ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে আপত্তি তুলে নিল ইউনেস্কো

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৭ জুলাই ২০১৭

রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে আপত্তি তুলে নিল ইউনেস্কো

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে আপত্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। সংস্থাটি আগে রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও আগের সেই অবস্থান প্রত্যাহার করে নিয়েছে। একই সঙ্গে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যে থাকা প্রাকৃতিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা থেকে সুন্দরবনকে বাদ দেয়ারও ঘোষণা করে ইউনেস্কো। ইউনেস্কোর ৪১তম অধিবেশনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, পোল্যান্ডের ক্রাকোতে ইউনেস্কোর ৪১তম অধিবেশনে সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী দেশের অবস্থান তুলে ধরেন। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সূত্র জানায়, গত বছর মার্চে ইউনেস্কোর তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশ সফর করেন। সফর শেষে সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত প্রকল্প বাতিল করার জন্য বাংলাদেশের কাছে সুপারিশ করে ইউনেস্কো। এই বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মিত হলে তাতে সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি হবে বলেও সুপারিশে উল্লেখ করে প্রকল্পটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সুপারিশ করে সংস্থাটি। ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় তারা অন্তর্ভুক্ত করবে কি-না সেটাও তুলে ধরা হয়েছিল ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে। তবে ২০১৭ সালের বিশ্ব ঐতিহ্য কমিশনের সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সংস্থাটি জানিয়েছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইউনেস্কোর কমিশনের সভা পোল্যান্ডে গত ৪ জুলাই থেকে শুরু হয়। এই সভা এখনো চলছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের বিষয়টি তুলে ধরেন। এছাড়া সুন্দরবন রক্ষায় ইউনেস্কো যে সুপারিশ করেছিল, তা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার কী কী করেছে, সেটাও তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপে ইউনেস্কো সন্তোষ প্রকাশ করে। এরপর রামপালের বিদ্যুত কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে ইউনেস্কো তার আগের অবস্থান প্রত্যাহার করে নেয়। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যে থাকা প্রাকৃতিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা থেকে সুন্দরবনকে বাদ দেয়ারও ঘোষণা করে ইউনেস্কো। ইউনেস্কোর সভায় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত ও জ্বালানি উপদেষ্টা ছাড়াও বিদ্যুত সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাইসুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×