ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৪৮টি ডিম দিয়েছে পিলপিল

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২২ মে ২০১৭

৪৮টি ডিম  দিয়েছে  পিলপিল

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ও নিজস্ব সংবাদদাতা, মংলা ॥ বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কুমির জুলিয়েটের পর এবার ৪৮টি ডিম দিয়েছে পিলপিল। রবিবার সকালে প্রজনন কেন্দ্রের পুকুর পাড় থেকে ডিমগুলো সংগ্রহ করে তা ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। ইনকিউবেটরে নির্দিষ্ট আলো, বাতাস ও তাপমাত্রায় রাখা ডিমগুলো আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ফুটে বাচ্চা বের হবে। এর আগে গত ৯ মে কুমির জুলিয়েট ৪৩টি ডিম দেয়। করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবির এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে শনিবার রাতে ৪৮টি ডিম দেয় পিলপিল। রবিবার সকালে ডিমগুলো তুলে কেন্দ্রের ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। ইনকিউবেটরের মধ্যে রাখা ডিমগুলো আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ফুটে বের হবে। তবে ৪৮টি ডিমের মধ্যে ৪টি ডিমে ক্ষত চিহৃ রয়েছে বলে জানান তিনি। বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে কুমির পিলপিল প্রজনন কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে ৪৮টি ডিম পেড়েছে। ডিমগুলো রবিবার সকালে সংগ্রহ করে ইনকিউবেটরে রেখে নিভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এর আগে কেন্দ্রের কুমির জুলিয়েট ৪৩টি ডিম দিয়েছে যেগুলো থেকে অল্প কিছুদিনের মধ্যে বাচ্চা বের হবে। উল্লেখ্য, বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির নোনা পানির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও তা সংরক্ষণে জন্য ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্র বন বিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র সরকারী এ কুমির প্রজনন কেন্দ্রটি। বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় কেন্দ্রটি। শুরুতেই জেলেদের জালে ধরা পড়া ছোট-বড় পাঁচটি কুমির দিয়ে কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কেন্দ্রটিতে নোনা পানির দুটি স্ত্রী কুমির জুলিয়েট-পিলপিল ও একটি পুরুষ কুমির রোমিওসহ বিভিন্ন বয়সী ২১১টি কুমির রয়েছে। এখান থেকে কুমিরগুলো ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, পটুয়াখালী বন বিভাগ ও সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে অবমুক্ত করা হয়। এক সময়ে বাংলাদেশে তিন প্রজাতির কুমিরের অস্তিত্ব ছিল। লবণ পানির কুমির, মিঠা পানির কুমির ও গঙ্গোত্রীয় কুমির বা ঘড়িয়াল। এর মধ্যে মিঠা পানির কুমির ও ঘড়িয়ালের বিলুপ্তি ঘটেছে। এখন শুধু লবণ পানির কুমিরের অস্তিত্বই আছে। এরা সাধারণত ৬০-৬৫ বছর পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। আর ৮০-১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
×