ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য খাতে ’৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে সহায়তা বাড়ান

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৫ মে ২০১৭

স্বাস্থ্য খাতে ’৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে সহায়তা বাড়ান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সহায়তা বাড়ানোর জন্য বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বুধবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার ৭০তম সম্মেলনের প্ল্যানারি অধিবেশনে বক্তৃতায় তিনি এই আহ্বান জানান। রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভেরোনিকা স্কোভর্তসোভা এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। সম্মেলনে ১৯০টিরও বেশি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ অংশ নিচ্ছেন। সংস্থার মহাপরিচালক মার্গারেট চ্যান ২২ মে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য আজ বিশ^ব্যাপী দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই অর্জনকে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে এসডিজি অর্জনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং সেই লক্ষ্য নিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। এই অঞ্চলের সম্পদ এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করবে। মানুষের পুষ্টি মান উন্নয়নকে এসডিজি অর্জনের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে উল্লেখ করে বিশ^ সংস্থার অগ্রাধিকার তালিকায় পুষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য তিনি আহ্বান জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেক ‘মিথ’-কে ভুল প্রমাণিত করেছে। বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণেই বাংলাদেশ থেকে অনেক সংক্রামক রোগ নির্মূল হয়েছে। শিশু মৃত্যু হার কমানোর সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে জাতিসংঘ বিশেষ পুরস্কার তুলে দিয়েছে। টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় দেশের প্রায় শতভাগ শিশুকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি গ্রাম পর্যায়ে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততায় সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় যে মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে তা অনেক দেশের জন্য আজ উদাহরণ। শিশু মৃত্যু হারের অর্জনকে এগিয়ে নিয়ে এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে ইনএ্যাকটিভেটেড পোলিও ভ্যাকসিনসহ নতুন নতুন ভ্যাকসিনের স্বল্পতা দূরীকরণে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা চান তিনি। দূর্যোগ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জরুরী স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের দক্ষতা ও কার্যকারিতা তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিশ^ব্যাপী সবাই জানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের অঞ্চল। কিন্তু বাংলাদেশ আজ দুর্যোগের সময়ে জরুরী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করেছে। এমনকি আমাদের প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীগণ বর্তমানে বিশে^র বিভিন্ন দেশের দুর্যোগে সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশেও তা আমরা প্রমাণ করেছি। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন মহাপরিচালক টেড্রস এ্যাডহানম ঘেব্রেইয়েসাসকে অভিনন্দন জানিয়ে আগামীতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে নতুন মহাপরিচালকের দক্ষতা ও প্রজ্ঞা বিশেষ অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষের স্বাস্থ্যমান উন্নয়নে সংস্থার ভূমিকায় নেতৃত্ব প্রদানের জন্য বিদায়ী মহাপরিচালক মার্গারেট চ্যানের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার ৭০তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিতে গত ২০ মে জেনেভা যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি তিনি মহাপরিচালক মার্গারেট চ্যান, সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিং এবং গ্লোবাল ফান্ডের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের অর্জন ও ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরে আগামীতে এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশেকে সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
×