ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সবার মুখে শুধুই বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১১ জুন ২০১৭

সবার মুখে শুধুই বাংলাদেশ

‘বাংলাদেশ যেভাবে নিউজিল্যান্ডকে হারালো, জীবনেও এমন ম্যাচ দেখিনি।’ কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর যখন সারি বেঁধে দর্শকরা বাসার পথে রওনা হচ্ছেন, তখন এ কথাই বলেছেন। অল্প যে সংখ্যক দর্শক স্টেডিয়ামে শেষ পর্যন্ত ছিলেন, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ গর্জন করেছেন। যেন স্টেডিয়াম ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ আওয়াজে কেঁপে উঠেছে। বাংলাদেশ দলতো স্টেডিয়ামে আসা নিউজিল্যান্ডের গুটি কয়েক দর্শকের শুভেচ্ছাও পেয়েছে। তারাও ম্যাচ শেষে প্রবাসী বাংলাদেশী ক্রিকেটপ্রেমীদের মিছিলে যোগ দিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় পাওয়ার পর যেন দেশী বিদেশী, প্রতিপক্ষ দর্শক; সবার মুখে শুধুই ‘বাংলাদেশ’ নামটি ছিল। থাকবেই বা না কেন। ১২ রানে ৩ উইকেট। এরপর ৩৩ রানে ৪ উইকেট পতনের পর কে ভেবেছিল বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতবে? সাকিব-মাহমুদুল্লাহ এমন খেলাই খেলেছেন, মায়া ধরিয়ে দিয়েছেন। দুইজন মিলে পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২২৪ রানের জুটি গড়েছেন। সাকিব (১১৪) ও মাহমুদুল্লাহ (১০২*) আবার জোড়া সেঞ্চুরিও করেছেন। দুইজন যেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা খেলাটা খেলেছেন। তাইতো এমন ঐতিহাসিক জয়টি মিলেছে। ২০০৫ সালে কার্ডিফের এই স্টেডিয়ামে মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেবারও ৫ উইকেটে জিতেছিল। এবার সাকিব-মাহমুদুল্লাহর ‘আউটস্ট্যান্ডিং’ ব্যাটিংয়ে আবারও ঐতিহাসিক জয় মিলল। সেটি রূপকথার মতো জয় আসল। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডকে এবার একই ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ। শুধু হারালই না, নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ই করে দিল। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম জয় পেল। সেই জয়টি আবার টেস্ট খেলুড়ে কোন দলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের প্রথম জয়। টেস্ট খেলুড়ে সবদলই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে অন্তত একটি জয় পেয়েছে। বাংলাদেশই শুধু বাকি ছিল। এবার বাংলাদেশ সেই কাজটিও করে নিল। তাতে করে সামনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পেল। অন্তত খালি হাতে এবার দেশে ফিরতে হবে না বাংলাদেশ। বড় প্রাপ্তি নিয়েই প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফিরতে পারবে বাংলাদেশ। এই একটি জয় বাংলাদেশকে অনেক ওপরেও নিয়ে গেল। বাংলাদেশ যে এখন কতটা উন্নতি করছে, যে কোন দলকেই হারানোর ক্ষমতা রাখে, সেটা যে কোন পরিস্থিতি থেকে; তাও বোঝা গেল। বিশ্ব ক্রিকেটকে এ একটি জয়ে নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণও দিল। বাংলাদেশ যে এখন যে কোন টুর্নামেন্টে প্রতিপক্ষকে শুধু হারাতেই পারে না, ভাল অবস্থানেও যাওয়ার ক্ষমতা রাখে; সেটিও প্রমাণ হলো। সেটি সম্ভব হলো আসলে সাকিব ও মাহমুদুল্লাহর মহাকাব্যিক ইনিংস আর জুটিতে। আর তাই ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ রব ওঠার সঙ্গে সাকিব ও মাহমুদুল্লাহর নামটিও সবার মুখে মুখে জোরেই উচ্চারিত হয়েছে।
×