ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

কাল আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা

প্রার্থী মনোনয়ন, কোন্দল মেটানো, জোট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৯ মে ২০১৭

প্রার্থী মনোনয়ন, কোন্দল মেটানো, জোট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় গণভবনে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, জাতীয় পরিষদ সদস্যবৃন্দ, দলীয় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, সকল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দফতর ও উপদফতর সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদকগণ উপস্থিত থাকবেন। জানা গেছে, দলের এ বর্ধিত সভায় প্রার্থী মনোনয়ন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানো, জোট সম্প্রসারণসহ আগামী নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতির সার্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। বর্ধিত সভায় সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুরোধ জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণে ব্যাপক প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে এমনটা ধরে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে জোরেশোরে নামতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তৃণমূলে তীক্ষ্ম নজর রাখছেন দলের হাইকমান্ড। অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করতে তৃণমূলের মতামত নেবেন শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা দলীয় ফোরামের কয়েকটি আলোচনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে। জনবিচ্ছিন্ন কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ জোটের নেতাদের সঙ্গে ইসলামী ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক আলোচনাও হয়েছে। দলটিকে জোটে শরিক করার জন্য লিখিতভাবে আবেদনও জানানো হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি দল ১৪ দলীয় জোটে যোগ দিতে চায়। কাদের জোটে নেয়া হবে আর কাদের নেয়া হবে না সে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে আগামীকালের বৈঠকে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সারাদেশে গত চার বছরে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ সহস্রাধিক জামায়াত-শিবির-বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থক আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগে যোগদান করেছেন। অ গত সাড়ে ৮ বছরে অন্য দল থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানের সংখ্যা ইতোমধ্যে লাখের অঙ্ক ছুঁয়ে গেছে। অতীত অপকর্ম থেকে রেহাই পাওয়া, দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, আগামী নির্বাচনে জনগণ থেকে দলকে বিচ্ছিন্ন করার টার্গেট নিয়ে তারা ক্ষমতাসীন দলে যোগ দিয়েছেন। আর কোন কোন ক্ষেত্রে স্থানীয় এমপিরা নিজেদের আলাদা বলয় সৃষ্টি করতে বিএনপি-জামায়াত থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়েছেন। এতে দলের ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হয়েছেন। এসব অনুপ্রবেশকারীর ভাগ্যও নির্ধারণ হবে বর্ধিত সভায়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় ফোরামের বিভিন্ন কর্মসূচীতে অনুপ্রবেশকারীদের দলে না নেয়ার বিরুদ্ধে সতর্কও করে দিয়েছেন। দলীয় নেতাদের উদ্দেশে তিনি স্পষ্ট বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, এই দলে পরগাছাদের কোন জায়গা নেই। সূত্র জানায়, গঠনতন্ত্রের ৫(১) ধারা অনুযায়ী, দলে যোগ দিতে হলে গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র মেনে প্রাথমিক সদস্য পদের জন্য আবেদন করতে হয়। সেই আবেদনে দলের স্থানীয় ইউনিট সুপারিশ করলেই শুধু আগ্রহীদের দলে যোগদান করানো যেতে পারে। কিন্তু এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগামী নির্বাচনে দল কাদের মনোনয়ন দেবে এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারাদেশের ৩শ’ আসনে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি নেতা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বর্ধিত সভায় তৃণমূলের মতামত নিয়ে প্রার্থী চূড়ান্ত হবে বলে তিনি জানান।
×