ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নদী পারের মানুষদের নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘নোঙর’-এর ৪০তম পর্ব আজ

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১৪ মে ২০১৭

নদী পারের মানুষদের নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘নোঙর’-এর ৪০তম পর্ব আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ রবিবার বিকেল ৫-৩০ মিনিটে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে একযোগে প্রচার হবে নদী ও নদী পারের মানুষদের নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘নোঙর’। আজ এ অনুষ্ঠানের ৪০তম পর্ব প্রচার হবে। মামুন মাহমুদ প্রযোজিত অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা, গ্রন্থনা, পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছেন সুমন শামস। শঙ্খ নদীর সুখ-দুঃখের সঙ্গে থাকছে এই অপূর্ব সুন্দর অনাবিল ভূপ্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ। অনুষ্ঠানটি প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ রবিবার একই চ্যানেলে প্রচার হয়। অনুষ্ঠানের আজকের পর্বে দেখানো হবে চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী- শঙ্খ নদী। বাঁশখালি ও আনোয়ারার মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত এই নদীটি এসেছে মিয়ানমারের আরাকানের মদক পাহাড় থেকে। বাঁশখালি ও আনোয়ারা এই দুই পারের বাসিন্দাদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে এবারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে শঙ্খ নিয়ে নানা কথা। আনোয়ারায় নেই কোন হাই স্কুল, সিনিয়র মাদ্রাসা বা কলেজÑ তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই এই পাড়ের শিক্ষার্থীদের শঙ্খ পাড়ি দিতে হয়। একটি মাত্র নৌকা দিয়ে পরিচালিত খেয়ার মাধ্যমে চলে দুই পাড়ের শত সহস্র শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের পারাপার। বর্ষায় যখন শঙ্খ দুইকূল ছাপিয়ে চলে তখন এখানে নৌদুর্ঘটনা একটি নিয়মিত বিষয়। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এই জনপদে একই পরিবারের এমনকি ৯-১০ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। অনেকে এখনও নদীতে হারানো মাকে খুঁজে বেড়ায় যার ধারাবাহিকতা চলছে এখনও। এই পর্ব ধারণের সামান্য কিছুদিন আগেই এখানে ঘটে গেছে আরেকটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বাঁশখালির রাইসহাটার যাতা নুরাইন ফাজিল মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীর তাজা প্রাণ ঝরে গেছে শঙ্খের জলে। প্রাণে বেঁচে যাওয়া একই পরিবারের আরেক বালক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এলাকাবাসী এবং শিক্ষার্থীরা সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে একটি সেতু দাবি করেছে। যতদিন সেতু না হয় ততদিন যেন এখানে একটি ফেরি কিংবা অন্ততপক্ষে একাধিক নিরাপদ জলযান প্রদান করার জোর দাবি করেছেন। এলাকাবাসীর এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। শঙ্খ নদীর মোহনায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ চলছে, যে বাঁধ ছিল এলাকাবাসীর বহুদিনের প্রাণের দাবি। এই বাঁধের অভাবে দুই পাড়ে অসংখ্য মানুষের সলিল সমাধি হয়েছে। বানের জলের তোড়ে ভেসে গেছে ক্ষেতের ফসল, গোয়ালের গরু আর যত সঞ্চিত সম্পদ। বাংলাদেশে যতগুলো প্রলয়ঙ্করি ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস আঘাত হেনেছে তার প্রায় সবকয়টি এখানে ক্ষত রেখে গেছে। নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধ এলাকার মানুষদের হাসি ফিরিয়ে আনবে বলে সবার বিশ্বাস। শঙ্খ নদীর মোহনা বাংলাদেশের বিদ্যমান সকল মোহনার মধ্যে অন্যতম সুন্দর একটি মোহনা। যেখানে একবার পা দিলে এর ভূবৈচিত্র্যের সুষমা দেখে চোখ ফেরানো যায় না। পর্যটন শিল্প বিস্তারে এই জায়গার আছে বিরাট সম্ভাবনা যা এলাকাবাসীদের নতুন জীবিকা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে ভাগ্য উন্নয়নে সহায়ক হবে। এখানে পরিবেশ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন তার পর্যবেক্ষণ, আশঙ্কা ও সমাধানের কথা। পাহাড় কাটা, পাহাড়ের বনভূমি ধ্বংস এবং মনুষ্যসৃষ্ট দখল-দূষণের করলাগ্রাসে বাংলাদেশের সকল নদ-নদী এখন হুমকির মুখে যার ব্যত্যয় ঘটেনি শঙ্খের বেলায়। মোহনার কোলে গড়ে ওঠা ছোট্ট বাজারে কথা হয়েছে স্থানিয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে, তারা জানিয়েছেন শঙ্খ পাড়ের অর্থনীতির হালচাল।
×