ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোকচিত্রী নীতিশ রায় আর নেই

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ৯ জুন ২০১৭

আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোকচিত্রী নীতিশ রায় আর নেই

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ৮ জুন ॥ শেরপুরের আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোকচিত্র শিল্পী, মুক্তিযুদ্ধকালীন ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার প্রেস ফটোগ্রাফার, সাংবাদিক নীতিশ রায় (৭৫) আর নেই। তিনি ৮ জুন সকাল ৮টায় শহরের নয়ানীবাজারের নিজ বাসায় পরলোকগমন করেন। নিঃসন্তান নীতিশ রায় দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ হয়ে বাসায় শয্যাশায়ী ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি অসুস্থ স্ত্রী কবি সন্ধ্যা রায়সহ আত্মীয়-স্বজন ও বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরে শোকের ছায়া নেমে আসে। রাজনীতিক, সমাজসেবী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও সতীর্থ আলোকচিত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাকে একনজর দেখার জন্য ওই বাসায় ভিড় জমায়। গভীর শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় তাকে বিদায় জানায়। দুপুরে পৌর শেরীশ্মশানে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। তার মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি গভীর শোক প্রকাশ করে তার শোকসন্ত্রপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, নীতিশ রায়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আমরা একজন সাহসী ও কালজয়ী আলোকচিত্র শিল্পীকে হারালাম। নীতিশ রায় ১৯৪৪ সালে শেরপুর শহরের নয়আনী বাজার এলাকায় প্রয়াত নন্দহরি রায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি সৌখিন আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ষাট, সত্তর ও আশির দশকে আলোকচিত্র জগতে তিনি ছিলেন একজন নক্ষত্র। ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতে চলে যান। ওই বছরের ১৬ জুন মুজিবনগর থেকে প্রকাশিত ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার প্রেস ফটোগ্রাফার হিসেবে যোগদান করেন। সত্তর থেকে আশির দশক পর্যন্ত ইত্তেফাক, সংবাদ ও মাসিক পত্রিকা ফটোগ্রাফিসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও তার ছবি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিশ্বের অনেক দেশে প্রদর্শিত হয়েছে এবং পুরস্কার পেয়েছে। ১৯৮২ সনে জাপানে অনুষ্ঠিত সপ্তম এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় নীতিশ রায়ের ছবি ‘তৃষ্ণা’ ইয়াকুল্ট পুরস্কার লাভ করে। শিল্প-চেতনা সমৃদ্ধ আলোকচিত্রী নীতিশ রায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কৃষ্টি প্রবাহ ও ত্রিসপ্তক নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গেও জড়িত ছিলেন এবং অভিনয়ে অংশগ্রহণ করতেন।
×