ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রামগঞ্জে আ’লীগ নেতা ও তার ভাগ্নেকে পুলিশের বেদম প্রহার

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৪ মে ২০১৭

রামগঞ্জে আ’লীগ নেতা ও তার ভাগ্নেকে পুলিশের বেদম প্রহার

নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর, ১৩ মে ॥ জেলার রামগঞ্জে মোঃ ইব্রাহিম কারী নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাগ্নেকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দু’দফায় বেদম পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শনিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কাটাখালী এবং পরে থানা ভবনের ভেতরে এনে তাদের নির্যাতন করা হয়। আহত ইব্রাহিম উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও ওই ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন মোঃ রানার ভাই। এ সময় তাদের ভাগিনা কাউছারও আহত হয়। পুলিশ সিগন্যালে সাড়া না দিয়ে মোটরসাইকেলে চালিয়ে যাওয়ায় এ ঘটানা ঘটানো হয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ বলেছে, ঘটনাটি সমাধান হয়ে গেছে। এদিকে খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের বেশকিছু নেতাকর্মী থানায় জড়ো হয়। একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান রানার সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরে পুলিশ। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ শাহজাহান ও সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রুহুল আমিনসহ দলের সিনিয়র নেতারা থানার ওসির কক্ষে বৈঠক করেন। সেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে ওসি তোতা মিয়া ক্ষমা চান এবং উপস্থিত সিনিয়র নেতারা লিখিত দিয়ে তাদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নেয়। থানা-পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার সোনাপুর এলাকায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে এসআই ফারুক আহমেদসহ পুলিশ মাদকবিরোধী চেকপোস্ট বসায়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহীম ও তার ভাগিনা কাউছার মোটরসাইকেলে ওই রুটে যাচ্ছিলেন। পুলিশ তাদের থামানোর জন্য সিগন্যাল দিলেও তারা কর্ণপাত করে চলে যায়। এ সময় ধাওয়া করে কাটাখালিতে গিয়ে তাদের থামানো হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের হ্যান্ডকাপ পরিয়ে বেদম এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে পুলিশ। তারা পরিচয় দেয়ার পরও পুলিশ ক্ষান্ত হয়নি। একপর্যায়ে পুলিশ ইব্রাহীমের পকেটে হাত ঢুকিয়ে ইয়াবা ডোকানোর চেষ্টা করে। পরে থানায় নিয়েও তাদের একই কায়দায় পেটানো হয়। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হোসেন রানা বলেন, আমার ভাই ও ভাগিনা পুলিশকে পরিচয় দেয়ার পরও হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নির্দয়ভাবে দু’দফা পিটিয়েছে। নির্যাতনে তাদের মুখ, ঠোঁট ও হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশের অমানবিক এ ঘটনার বিচার দাবি করছি। রামগঞ্জ থানার এসআই ফারুক আহমেদ বলেন, ধস্তাধস্তিতে পড়ে গিয়ে তারা আহত হয়েছে। পুলিশের সিগন্যাল অমান্য করায় পেছন থেকে ধাওয়া করে দু’জনকে ধরা হয়েছিল। সমাধানের পর তারা কেন, হাসপাতালে ভর্তি হলো বুঝতে পারছি না। তবে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টার বিষয়টি মিথ্যা। জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ শাহজাহান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। থানায় বৈঠকে পুলিশ ভুল স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ তোতা মিয়া বলেন, ঘটনাটি থানায় বসে মীমাংসা করা হয়েছে। হ্যান্ডকাপ পরিয়ে আনা হয়েছে সত্য, তবে মারধর করা হয়নি। কাগজপত্র না থাকায় মোটরসাইকেলটি থানায় রাখা হয়েছে।
×