ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নবম-দশম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ১ মে ২০১৭

নবম-দশম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান

প্রথম অধ্যায়- (সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতা) আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। সমাজবিজ্ঞান ১৮৩৯ সালে ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী অগাস্ট কমেৎ (অঁমঁংঃ ঈড়সঃব) সর্বপ্রথম ‘ঝড়পরড়ষড়মু’ শব্দটি প্রবর্তন করেন। দঝড়পরড়ষড়মুদ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ ” ঝড়পরড়ঁং” এবং গ্রিক শব্দ “ খড়মড়ং”-এর সমন্বয়ে। ” ঝড়পরড়ঁং” অর্থ সমাজ এবং “ খড়মড়ং” অর্থ অধ্যায়ন বা বিজ্ঞান। অর্থাৎ সমাজ সম্পর্কে যে শাস্ত্রে আলোচনা করে থাকে তাই সমাজবিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞানীগণ সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। এল এফ ওয়ার্ড এবং গ্রাহাম সাম্নার- এর মতে “ সমাজবিজ্ঞান হল সামাজিক ঘটনাবলির বিজ্ঞান”। ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ডুর্খেইম বলেন যে, “ সমাজবিজ্ঞান হল সামাজিক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান”। ম্যাকাইভার ও পেজ এর মতে, “সমাজবিজ্ঞানই এক-মাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও মানুষের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে” । সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতা সমাজঃ মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ ছাড়া মানুষ চলতে পারেনা। যে সমাজে বসবাস করেনা সে হয় পশু নয় দেবতা। প্রত্যেক মানুষ সমাজেই জন্মগ্রহণ করে, বৃদ্ধিলাভ করে এবং সমাজেই মৃত্যুবরণ করে। তাই মানুষ সমাজ ছাড়া নিজের অস্তিত্ব কল্পনাও করতে পারেনা এবং নিজের প্রয়োজনেই মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে। প্রিয় শিক্ষার্থীরা, এখন আমরা জানব সমাজ বলতে কী বোঝায়- সমাজ কী? সমাজ বলতে সাধারণত সংঘবদ্ধ জনসমষ্টিকে বোঝায়। অর্থাৎ যখন বহুলোক একই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করে তখন তাকে সমাজ বলে। সাধারণত দুইটি বৈশিষ্ট্য থাকলে যে কোন জনসমষ্টিকে সমাজ বলা যেতে পারে, যথা- (ক) বহুলোকের সংঘবদ্ধ বসবাস এবং (খ) ঐ সংঘবদ্ধতার পেছনে কোনো উদ্দেশ্য। সমাজের উপাদানগুলো হলো- ১। সংঘবদ্ধ মানুষ ২। পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সচেতনতা ৩। সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য ৪। সহযোগিতা এখন আমরা সমাজের উপাদানগুলো নিয়ে আলোচনা করবো - ১। মনুষ্যসমাজের প্রধান উপাদান হলো সংঘবদ্ধ মানুষ। মানুষ ছাড়া সমাজের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। ২। পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সচেতনতাঃ পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সচেতনতা না থাকলে সমাজস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। আর সামাজিক সম্পর্কহীন মনুষ্যগোষ্ঠীকে সমাজ বলা যায় না। সুতরাং মানুষের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সচেতনতাকে সমাজ গঠনের অন্যতম উপাদান হিসেবে অভিহিত করা যায়। ৩। সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্যঃ সমাজ গঠন করতে যেমন কতগুলো মানুষের প্রয়োজন তেমনি ঐ সব মানুষের মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে অন্তত সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য থাকতে হয়। আর এ সম্বন্ধে তাদের মধ্যে অল্পবিস্তর চেতনা থাকাও জরুরী। সামাজিক সম্পর্কহীন মনুষ্যগোষ্ঠীক সমাজ বলা যায় না। কেবল্মাত্র সমাজের মধ্যে সাদৃশ্য-ই থাকবে, এটা ঠিক নয়। যেসব মানুষ নিয়ে সমাজ গঠিত, সেসব মানুষের মধ্যে অনেক বৈসাদৃশ্যও লক্ষ করা যায়। ৪। সহযোগিতাঃ সহযোগিতা হলো সমাজের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সমাজের মানুষ একে অপরের উপর নির্ভরশীল। কারণ সহযোগিতা ছাড়া সমাজ টিকে থাকতে পারে না।পারস্পরিক সহযোগিতা হলো সমাজের ভিত্তি।
×