ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শুভাকাক্সক্ষীদের স্মরণে শিল্প সংগঠক সুধীর চৌধুরী

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১৪ জুন ২০১৭

শুভাকাক্সক্ষীদের স্মরণে শিল্প সংগঠক সুধীর চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দীক্ষা নিয়েছিলেন চারুশিক্ষায়। সেই সুবাদে রং ও রেখায় রাঙিয়েছেন ক্যানভাস। তবে নিজে শিল্পী হওয়ার পরিবর্তে শিল্পকে তুলে ধরার দায়িত্বকেই জীবনের ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। আর এভাবেই শিল্পী না হয়ে শিল্প-সংগঠকের পরিচয়কে ধারণ করেছিলেন সুবীর চৌধুরী। দেশের চিত্রকলা আন্দোলনে সংগঠক হিসেবে রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিরন্তভাবে সঞ্জীবিত করেছেন চিত্রকলা আন্দোলনকে। দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের চিত্রকলাকে পরিচিত করার পাশাপাশি আয়োজন করেছেন বহু প্রদর্শনীর। পালন করেছেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টি ও বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টসের পরিচালকের দায়িত্ব। বর্তমানের ঢাকা এশীয় দ্বি-বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায়ও রয়েছে তার অনবদ্য অবদান। আগামী ৩০ জুন এ শিল্প-সংগঠকের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে ধানম-ির জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যাপীঠে স্মরণ করা হলোÑ এ শিল্প ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে। স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। শুভাকাক্সক্ষী ও সুহৃদদের আলোচনায় স্মরণানুষ্ঠানে ওঠে আসে সুবীর চৌধুরীর শিল্প-সংগঠক জীবনের নানা বিষয়। বরেণ্য শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর বলেন, সুবীরের অনুপস্থিতিতে তাকে স্মরণ করা দুরূহ। যে কোন অনুষ্ঠানে সুবীর আমার সঙ্গে থাকত। তিনি ছিলেন অত্যন্ত কর্মঠ। কাজ শেষ না করা পর্যন্ত তার বাড়ি ফেরা হত না। যদিও সুবীর ছবি আঁকতেন না, কিন্তু শিল্পীদের শিল্পকর্ম মেলে ধরার জন্য তার আগ্রহ ছিল অতুলনীয়। আরেক শিল্পী নাসিম আহমেদ নাদভী বলেন, সুবীর সম্পর্কে আমার জন্য কিছু বলতে যাওয়া অসুবিধার। কারণ ও ছিল আমার সহপাঠী এবং আবার বন্ধু। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে শিল্পকলা আন্দোলনে যেসব কাজ হয়েছে তাতে সুবীরের অবদান অনেক। কিন্তু সুবীরকে নিয়ে তেমন কোন আলোচনা হয় না। এটা শুধু বেঙ্গলের কাজ না। সুবীরকে নিয়ে শিল্প মহলে আলোচনা হওয়া উচিত। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিল্পী মাহবুবুর রহমান। স্মরণানুষ্ঠানের পাশাপাশি আয়োজনে ছিল সুবীর চৌধুরীর জীবনভিত্তিক আলোকচিত্রর প্রদর্শনী। জাদুঘরে মধুসূদন দাশের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী চারপাশে বিরাজ করছে অস্থিরতা। প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে মানুষও। পরিবর্তন ঘটছে প্রকৃতির গতিপথে। আর এসব বিষয়কে উপজীব্য করে ক্যানভাস রাঙিয়েছেন ভারতীয় চিত্রশিল্পী মধুসূদন দাশ। বিশ্বভারতী থেকে চিত্রকলায় ¯œাতকোত্তর এ শিল্পীর চিত্রকর্ম প্রদর্শনী চলছে জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনের বাইরের লবিতে। প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ইন্ধিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার (আইজিসিসি)। এ্যাক্রেলিক মাধ্যমে আঁকা ২৭টি চিত্রকর্ম রয়েছে এ প্রদর্শনীতে। আধা-বাস্তবরীতিতে নিজের ছবিগুলো এঁকেছেন শিল্পী। যার কোনটিতে ফুটে উঠেছে মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ, কোনটিতে আবার বিচ্ছন্নতাও। নারী মনের অতৃপ্ত বাসনা, সৌন্দর্যবোধও রয়েছে তার আঁকার বিষয়ে। দৈনন্দিন জীবনের অস্থিরতা, বিচ্ছিন্নতাবোধও তার কাজে লক্ষ্য করা যায়। ছিল বাংলার নিসর্গও। প্রকৃতিকে উপজীব্য বেশকিছু চিত্রকর্ম রয়েছে প্রদর্শনীতে। সেখানে প্রকৃতি কখনও প্রস্ফুটিত, কোথাও কোথাও বিমূর্ত। কখনও সন্ধ্যা নেমেছে তার ক্যানভাসে, কখনও ভোরের আলো ফুটেছে। ১৯৭৩ সালে জন্ম নেয়া এ শিল্পী জানান, তিনি ৪০ বছর আগে যখন ছোট ছিলেন তখন এসেছিলেন এ দেশে। নিউইয়র্ক, লন্ডনসহ পৃথিবীর অনেক শহরে আয়োজিত প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন তিনি। কিন্তু শৈশবের স্মৃতি জাগানিয়া এ শহরে একটি একক প্রদর্শনী তার কাছে একটা স্বপ্নপূরণের মতো বিষয়। এখানে অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। চারদিনের এ প্রদর্শনী শেষ হবে আজ বুধবার। সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে প্রদর্শনী।
×