ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাঙ্গণেমোরের ‘শ্যামাপ্রেম’ আজ

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ৭ মে ২০১৭

প্রাঙ্গণেমোরের ‘শ্যামাপ্রেম’ আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর। রবীন্দ্রনাট্য চর্চার জন্য নন্দিত এই নাট্যদলটি ৬ মে তাদের পথচলার ১৪ বছর পূর্ণ করল। প্রতিষ্ঠার এ পর্যন্ত দলটি ১২টি প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে। পাশাপাশি প্রতিটি প্রযোজনার একাধিক মঞ্চায়ন করেছে। নিরীক্ষাধর্মী নাট্য প্রযোজনা নির্মাণ এবং দলের কর্মীদের নাট্যাভিনয়ের বিশেষ পারঙ্গমতার জন্য দেশে বিদেশে নন্দিত প্রাঙ্গণেমোর। দলের নন্দিত প্রযোজনাগুলো হলো ‘শ্যামা প্রেম’, ‘স্বদেশী’, ‘রক্তকরবী’, ‘লোকনায়ক’, ‘দ্রোহ প্রেম নারী’, ‘শেষের কবিতা’, ‘ঈর্ষা’, ‘আওরঙ্গজেব’, ‘আমি ও রবীন্দ্রনাথ’, ‘কনডেম সেল’ ‘বিবাদী সারগাম’, ‘দাঁড়াও পথিকবর’ প্রভৃতি। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এই নাট্যদল তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এই কর্মসূচীর ধারাবাহিকতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্যামা নৃত্য অবলম্বনে ‘শ্যামাপ্রেম’ নাটকের বিশেষ প্রদর্শনী মঞ্চায়ন করতে যাচ্ছে প্রাঙ্গণেমোর। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে আজ রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রাঙ্গণেমোরের এই প্রথম প্রযোজনাটির মঞ্চায়ন হবে। রবীন্দ্রনাথের শ্যামা নৃত্যনাট্য অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন চিত্তরঞ্জন ঘোষ। নির্দেশনা দিয়েছেন অনন্ত হিরা। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন অনন্ত হিরা, নূনা আফরোজ, রামিজ রাজু, শিশির রহমান, ইউসুফ পলাশ, শুভেচ্ছা রহমান, আশা, সরোয়ার সৈকত, রিগ্যান সোহাগ রতœ, বিপ্লব, মনির, সীমান্ত প্রমুখ। ‘শ্যামাপ্রেম’ নাটকটির মূল উপজীব্য ভালবাসা, স্বাধীনতা ও মানবতার চিরায়ত আকাক্সক্ষা। গল্পটির আবর্তনের কেন্দ্রে যেই চরিত্রটি, সে এক রাজ নর্তকী শ্যামা। গ্রামের সাধারণ এক কৃষক পরিবারের এই মেয়েটিকে কৈশোরের হুল্লোড় থেকে সম্পর্কের নাড়ি ছিঁড়ে লুট করেছিল অত্যাচারী জমিদারের লোকেরা। নটী জীবনে তাঁর সঙ্গী তার গাঁয়েরই মেয়ে মালা এবং এক সহজ সরল তরুণী নবীনা। ভাগ্যচক্রে রাজ নর্তকী হয়ে উৎকোচ আর বশীকরণের বাঁকা পথে অভ্যস্ত শ্যামার প্রায় মরে যাওয়া স্বপ্নগুলো আরেকবার বেঁচে ওঠে যাঁর সান্নিধ্যে, সে এক বিদেশী বণিক-প্রেমময় সৌর্যবান পুরুষ বজ্রসেন। অন্যদিকে ছেলেবেলার হল্লাহাটির সাথী অভিমানী বিপ্লবী উত্তীয় প্রাণ দিয়ে ভালবাসে শ্যামাকে। কিন্তু তার কাছে ধরা দেয়া হয়ে ওঠে না শ্যামার। অন্যদিকে বজ্রসেনের সঙ্গে স্বপ্নযুথের আকুলতায় শ্যামা প্রত্যাখ্যান করে প্রতাপশালী অমাত্ত সায়নের আয়োজিত ভোজসভায় গীতনৃত্যের আহ্বান। অপমানজ্ঞানে বৈরী হয় সায়ন- বজ্রসেনকে ‘গুপ্তচর’ সাব্যস্ত করে আটক করে এবং তার শিরচ্ছেদের আয়োজন শুরু হয়। যে উত্তীয় তার ভালবাসার প্রতিদানে কোনদিন শ্যামার কাছ থেকে কিছুই পায়নি, সেই বজ্রসেনকে বাঁচাতে আত্মদানে প্রবৃত্ত হয় উত্তীয়। কূট-চালে সিদ্ধহস্ত রাজকোটালের বন্দোবস্তে বজ্রসেনকে ছেঁড়ে দেয়া হয় আর ‘বজ্রসেন’ পরিচয়ে উত্তীয়কে শিরñেদে হত্যা করা হয়। বজ্রসেন ফিরে আসে ঠিকই, কিন্তু সব জানতে পেরে ঘৃনায় গ্লানিতে দিশেহারা হয়ে আত্মঘাতী হতে বেরিয়ে যায়। চিত্ত স্থির হলে আবার ফিরে আসে, শ্যামাকে সঙ্গে করে যাত্রা শুরু করে মৃত্যুঞ্জয়ী উত্তীয়র খোঁজে, অন্ধকার থেকে মুক্তির খোঁজে।
×