ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষিকাকে যৌন নির্যাতন

খিলগাঁও গবঃ স্টাফ স্কুলের প্রধান শিক্ষক কারাগারে

প্রকাশিত: ০৭:৩৮, ১৭ জুন ২০১৭

খিলগাঁও গবঃ স্টাফ স্কুলের প্রধান শিক্ষক কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে এক অবিবাহিত স্কুল শিক্ষিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যেতে হলো খিলগাঁও গবঃ স্টাফ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সরদার হেলাল উদ্দিনকে। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ছাড়াও ঘুষ গ্রহণসহ নানা অনৈতিক কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। গত বুধবার তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার তাকে রাজধানীর মুগদা থানাধীন মানিকনগরের ৫৮ নম্বর ওয়াসা সড়কের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে খিলগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন খিলগাঁও থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ নানা অনৈতিক কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। প্রধান শিক্ষক সরদার হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির উপপরির্দশক মোঃ শাহ আলম জনকণ্ঠকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জনকণ্ঠকে মামলার অভিযোগের বরাত দিয়ে জানান, চলতি বছরের মার্চে স্কুলটিতে একজন নারী খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ওই নারী অবিবাহিত। বয়স কম। সদ্যই পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছেন। অভিযোগকারী ওই নারীর বক্তব্য মোতাবেক, স্কুলে যোগদান করার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক তাকে নানা কাজের উছিলায় কাছে ডাকত। একা পেলে নানা ধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করত। মাসখানেক ধরে প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষিকাকে নানাভাবে কাজের উছিলায় প্রধান শিক্ষক তার রুমে ডেকে পাঠাত। সর্বশেষ গত ১৩ জুন প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠায়। তাকে তার সঙ্গে শিক্ষাবোর্ডে যেতে হবে বলে জানায়। এতে রাজি না হলে তার চাকরি নিয়ে নানা ধরনের ঝামেলা হবে বলে জানায়। এমন পরিস্থিতিতে ওই শিক্ষিকা শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে রাজি হন। যাওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষিকাকে একই রিক্সায় যেতে বলে। এতে আপত্তি করে। শেষ পর্যন্ত একই রিক্সায় তারা দু’জনে শিক্ষা বোর্ডে যান। বার বার রাস্তায় প্রধান শিক্ষক কখনও রোদ আবার কখনও বৃষ্টির উছিলায় রিক্সার হুড উঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শিক্ষিকা কোনভাবেই তা করতে দেননি। শিক্ষা বোর্ডে নানা কাজের উছিলা দিয়ে বিকেল করে। বিকেলে আবার রিক্সায় আসার পথে এক ফাঁকে রিক্সার হুড আচমকা তুলে দেয়। তখন সামান্য বৃষ্টিও ছিল। এই ফাঁকে প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষিকার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন। এর পর রিক্সার হুড ফেলে কোনমতে বাসায় ফেরে। পরদিন ১৪ জুন স্কুলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে শিক্ষক প্রতিষ্ঠানটির অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। ওই শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষককে আসামি করে থানায় মামলা ঠুকে দেন। পরদিন প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
×