ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

চলছে ৬৪ জেলায় চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১ জুলাই ২০১৭

চলছে ৬৪ জেলায় চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি

মনোয়ার হোসেন ॥ চলচ্চিত্র নিয়ে চমৎকার এক আয়োজন। সারা দেশের দর্শক সুযোগ পাবেন ছবি দেখার। সেলুলয়েডে উঠে আসবে বিচিত্র সব বিষয়। সেখানে মিলবে সমাজ কিংবা জীবনঘনিষ্ঠ গল্প কিংবা বাস্তবতার সঙ্গে কল্পনার মিশেল দেয়া কোন কাহিনী। একযোগে ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে পূণদৈর্ঘ্য কাহিনীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৭। সিনেমানির্ভর এ আয়োজনের লক্ষ্য সৃজনশীলতার মাধ্যমে জাতির মাঝে মানবিক মূল্যবোধ গড়া ও দেশপ্রেম জাগ্রত করা। সবার জন্য চলচ্চিত্র, সবার জন্য শিল্প-সংস্কৃতি সেøাগানে উৎসবটির আয়োজক বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এখন চলছে আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য পক্ষকালব্যাপী উৎসবটি সফল করার প্রস্তুতি। নতুন নির্মাতারা সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগে জমা দিচ্ছেন তাদের সমকালীন চলচ্চিত্র। অন্যদিকে বাছাই কমিটির সদস্যরা ব্যস্ত রয়েছেন উৎসবের অন্য বিভাগের চলচ্চিত্র নির্বাচনে। এসব বিভাগে দেখানো হবে দেশে নির্মিত ধ্রুপদী চলচ্চিত্র, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বা পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ও নারীর নির্মাতাদের নির্মিত ছবি। উৎসব প্রসঙ্গে একাডেমির চলচ্চিত্র ও নাট্যকলা বিভাগের সহকারী পরিচালক মাসুদ সুমন জনকণ্ঠকে বলেন, আগামী অক্টোবরে দ্বিতীয়বারের মতো দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব। চলছে উৎসব সফল করার প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে সমকালীন বিভাগে প্রদর্শনের জন্য আহ্বানকৃত চলচ্চিত্র জমা দেয়া শুরু করেছেন নির্মাতারা। এই বিভাগে নির্মাতারা জমা দিচ্ছেন ২০১৫ ও ২০১৬ সালে নির্মিত ছবিগুলো। এ বিভাগে আগে কোথাও প্রদর্শিত হয়নি, শুধু সেসব চলচ্চিত্র জমা নেয়া হচ্ছে। জমাকৃত চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে প্রদর্শনীর জন্য ছবি নির্বাচন করবেন বাছাই কমিটির সদস্যরা। আর এই ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বিশেষ জুরি পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুরস্কারের জন্য চলচ্চিত্র বা নির্মাতা নির্বাচনের জন্য করা হয়েছে জুরি কমিটি। উৎসব আয়োজনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশীয় চলচ্চিত্রের উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করছে শিল্পকলা একাডেমি। একটি সৃজনশীল ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন জাতি গঠন এবং সর্বসাধারণের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে চলচ্চিত্রের ভূমিকা অপরিসীম। আগামী অক্টোবর মাসে দেশব্যাপী একযোগে ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে পনের দিনের এই চলচ্চিত্র উৎসব। প্রতিটি জেলার শিল্পকলা একাডেমিতে ছবি দেখার সুযোগ মিলবে স্ব স্ব জেলার দর্শনার্থীদের। বিষয়ভিত্তিক পাঁচটি বিভাগে সাজানো হয়েছে উৎসব। এগুলো হলোÑ বাংলাদেশ ধ্রুপদী চলচ্চিত্র, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বা পুরস্কার চলচ্চিত্র, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র, নারী নির্মাতাদের চলচ্চিত্র ও সমকালীন দেশীয় চলচ্চিত্র। উৎসবে ছবি দেখানোর পাশাপাশি ঢাকাসহ সকল বিভাগের যে কোন একটি জেলায় অনুষ্ঠিত হবে নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক সেমিনার। সর্বসাধারণের ছবি দেখার আয়োজনটিতে অংশগ্রহণকারী নির্মাতাদের উৎসবের সমাপনী দিনে প্রদান করা হবে সনদপত্র। উৎসবের সমকালীন বিভাগে অংশগ্রহণকারী নির্মাতাদের চলচ্চিত্র জমা দিতে হবে এমপি-ফোর ফরম্যাটে। নির্মাতাকে আবেদনপত্রটি জমা দিতে হবে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে। সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্তের পাশাপাশি আবেদনপত্রের সঙ্গে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পচত্র কিংবা জন্মনিবন্ধন, পাসপোর্টের ফটোকপি অথবা শিক্ষার্থী হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্রের ফটোকপি সংযুক্ত করে দিতে হবে। নির্মিত চলচ্চিত্রের কাহিনী সংক্ষেপের সঙ্গে যদি পোস্টার থাকে সেটি জমা দিতে হবে। এছাড়া চলচ্চিত্রের আলোকচিত্রের সঙ্গে দুই কপি ডিভিডি জমা দিতে হবে। প্রয়োজনীয় সবকিছু সাজিয়ে নির্মাতাকে সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার ৬০১ ও ৫০৭নং কক্ষে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে জমা দিতে হবে। ই-মেইলের মাধ্যমেও সমকালীন বিভাগের নির্মাতারা তথ্য প্রদান বা আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন। ই-মেইলের ঠিকানা হলো সধংযঁফ.ংঁসড়হ @মসধর.পড়স। সমকালীন বিভাগসহ অন্য বিভাগে প্রদর্শনীর জন্য চলচ্চিত্র নির্বাচন করবেন সিলেকশন কমিটি। এই কমিটিতে রয়েছেন নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, সাবরিনা সুলতান চৌধুরী, সাজেদুল আওয়াল। এছাড়াও কমিটিতে বাচসাসের একজন প্রতিনিধি রয়েছেন। প্রদর্শিত ছবির মধ্যে পুরস্কৃত ছবি নির্বাচন করবেন জুরি কমিটির সদস্যরা। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মসিহউদ্দীন শাকেরকে চেয়ারম্যান করে গঠিত জুরি কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ মফিদুল হক, মতিন রহমান, অনুপম হায়াৎ ও নাইলুন নাহার সেমি।
×