ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খামখেয়ালি সভার ৪১তম আড্ডা

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ১৮ জুন ২০১৭

খামখেয়ালি সভার ৪১তম আড্ডা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক বহুমুখী ও বিস্ময়কর প্রতিভার নাম। তাকে পরিপূর্ণরূপে আবিষ্কার করতে আরও বহু সময় লেগে যাবে। রবীন্দ্রনাথ শুধু তার গানের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে যেভাবে ঐশ্বর্যম-িত করে গেছেন তার তুলনা বিশ্বসাহিত্যেও নেই। মানব-মনের নানা অনুভূতি, বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্বন্ধ, ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের মনের নানা সূক্ষাতিসূক্ষ পরিবর্তন- সমস্ত কিছু, বাণী আর সুরের অনন্য মেলবন্ধনে কবি রেখে গেছেন বাঙালীর জন্য’। শুক্রবার খামখেয়ালি সভার ৪১তম আড্ডায় গীতিকবি হিসেবে রবীন্দ্রনাথকে এভাবেই তুলে ধরেন প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. করুণাময় গোস্বামী। সংগঠনটির কার্যালয়ে মাসিক নিয়মিত এ সাহিত্য আড্ডায় এবার ‘গীতিকবিতা: ভারতচন্দ্র, বিহারীলাল ও রবীন্দ্রনাথ’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সভার সদস্য কামাল আরিফ। এদিন আড্ডায় সভাপতিত্ব করেন কবি ও প্রাবন্ধিক খালেক মল্লিক। আড্ডা সঞ্চালনা করেন খামখেয়ালি সভার সভাপতি মাহমুদ হাশিম। প্রাবন্ধিক তার প্রবন্ধে বাংলা গীতিকবিতার হাজার বছরের ইতিহাসে দুই পূর্বসূরি বিহারীলাল ও ভারতচন্দ্রের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরম্পরা স্থাপনের প্রয়াস পান। তার ভাষ্য, রবীন্দ্রনাথ হঠাৎ জ্বলে ওঠা কোন আকাশপ্রদীপ নন, একটি কালস্রোতকে যেমন বহন করেছেন তেমনি পূর্বের অনুবর্তী ধারাটিও তিনি আমলে নিয়েছেন, গ্রহণ-বর্জন করেছেন। রবীন্দ্রনাথ বাংলাকাব্য ঐতিহ্যকেই আধার হিসেবে নিয়েছেন। এ ধারায় মধ্যযুগের শেষ পর্যায়ের কবি ভারতচন্দ্র প্রণিত করেন রবীন্দ্রনাথকে। ভারতচন্দ্রে মুগ্ধ রবীন্দ্রনাথ পূর্বসূরির গুণকীর্তন করে বলেছেন, ‘অন্নদামঙ্গলের গান রাজকণ্ঠে মণিমালার মতো, যেমন তার উজ্জ্বলতা তেমনি তার কারুকার্য’। সমসাময়িক কালের আরেক পূর্বসূরি বিহারীলালকে রবীন্দ্রনাথই অভিধা দিয়েছেনে ‘ভোরের পাখি’ হিসেবে। ভোরের পাখি সূর্যোদয়ের গান শুনিয়েছেন আর রবীন্দ্রনাথ পূর্ণরবির আলোকচ্ছ্বটায় বাঙলা সাহিত্যের দশদিক আলোময় করেছেন। ড. করুণাময় গোস্বামী বলেন, শুধু ভারতচন্দ্র বা বিহারীলাল নয়, রবীন্দ্রনাথ তার পূর্ববর্তী মহাজন সব কবির উত্তরাধিকার বহন করেছেন। রামনিধি গুপ্ত বা নিধু বাবুর সঙ্গীতে যে আধুনিকতার সূচনা বিহারীলাল হয়ে রবীন্দ্রনাথে তা পরিপূর্ণতা লাভ করেছে।
×