ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বৈশ্বিক কর্মপন্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন ॥ যুক্তরাষ্ট্র

বড় হুমকি উত্তর কোরিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৬ জুলাই ২০১৭

বড় হুমকি উত্তর কোরিয়া

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে বৈশ্বিক কর্মপন্থা গ্রহণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। কমিউনিস্ট শাসিত দেশটি মঙ্গলবার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর তিনি এ মন্তব্য করেছেন। এদিকে উত্তর কোরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরী অধিবেশনে বসার কথা রয়েছে। এএফপি, বিবিসি ও ইন্ডেপেন্ডেন্ট। উত্তর কোরিয়া আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) সফলভাবে পরীক্ষা করার পর এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন বলেছেন, উত্তর কোরিয়া এখন ‘বৈশ্বিক হুমকি’। তাই দেশটির প্রতি এখন ‘বৈশ্বিক কর্মপন্থা’ গ্রহণ করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের ওপর এখন চাপ বাড়াতে ওয়াশিংটন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই একটি পরমাণু শক্তিধর উত্তর কোরিয়া মেনে নেবে না। টিলারসন বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার অতিথি শ্রমিকদের কোন দেশে কাজ করতে দেয়া, দেশটিকে কোন ধরনের অর্থনৈতিক বা সামরিক সহযোগিতা করা অথবা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে না পারার অর্থ হলো দেশটির শাসকদের হাত শক্তিশালী করা।’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডানা হোয়াইট বলেছেন, ‘নিজেদের এবং আমাদের মিত্রদের প্রতিরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি। উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবেলায় আমাদের সরঞ্জামাদিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ধরনের হুমকি মোকাবেলায় রিপাবলিক অব কোরিয়া এবং জাপানের মতো মিত্রদের রক্ষা করতে আমরা পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ এর পরপরই সিউল পিয়ংইয়ংয়ের শাসকদের ‘ধ্বংস’ করার হুমকি দেয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বিবৃতিকে আইসিবিএম পরীক্ষায় সফল হওয়ার যে দাবি উত্তর কোরিয়া করেছে তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। পিয়ংইয়ং মঙ্গলবার যে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। এদিকে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জবাবে বুধবার ভোরে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। চীন ও রাশিয়ার অনুরোধ উপেক্ষা করেই দেশ দুটি এ পরীক্ষা চালায়। দক্ষিণ কোরিয়ার নয়া প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের দফতর থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট মুন বলেছেন উত্তর কোরিয়ার উস্কানিমূলক কর্মকা-ের জবাবে একটি বিবৃতি দেয়াই যে যথেষ্ট নয় তা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিতে আমরা আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুতির কথা উত্তর কোরিয়াকে জানিয়েছে।’ দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী উত্তর কোরিয়াকে পৃথকভাবে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। অতি সম্প্রতি মুন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন। ওয়াশিংটনে মুনকে নিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে তাদের কৌশলগত ধৈর্য ধারণের দিন শেষ হয়ে এসেছে। পিয়ংইয়ংয়ের বিষয়ে তাদের এ নীতি ব্যর্থ হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার আইসিবিএম পরীক্ষা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়া ও চীন ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে। মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও তার চীনা প্রতিপক্ষ শি জিনপিংয়ের মধ্যকার বৈঠকের পরপরই ওই বিবৃতিটি দেয়া হয়। মঙ্গলবারের পরীক্ষাটি সফল হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরমাণু অস্ত্র বহনক্ষম দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি আয়ত্ত করা এখনও উত্তর কোরিয়ার নাগালের বাইরে রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরী অধিবেশন ডাকে। সংস্থার মহাসচিব অন্তোনিয় গুতারেস ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কঠোর সমালোচনা করেছেন। আমেরিকার জাতীয় দিবসে উত্তর কোরিয়া এ পরীক্ষা চালায়। এদিকে পিয়ংইয়ং যেন এ ধরনের কাজ আর না করে সে লক্ষ্যে প্রভাব খাটানোর জন্য ট্রাম্প চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেছেন, আইসিবিএম সফলভাবে পরীক্ষার মাধ্যমে তার দেশ কৌশলগত অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করল। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, প্রতি বৈরী নীতি ত্যাগ না করা পর্যন্ত দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়া কখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবে না। এই ক্ষেপণাস্ত্র ‘আমেরিকার জানোয়ারদের’ প্রতি একটি ‘উপহার’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। উনের বক্তব্য উদ্ধৃত করে উত্তর কোরিয়ার বার্তাসংস্থা কেসিএনএ এ কথা জানিয়েছে।
×