরও ১০ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষ এলাকায় কোন বিদেশী যাতে ভোটার হতে না পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে কমিটি। কিভাবে পদক্ষেপ নেয়া হবে তারও নির্দেশনা দেয়া আছে। এক্ষেত্রে এসব এলাকায় ভোটার উপযোগীদের বাবা-মার এনআইডি, ফুফু-চাচার এনআইডি, প্রয়োজনে অন্য আত্মীয়ের এনআইডিও প্রমাণ হিসেবে দিতে হবে। এছাড়া আরও অন্য পদক্ষেপের মাধ্যমে বিশেষ কমিটি বিদেশীদের বা রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করবে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সাতটি কমিটি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি, বিভাগীয় কমিটি, জেলা, উপজেলা, বিশেষ এলাকার জন্য আদালা কমিটি, সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য কমিটি, ক্যান্টনমেন্ট এলাকার জন্য কমিটি আছে। এবারের ভোটার তালিকায় বাদ পড়া ৩৫ লাখ ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। সারা বছরই ভোটার হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া ভোটার তালিকায় ভুল থাকলে যে কেউ সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সংযোজন-বিয়োজন করতে পারবেন। কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে যেকোন সময় উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসে আবেদন করতে পারবেন। নারী ভোটার বাড়ানোর বিষয়ে বলেন, এ জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মহিলা বিষয়ক মন্ত্রী এবং সচিবের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। নারী নেতৃত্বে যারা আছেন, বিশেষ করে নারী জনপ্রতিনিধি ও এনজিও কর্মীদের কাছে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। সভায় সব বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ সদর দফতরের প্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ইসির উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×