ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৭০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নিয়ে আশঙ্কা

পটুয়াখালীতে আতঙ্ক কাটছে না

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৮ জুলাই ২০১৭

পটুয়াখালীতে আতঙ্ক কাটছে না

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী, ৭ জুলাই ॥ দশমিনা উপজেলার ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে তিনটি পোল্ডারের ৭০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। ফলে এ ৭০ কিলো মিটারে বসবাসরত এলাকাবাসীর দিন কাটছে চরম আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায়। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও চলতি বর্ষা মৌসুমে জোয়ারে এ বাঁধের অধিকাংশ ভেঙ্গে গেছে। ২০০৭ সালে সিডরের আঘাতে বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে বুড়াগৌরাঙ্গ নদের তীরবর্তী আউলিয়াপুর, দক্ষিণ আউলিয়াপুর, জৌতা, গুলি, খলিশাখালীসহ আশপাশের গ্রামগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে ব্যাপক। এ কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই উপকূলের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটায়। যদিও বহু বছর পর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তা শুধু দশমিনা ও রণগোপালদি ইউনিয়নের উপকূলে চলছে। তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদের তীর ঘেঁষে প্রায় ১৭ কিলোমিটার এ বাঁধের পৃথক স্থানে সাড়ে চার কিলোমিটার অংশে ব্লক বসানো হচ্ছে। কিন্তু পুরো বাঁধ ব্লক বসিয়ে টেকসই করা হচ্ছে না। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন দুর্যোগে বাঁধ আবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আতঙ্ক লোকজনের মধ্যে থাকছেই। বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন আকন বলেন, তার ইউনিয়নের পোলডারের ৫৫/২এফ সাড়ে ৬ কিলোমিটার মধ্যে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাশর্^বর্তী বাউফল উপজেলার শৌলা গ্রামের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে দশমিনার হাজিরহাট, রনগোপালদি ও আলীপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর পর্যন্ত একই বেড়িবাঁধের তিন পোলডারে বিভক্ত। এ তিন পোলডারের ইতোমধ্যে ৯ কিলোমিটারের বেশি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘ইমারজেন্সি সাইক্লোন রিস্টেশন ও রিহ্যাবিলিটেশন প্রজেক্ট-২০০৭’- এর আওতায় দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া নদী ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদের তীরবর্তী বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হয়। ২০১৫ সালে দরপত্রের মাধ্যমে কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমবিইএল এবং ভারতীয় এমবিএল প্রতিষ্ঠান। পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী কে এম হুদা বলেন, এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে দশমিনার হাজিরহাট থেকে রণগোপালদি ইউনিয়নের দক্ষিণ রণগোপালদি পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৯৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত। এর মধ্যে ৬ দশমিক ৩৬৫ কিলোমিটার সম্পূর্ণ নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বাঁধের দশমিনার তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী সৈয়দ জাফর গ্রাম, আউলিয়াপুর ও রণগোপালদির চরঘূর্ণি অংশের চার দশমিক ৫৫০ কিলোমিটার এলাকায় ব্লক বসিয়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ রয়েছে। এছাড়া এ প্রকল্পে পানি নিষ্কাশনের জন্য নয়টি নতুন স্লুইসগেট নির্মাণ ও পুরোনো বাঁধটি মেরামত করা হচ্ছে। আগামী জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প সমন্বয়কারী মনিরুজ্জামান বলেন, ব্লক নির্মাণসহ বাঁধে বসানোর কাজ পুরোদমে চলছে। জুন মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান বলেন, প্রকল্প অনুযায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ হচ্ছে এবং নির্দিষ্ট পয়েন্টে ব্লক বসিয়ে টেকসই করা হচ্ছে। তবে বেড়িবাঁধের সম্পূর্ণ অংশে ব্লক বসানো হলে ভালো হতো।
×